বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শতাধিক বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। বোয়ালমারী উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের ডহরনগর তদন্ত কেন্দ্রে কর্মরত পুলিশ ভাংচুর ও লুটপাটের আগেই ঘটনাস্থল থেকে ৫ জনকে আটক করে। পুলিশ ১৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের পরমেশ্বরদী গ্রামের সৈয়দ মাসুদ এবং নব নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ. মান্নান মাতুব্বরের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চলা বিরোধের জের ধরে বুধবার (১৩.০৪.২২) সন্ধ্যায় পরমেশ্বরদী কুমার নদের ব্রীজের উপর সৈয়দ মাসুদ গ্রুপ ও চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ ৫জনকে আটক করে।

আটককৃতরা হলেন- পরমেশ্বরদী গ্রামের শারফিন, ময়েনদিয়া গ্রামের গিয়াসউদ্দিন, ময়েনদিয়া বেড়িবাঁধ এলাকার আতাহের, পার্শ্ববর্তী সালথা উপজেলার যদুনন্দি ইউনিয়নের খাড়দিয়া গ্রামের এনামুল শেখ এবং যদুনন্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মোল্যার ছেলে রনি মোল্যা। এ ঘটনার জের ধরে রাত ১২টার দিকে মান্নান মাতুব্বরের সমর্থকেরা সৈয়দ মাসুদের সমর্থকদের বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে। এতে পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের চরপাড়া, কাজীপাড়া ও চৌধুরীপাড়া গ্রামে অবস্থিত প্রায় শতাধিক বাড়িঘরে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ৫০লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্তরা জানায়। খবর পেয়ে বোয়ালমারী থানা এবং ফরিদপুর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পরমেশ্বরদী গ্রামের সৈয়দ মাসুদের অনুসারী ৩নং ওয়ার্ড কৃষকলীগের সহ-সভাপতি ক্ষতিগ্রস্ত জিল্লু মোল্যা বলেন, চেয়ারম্যান মান্নান মাতুব্বরের অনুগত জলিল মোল্যার নেতৃত্বে মান্নান মোল্যা, চুন্নু কাজী, নজরুল কাজী, সোলাইমানসহ অজ্ঞাতরা আমাদের দলীয় লোকজনের বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। এমনকি গৃহপালিত পশু গরু, ছাগল, নগদ অর্থ, স্বর্ণ নিয়ে গেছে। এতে আমাদের প্রায় ৫০লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এ ব্যাপারে পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ. মান্নান মাতুব্বরকে মোবাইল ফোনে ( ০১৭১৬৪০২৬৪৮) একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

পরমেশ্বরদী গ্রামের সৈয়দ মাসুদ ঢাকায় অবস্থান করায় মোবাইল ফোনে তিনি জানান, ২০২১ সালের ২৩ জুলাই পরমেশ্বরদী গ্রামের শহীদুল ফকির ওরফে শহীদ হত্যা মামলায় চেয়ারম্যান আ. মান্নান মাতুবরের নামে চার্জশীট হওয়ায় ক্ষীপ্ত হয়ে ওই মামলার সাক্ষী এনায়েত শেকের বাড়িসহ শতাধিক বাড়িতে হামলা করে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়।

বোয়ালমারী থানা পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সালাহউদ্দিন বলেন, বুধবার সারা রাত সহকারী পুলিশ সুপার সুমন কর (মধুখালি সার্কেল), আমিসহ ফরিদপুর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এনে বৃহস্পতিবার ( ১৪.০৪.২২) দুপুর পর্যন্ত ঘটনাস্থলে ছিলাম। পরিস্থিতি এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে এবং এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

ডহরনগর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. মুক্তার হোসেন বলেন, সংঘর্ষ ঠেকাতে ১৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়া হয়। বর্তমানে ওই এলাকায় পরিবেশ শান্ত রয়েছে। পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।