করোনার কারণে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় টিউশনি না পেয়ে বিপাকে শিক্ষার্থীরা। পড়াশোনার খরচ, হাত খরচ চালানোর জন্য শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় সুযোগ হলো টিউশনি কিংবা খণ্ডকালীন চাকরি।

যেহেতু স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ তাই টিউশনিও তেমন পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। রাজধানীর শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যয়, হোস্টেল কিংবা মেস ভাড়া করে থাকার অধিকাংশ ব্যয়ই মিটিয়ে থাকেন টিউশনি থেকে উপার্জিত টাকা থেকে।

রাজধানীর দেয়ালে দেয়ালে ‘বাসায় গিয়ে যত্নসহকারে পড়াতে চাই’ বিজ্ঞাপণ দিলেও আগের মতো সাড়া পাচ্ছে না টিউশন নির্ভর শিক্ষার্থীরা। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীই নয়, আরো অনেকেই টিউশনিকে বেছে নিয়েছেন স্থায়ী উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে।

চাকরির পাশাপাশি সংসারের অতিরিক্ত ব্যয় মেটাতেও অনেকেই অফিস শেষে টিউশনি করে থাকেন। করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে এ সুযোগ এসে ঠেকেছে তলানীতে। এক প্রকার বিপাকে পড়েছেন টিউটররা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সৈকত ইসলাম।

রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় একটি মেসে ভাড়া থাকেন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে টিউশনি করে নিজের পড়াশোনার খরচ চালিয়ে থাকি। নিজের ব্যয় ছাড়াও গ্রামে থাকা মা-বাবার কাছেও সামান্য অর্থও পাঠাতে হয়।

যেহেতু এখনো আমি শিক্ষার্থী তাই স্থায়ী কোন চাকরি করারও সুযোগ পাচ্ছি না। তাই বাধ্য হয়েই আয়ের রাস্তা খুঁজে নিয়েছি টিউশনি। কিন্তু এখন যেহেতু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ তাই আগের মতো টিউশনিও পাচ্ছি না। গ্রামে বাবা মার কাছে কি টাকা পাঠাবো এখন নিজের খরচ ও চালাতে কষ্ট হয়।

গ্রামেও চলে যাওয়ার উপায় নেই। তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী মোবারক হোসেন বলেন, ‘আমরা অধিকাংশ মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে মেয়ে। এজন্য পড়াশুনার খরচের যোগান দিতে হয় আমাদের নিজেদের। এখন মহামারি করোনার নীল থাবা উপার্জনের প্রধান উৎস টিউশনি বন্ধ রয়েছে।

এ কারণে মানবেতর জীবনযাপন করছি। অসহায় বাবা মায়ের পরিবারের বোঝা হয়ে উঠেছি।’ ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী জুনায়েদ বলেন, যেহেতু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, ক্লাস হচ্ছে না তাই অধিকাংশ অভিভাবকই বাসায় শিক্ষক রাখছেন না।

এখন বাসায় আলাদা ভাবে শিক্ষক রাখা তারা অতিরিক্ত খরচ হিসেবে দেখছেন। যার ফলে টিউশনি এখন পাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা যারা মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ব্যাচেলর বাসায় থাকি তাদের জন্য টিউশনিটা অনেক বড় একটা মাধ্যম আয়ের।

এখন দেয়ালে দেয়ালে বাসায় গিয়ে পড়াতে চাই বিজ্ঞাপণ দিলেও কোন কাজ হচ্ছে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলে হয়তো এ সমস্যাটা কেটে যাবে।