সারা বিশ্বে প্রতিদিন যে সংখ্যক মানুষ মারা যাচ্ছেন তার মধ্যে শতকরা ৩২ শতাংশের মৃত্যুর কারণ হার্টের রোগ। আর মধ্য ও নিম্ম আয়ের দেশগুলোতে এমন হচ্ছে বেশি।

বৈশ্বিক তথ্য এবং প্রতিবেদন অনুসারে, তামাক ব্যবহার, অস্বাস্থ্যকর খাদ্য এবং, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা এবং অ্যালকোহলের ক্ষতিকারক ব্যবহারের মতো ঝুঁকির কারণগুলোকে মোকাবেলা করে বেশিরভাগ হৃদরোগ প্রতিরোধ করা যেতে পারে।

হৃদরোগ কতটা মারাত্মক হতে পারে সে সম্পর্কে সবাই সচেতন হলেও আমরা প্রায়শই এর মূল কারণগুলো এড়িয়ে যায়।

পরে যখন গুরুতর হয়ে যায় তখন আমরা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করি। কিন্তু দেখা যায় ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।
আমাদের চারপাশের সমস্ত কিছু থেকে নিজেদের রক্ষাও করতে পারিনা। এজন্য আমাদের অবশ্যই প্রতিরোধ করতে হবে। হৃদরোগের সাথে যুক্ত ঝুঁকি এড়ানোর জন্য চিকিৎসকরা একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট, নিয়মিত ব্যায়াম, ভাল ঘুম, ধূমপান, এবং পর্যায়ক্রমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন।

পরিমিত খাবার:

খাবারে তেলের ব্যবহার কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। সব মিলিয়ে সংযম হলো সুস্থতার চাবিকাঠি। ভার্জিন অলিভ অয়েল, ক্যানোলা অয়েল বা ফ্ল্যাক্সসিড অয়েল-এর মতো স্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ আধা লিটার তেল- একজন প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য প্রতি মাসে উপযুক্ত এবং সেই সাথে বেশি সবুজ শাক, বাদাম, প্রোটিন এবং ফাইবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এবং রেড মিট এড়িয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন।

ব্যায়াম:

নিয়মিত ৪০ মিনিটের মতো ব্যায়াম করতে হবে। এই ব্যায়াম কার্ডিওভাসকুলার ঝুঁকি ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে সাহায্য করে। এটি ওজন কমাতে, রক্তচাপ, রক্তে শর্করা, কোলেস্টেরলের মাত্রা উন্নত করতে সাহায্য করে এবং আপনার যৌন জীবনকেও ভালো রাখবে।

ধূমপান, অ্যালকোহল পান বন্ধ করা:

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বেশিরভাগ হৃদরোগের কারণ ধূমপান এবং অ্যালকোহল। অধূমপায়ীদের তুলনায় ধূমপায়ীদের প্রায় ৫০ শতাংশ আকস্মিক হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি। সেই সাথে উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোকের মতো অন্যান্য অসুস্থতার ঝুঁকিও বাড়ে।

ঘুমানো:

ঘুম মানসিক এবং কার্ডিয়াক স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কমপক্ষে সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমানো উচিত। হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর আরেকটি কার্যকরী উপায় হলো হাসিখুশি থাকা। হাসি অপরিহার্য, এটি এন্ডোরফিন নিঃসরণ করে, যা ফলস্বরূপ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে, আপনার রক্ত ​​সঞ্চালনকে উন্নত করে এবং এর ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

নিয়মিত চেকআপ:

শারীরিক পরীক্ষা যেমন রক্তচাপ, ওজন, রক্তের পরীক্ষা, কোলেস্টেরলের মাত্রা, কিডনি, লিভার এবং থাইরয়েড ফাংশন পরীক্ষা সহ রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা এবং ইসিজি নিয়মিত করা উচিত। প্রয়োজনে একজন প্রশিক্ষিত কার্ডিওলজিস্টের সাথে পরামর্শ করতে হবে।

কলমকথা/রোজ