![](https://dailykolomkotha.com/wp-content/uploads/2022/03/0dc95878fc5e6e7fcbf1b56f10900775e5aa1ba9d2c3e77d.png)
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত
শরীরে খুব সহজেই অক্সিজেনের মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে অ্যারোবিকস ব্যায়ামগুলো। তাই স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে তুলতে আপনি ব্রেন অ্যারোবিকস টেকনিক কাজে লাগাতে পারেন।
আপনি কি কাজের চাপে প্রায়ই এটা-সেটা ভুলে যাচ্ছেন বা আপনার স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ছে? এর পরিণাম হিসেবে ভাবছেন–আপনি নিশ্চয়ই ডিমেনশিয়া বা অ্যালঝাইমার শিকার। কারণ হিসেবে হয়তো দায়ী করছেন মানসিক চাপ, হাইপোথাইরয়েড, ডায়াবেটিস বা বংশগত রোগকে।
এমনটা কিন্তু সবসময় না-ও হতে পারে। নিজের দোষেও অনেক সময় আপনি আপনার মস্তিষ্কের ক্ষতি করে ফেলতে পারেন, তা কি জানেন?
মাত্র তিন পাউন্ড ওজনের মস্তিষ্ক দিয়ে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের নানান জটিলসব কাজ সমাধান করছি। তা-ও আবার ব্রেনের সম্পূর্ণ অংশ নয়, মাত্র ১০ ভাগ ব্যবহার করে। আর তাতেই আমরা পেয়েছি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম জীবের খেতাব। তাহলে পুরো ব্রেন কাজে লাগাতে পারলে কী হতো–একবার ভাবুন তো?
আমাদের মস্তিষ্কে ১০০ বিলিয়নের মতো নিউরন কোষ আছে, যা গুনতে শুরু করলে একজন মানুষের তিন হাজারেরও বেশি বছর সময় পার হয়ে যাবে। অথচ যেকোনো বিষয়ে গভীর চিন্তা করার অভাবে এই নিউরনগুলো আমরা ধ্বংস করে ফেলছি প্রতিনিয়ত। বিজ্ঞান বলছে, প্রজ্বলিত নিউরনসংখ্যা কমতে শুরু করলে আমাদের স্মৃতিভ্রমের মতো সমস্যা দেখা দেয়।
আপনার এখন মনে হতেই পারে, ব্রেন তো প্রতিনিয়তই খাটছে, একে আলাদা করে আর কী খাটানোর আছে! বিজ্ঞান এ ক্ষেত্রে বলছে ভিন্ন কথা।
মস্তিষ্ককে উজ্জীবিত রাখতে সাধারণ কার্যাবলিকে এখানে ধরা হচ্ছে না। নিউরোলজিস্টরা বলছেন, এর জন্য প্রয়োজন মস্তিষ্কের ব্যায়াম। অল্প বয়সে মস্তিষ্কের ব্যায়ামের প্রয়োজন না হলেও বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এটি প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে।
সঠিক নিয়মে মস্তিষ্কের ব্যায়ামের অভাব হলে এর কার্যকারিতা কমতে শুরু করে। তাই এ কার্যকারিতা বাড়িয়ে তুলতে আপনি করতে পারেন মেন্টাল অ্যারোবিকস বা ব্রেন জিম।
ব্রেন অ্যারোবিকস কিন্তু শরীরের ব্যায়ামের মতো নয়। বছরের পর বছর একই ব্যায়াম মস্তিষ্কের ক্ষেত্রে করা যাবে না। ব্রেনকে এর জন্য খাটাতে হবে নতুন নতুন পথে, নতুন কৌশলে।
এর জন্য আপনি বিভিন্ন ধারার বই পড়তে পারেন। বিশেষ করে সাইকোলজি, অ্যাডভেঞ্চার, থ্রিলার ও বিজ্ঞাননির্ভর বইগুলো। ক্রাইমের বইগুলো পড়ার ক্ষেত্রে গল্পের ভিলেনকে লেখকের চিহ্নিত করার আগেই আপনি চিহ্নিত করুন। এতে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বেড়ে যায় অনেকটাই।
মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে বা স্মৃতিকে অটুট রাখতে নতুন নতুন ভাষা শিখতে পারেন। জানতে পারেন বিভিন্ন দেশের মানুষের সংস্কৃতি সম্পর্কে।
মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে এমন কিছু করুন, যা আগে কখনোই করেননি। এই যেমন দাঁতব্রাশ সাধারণত আমরা ডান হাতে করি, কিন্তু হঠাৎ যদি আপনি বাঁহাতে দাঁতব্রাশ করেন, তাহলে মস্তিষ্কের অব্যবহৃত নিউরনগুলো হঠাৎই জেগে উঠবে।
ব্রেনের মেমোরি অক্ষত রাখতে দুই হাত দুই পা-ই সমানভাবে ব্যবহার করতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা গিটার, ভায়োলিনের মতো ইনস্ট্রুমেন্ট বাজায়, তাদের নিউরনসংখ্যা বেশি প্রজ্বলিত থাকে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, বাদ্যযন্ত্র বাজানোর সময় এদের দুই হাতের সঙ্গে সচল থাকে চোখ ও ব্রেন, যা ব্রেনের কার্যকারিতা অনেকটাই বাড়িয়ে তোলে।
মানসিক প্রশান্তির জন্য গান বা মিউজিক শুনতে পারেন। বিশেষ করে মোজার্টের তৈরি সুরগুলো। এই সুর ব্রেনের ওয়েভে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে, যা গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। এ ছাড়া ডান হাতের পাশাপাশি যদি বাঁহাত দিয়েও যদি আপনি মোটামুটি লিখতে পারেন, তাহলেও আপনি আপনার মস্তিষ্ককে এগিয়ে রাখতে পারবেন অন্যদের চেয়ে একটু বেশিই বলা যায়।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।