অলোক মজুমদার,চিতলমারী প্রতিনিধি: বয়স তার ৮৪।আজ পর্যন্ত ছেড়েনাই তার ভাগ্যের চাঁকা।পায়নি সরকারী কোন সাহায্য বা অনুদান।সরকারী দপ্তর বা ইউনিয়ন পরিষদে একাধিক বার গেলেও নাম ওঠেনি তার সাহায্যের তালিকায়,এমনি এক বৃদ্ধার জীবন সংগ্রামের করুন কাহিনী কথা ।
নাম তার রাধিকা হালদার। বাবা সীতা গাইন,মাতা ধুনিয়া গাইন। জন্ম ১১ফেব্রুয়ারী ১৯৩৭।বাগেরহাট
জেলার সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের নগরমান্দ্রা গ্রামের অগ্নিশ্বর হালদারের সাথে বিবাহ
হয় ছোট বেলায়। অভাব অনটন ছিলো এক সময় তাদের নিত্য সঙ্গী। তবুও অভাবের সংসারে সাহায্যের
হাত পাতেনি কারো কাছে।ইতি মধ্যে বছর পাঁচেক আগে মারা যায় স্বামী অগ্নিশ্বর হালদার।
তাদের কোন পুএ সন্তান নেই।দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে।বড় মেয়ে বাবার সংসারে থাকে।জামাই বড়
মেয়েকে ছেড়ে নিরুদ্দেশ।বড় মেয়ের যৎ সামান্য আয়ে চলছিলো তাদের সংসার।কিন্তু করোনায় তার
সেই কাজ নেই। আয়ের কোন পথ না থাকায় বাধ্য হয়ে তিন জনের(মা,মেয়ে,নিজে)সংসার চালাতে এখন
ভরসা একটি দুধের গাভী।
কথা হয় রাধিকার সাথে।তিনি আক্ষেপ করে বলেন,আমার বয়স ৮৪ বছর ।আমার থেকে ছোট যারা তারা সরকারের টাকা পায়।আর কতো বয়স হলে আমি বয়স্ক ভাতা বা বিধবা ভাতা পাবো? স্বামী মারা গেছে ৫বছর হবে। ইউন্নি পরিষদে গেইলাম।বলিলো কার্ড করে দিবে,তাও দেয়নাই। জানিনা ক্যান কার্ড হয়নি।শুনেছি টাকা না দিলে নাকি কার্ড হয় না।বড় মেয়েটা খাটতে খাটতে প্রায় শেষ?সেওতো কি ভাতা যেন কয়,ও স্বামী না থাকার ভাতা পেতে পারতো?তাওতো আমরা পাইনি?
গরিব মানুষ ,কেউ কথা রাখে না?ভোটের সময় মেম্বার/চেয়ারম্যানরা আসে,ভোট চলে গেলে আমাদের কথা
কারো মনে থাকে না?
রাধিকা আরো অভিযোগ করে বলেন,আমার স্বামীর মতো আমারো শ্বাষের( হাঁপানি)অসুক
আছে।লাঠি ছাড়া হাঁটতে পারিনা,কষ্ট হয়। ঔষধ কেনার মতো সামর্থ অনেক সময় থাকে না।শ্বাস
করতে কষ্ট হয়,কি করবো? মানষে কয় চেয়ারম্যান ,মেম্বররা কতো জনকে নিয়ম ছাড়া কার্ড দেয় আর
আমি তো কার্ড পাবার দাবিদার তাই না? পরিষদে যেতে এখন আমার কষ্ট হয়। আমার বয়স হয়ে গেছে
,যে কোন সময় মরে যেতে পারি।তবে হাসিনা সরকারের কাছে দাবি, মরার আগে যেন একখানা কার্ড
পাই।
তিনি আরো বলেন আমার ব্যাথার অসুক,সাথে শ্বাসের অসুক আছে।করোনায় বড় মেয়ের আয়ের
উৎস চালের মিল (ধান ভাঙানো )বন্দ্ধ,নাততি এম এ পাশ করে বেকার,কোন কোন হাটবার বাজার
হয়না,তারপরেও আমরা নাকি বড় লোক ? তাই আমাগে(আমাদের ) নাম সাহায্যের খাতায় ওঠে না।এখন
আর আশা করি না সরকারী কোন সাহায্যের?স্বামীর ৩কাঠা ভিটা আর কাঠা পাঁচেক জমিতে আমরা
নাকি বড়ো লোক? এমন কথা শুনতে শুনতে চোখ থেকে টুপ করে গড়িয়ে পড়লো এক ফোঁটা আশ্রু।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইশারাত বলেন,রাধিকা ভাতা পায় না এটা দুঃখ জনক।আমাদের ইউনিয়নে
১০০কার্ড পায় চেয়ারম্যান। আমরা ৯সদস্য প্রত্যেকে পাই ১০খানা,তার মধ্যে চার গ্রামে জনসংখ্যাত
অনুপাতে ২খানা কার্ড পায়।কাকে রেখে কাকে দেব?৮৪বছরে বৃদ্ধা পায় না আর তার থেকে কম বয়সী রা
পায় এমন প্রশ্নের জবাবে সদস্য (মেম্বর ) বলেন তিনি নতুন করে দরখস্ত করুক, কার্ড পাইয়ে
দেবার চেয়ারম্যান এবং আমি সুপারিশ করবো।
রাধে (রাধিকা )সত্যি অসহায়।অনেকে কার্ড পায় সেই জায়গায় তিনি পাননা এটা দুঃখ জনক।
সরকার,প্রসাশন,সমাজসেবা মন্ত্রনালয় বা ইউপি পরিষদ অতিদ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করুক এটা সচেতন
মহলের দাবি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।