অনিয়ম দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকের চরিত্রহনন করে প্রতিবাদের নামে ইমেইলের মাধ্যমে হুমকি প্রদান করেছেন পশ্চিম রেলওয়ের সরাঞ্জাম নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তরের প্রধান (সিওএস) এস এম রাসেদ ইবনে আকবর।

আজ মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বেলা ২ ঘটিকায় [email protected] ইমেইলে সিওএস রাসেদ ইবনে আকবর স্বাক্ষরিত প্রতিবাদে সেই হুমকি প্রদান করা হয়।

জানা যায়, গত কয়েকদিন যাবৎ পশ্চিম রেলের সরাঞ্জাম নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তরের কেনাকাটায় অনিয়ম দুর্নীতি ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ হয় বিভিন্ন অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায়।সংবাদ প্রকাশের পর থেকে সাংবাদিককে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন দপ্তরের এও বেলাল ও একজন ঠিকাদার।সাংবাদিক টাকা না নিয়ে সংবাদ প্রকাশ অব্যাহত রাখলে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে নানা ভাবে নানাজনকে দিয়ে হুমকি প্রদান করেন।

অত:পর সকল হুমকি উপেক্ষা করে ধারাবাহিকভাবে প্রায় ৪০টির উপরে প্রিন্ট ও অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করেন রাজশাহীতে কর্মরত সাংবাদিকরা।এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উক্ত দপ্তরের অসাধু ঠিকাদার সিন্ডিকেট ও সিওএস তাদের অনিয়ম দুর্নীতি রুখতে প্রকাশিত সংবাদ মাধ্যমের ই-মেইল যোগে উক্ত হুমকিসহ প্রতিবাদ লিপি পাঠান।

প্রতিবাদলিপিতে জাতীয় দৈনিক গণকণ্ঠ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ও রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমকে হলুদ সাংবাদিক ও উক্ত সংবাদগুলোর মুলহোতাসহ তার চরিত্রহনন বিষয় নিয়ে মিথ্যা তথ্য ও বানোয়াট কথা পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাব সহ অন্যান্য সাংবাদিকবৃন্দ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।ঐ প্রতিবাদলিপি প্রত্যাহার করে প্রকাশে ক্ষমা না চাইলে রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবসহ রাজশাহীতে কর্মরত সাংবাদিকরা বৃহত্তর আনন্দোলনে যাবে বলেও হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

প্রকাশিত সংবাদের অংশ বিশেষঃ কোনভাবেই থামছে না পশ্চিমাঞ্চল রেলের সরাঞ্জাম নিয়ন্ত্রক দপ্তরের অনিয়ম দুর্নীতি।নিজেকে দায়মুক্ত করতে হিন্দু অফিসারদের ভারতের সর্বোচ্চ গোয়েন্দা সংস্থা “রিসার্চ এন্ড এনালাইসিস উইং ‘র’ এজেন্ট” এর লোক বলে আখ্যায়িত করেছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে’র সরাঞ্জাম নিয়ন্ত্রক দপ্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ বেলাল উদ্দিন।তবে ঐ ব্যক্তির সাথে রেলওয়ে দপ্তরের বিভিন্ন গোপন বিষয় ও সংবাদ প্রকাশের বিষয় কথা বলতে দেখে যাচ্ছে।

এর আগে সাবেক সিওএস বেলাল সরকারের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের পর তাকে বদলি করা হলেও বর্তমান সিওএস রাসেদুল ইবনে আকবরও দূর্নীতি’র বাহিরে থাকতে পারছে না।গত ছয় মাস হলো ঐ পদে অধিষ্ঠিত হন এসএম রাসেদুল ইবনে আকবর।যোগদানের ৬ মাসে ইতোমধ্যে গড়েছেন একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট।সেই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে করছেন কেনাকাটা।দপ্তরটিতে প্রতিটি কাজে ঠিকাদারকে গুণতে হয় মোটা অংকের উৎকোচ।এলটিএম এর মাধ্যমে পছন্দের ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ করানো হয়।দপ্তরটির বিরুদ্ধে কাজ না করে ভুয়া বিল উত্তোলনের অভিযোগও রয়েছে।কম্পিউটার অপারেটর কাম অফিস সহায়ক সানোয়ার হোসেন ইতোমধ্যে একটি ভুয়া বিল উত্তোলন করে বিষয়টি ধামাচাপা দিয়েছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্বজনপ্রীতি’র মাধ্যমে মনমত ঠিকাদারকে কাজ প্রদানসহ ৬ মাসে প্রতিটি কাজে নিয়েছেন মোটা অংকের কমিশন।

নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক ভুক্তভোগী ঠিকাদাররা বলেন, যোগদানের পর থেকে বাজেট নাই মর্মে সল্পতা গল্পে কমিশনে তার পছন্দের ঠিকাদারকে এলটিএম এর মাধ্যমে কাজ দিচ্ছেন।নিম্নমানের মালামাল ক্রয় করে মোটা অংকের কমিশন নেওয়া হচ্ছে।

কেনাকাটার অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে ইতিমধ্যে দূদক আবারও তদন্ত শুরু করেছেন।কেনাকাটার বিষয়ে দুদক রাজশাহী রেল মেডিকেলে ঝটিকা অভিযান পরিচালনাও করেছেন।তবুও কোনোভাবে যেন থামছে না সিওএস এর কেনাকাটার অনিয়ম দুর্নীতি।

বাজেট নাই মর্মে মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়েও গোপনে এখনো কাজ করছেন বর্তমান (সিওএস) রাসেদুল ইবনে আকবর।

দপ্তরটির ব্যপক অনিয়ম ও দূর্নীতি ঠেকাতে প্রতিমাসে সাংবাদিকদের জন্য মোটা অংকের অর্থ বরাদ্দ দিয়ে থাকেন।সেই বরাদ্দ তালিকা করে স্বাক্ষর নিয়ে কতিপয় অসাধু সাংবাদিকের মাঝে বন্টন করেন প্রশাসনিক কর্মকর্তা বেলাল উদ্দিন।দপ্তরের এও বেলাল অফিসের গোপন নথিপত্র বিভিন্ন জনকে দিয়ে থাকেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।রেল মেডিকেলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ গোপন নথি ইতিমধ্যে বিভিন্ন জনকে টাকার বিনিময়ে দিয়েছেন বেলাল।যার তথ্য প্রমান সংরক্ষিত।

অফিসারদের বেকায়দায় ফেলতে ও নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে এও বেলাল এমনটা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।রেলওয়ে মেডিকেলের কেনাকাটার কাজে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে বলে সেই কাগজও বিক্রি করেন মোটা অংকের টাকায়।এমন তথ্যও সংরক্ষিত রয়েছে।

সাংবাদিকের সাথে (ম্যাসেঞ্জারে) কথার প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন রেলওয়ে দপ্তরে কর্মরত হিন্দু অফিসাররা ভারতের সর্বোচ্চ গোয়েন্দা সংস্থা “রিসার্চ এন্ড এনালাইসিস উইং ‘র’ এজেন্ট” এর লোক।

প্রসঙ্গত, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের কেনা কাটায় প্রায় ৭ কোটি টাকার মালামাল ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি করা হয়েছে।ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তা ফলাও ভাবে প্রকাশ করা হয়েছে।গত ১৫ জানুয়ারী উক্ত অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পশ্চিম রেলওয়ে মেডিকেল ও জিএম দপ্তরে অভিযান পরিচালনা করেছেন।

হুমকি ও সাংবাদিকের ব্যক্তিগত চরিত্রহনন পূর্বক একজন সরকারি কর্মকর্তা প্রতিবাদ দিতে পারে কি না জানতে পশ্চিম রেলের জিএম অসীম কুমার তালুকদারকে ফোন দিলে তিনি ফোন কেটে দেন।

হোয়াটসঅ্যাপে এ জানতে চাইলে তিনি লিখেন পত্রিকায় অনিয়ম ও দুর্নীতি সম্পর্কে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে এর সংগে যেমন আমি একমত নই, তেমনি প্রতিবাদে যে বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে, সে সম্পর্কে আমার বিন্দু বিষর্গ ও ধারনা নাই।সুতরাং এ বিষয়ে আমার পক্ষে সরাসরি মন্তব্য করা সম্ভব নয়।তবে দুই পক্ষই ক্ষুব্ধ এবং কাঁদা ছোড়াছুড়ি করছেন বলে আমার কাছে প্রতীয়মান হচ্ছে।