ছোট বেলায় পল্লীকবি জসিমউদদীনের কবিতায় পড়েছিলাম “সবার সুখে হাসবো আমি কাঁদবো সবার দুঃখে”, ঠিক তখন থেকেই ইচ্ছা মানুষের জন্য কিছু করি। মূলত সামাজিক কাজ ভালো লাগে সেই জন্যই করা। একটা অসহায় মানুষের মুখে যখন হাসি ফুটাতে পারি তখন মনে হয় এটা ঐ মানুষটা আনন্দ না এটা আমার নিজের আনন্দ। দেশ ও দেশর মানুষের জন্য কিছু করতে পারার যে আনন্দ সেটা সেটা বলে বুঝতে পারবো না।

এভাবেই নিজের অভিমত ব্যক্ত করেছেন সমাজকর্মী সাইফুল্লাহ আল হেলাল৷ তরুন এই সমাজকর্মী এ বয়সেই অসহায়,দুঃস্থ ও পিছিয়ে পরা মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন৷ মানুষের পাশে দাড়াতে পেরেই যেন সবচেয়ে আত্মতৃপ্তি পান তিনি৷

নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার দোহল পাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সাইফুল্লাহ আল হেলাল। তিন ভাই বোনদের মধ্যে সবার বড় তিনি। ছোটবেলা থেকেই পরোপকারী মনোভাব ছিল তার৷ অন্যের উপকার করতে পেরে নিজেকে খুশি ভাবত সে৷ প্রতিদিন চেষ্টা করত মানুষের উপকার করার৷

জানা যায়, বাড়ির পাশের বিদ্যালয় থেকে প্রাইমারি,দোহলপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, জনতা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি ও ঢাকা সরকারি তিতুমীর কলেজ থেকে স্নাতক ও মাস্টার্স শেষ করেন তিনি৷ বর্তমানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন৷

তিস্তা নদীর পাশেই শৈশব ও কৈশোরের বেরে ওঠা তার৷ ছোটবেলায় নিজ চোখে দেখা নিজ গ্রামের ৮০ ভাগ মানুষের নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার দৃশ্য। তখন থেকেই সমাজসেবী সাইফুল্লাহ আল হেলাল ভাবতেন সমাজের পিছিয়ে পরা মানুষের জন্য কিছু করার৷ গড়ে তুলেন “সেভ হিউম্যান লাইফ” নামে একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন। যেটার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অসহায় ও পিছিয়ে পরা মানুষকে সহযোগিতা করেছেন তিনি৷

সেভ হিউম্যান লাইফ সংগঠনটির মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলার ২২ টি পরিবারকে ছাগল,৮ টি পরিবারকে গরু,১৫ টি পরিবারকে ঘর

১৫ টি অসহায় পরিবারকে টিউবওয়েল, ০৮ টি পরিবারকে সেলাই মেশিন ও কাপড়,০২ টি দোকানিকে দোকানের মালামাল কিনে দেয়া ও ০২ টি পরিবারকে নৌকা,

৩ টি এতিমখানায় ও ০৫ টি মসজিদে কার্পেট ও ফ্যান,বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবার ও ত্রাণ সামগ্রী,শীতার্তদের মাঝে কম্বল ও জ্যাকেট প্রদান করেছেন তিনি৷

এ সংগঠনটির মাধ্যমেই অনন্ত সময় সমাজের অসহায় ও দুস্থ মানুষের মাঝে পাশে দাড়ানোর কথা ব্যক্ত করেছেন সেভ হিউম্যান লাইফ সংগঠনটির চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ আল হেলাল।

তিনি আরো বলেন, যেহেতু তিস্তা নদীর পাশে আমার গ্রামের বাসা৷ পাশে ভারতের সীমান্ত। ছোট বেলা থেকেই তিস্তা নদীর সাথে আলাদা একটি সখ্যতা আছেই। তবে দেখেছি তিস্তার আঘাতে মানুষের সবকিছু বিলীন হয়ে যাওয়া৷ থাকার মত শেষ সম্বল টুকুও রাখেনি তিস্তা। তখন থেকেই স্বপ্ন বুনতাম যদি তাদের জন্য কিছু করতে পারতাম। সে স্বপ্ন লালেন সেভ হিউম্যান লাইফ নামে একটি সংগঠন করেছি। সবার সার্বিক সহযোগিতায় আমরা অনেকগুলো কাজ করতে পেরেছি। তবে আমরা আশাবাদী যদি সমাজের বিত্তবান মানুষেরা এগিয়ে আসে তাহলে আরো কিছু মানুষের সহযোগিতা করতে পারব ইনশাআল্লাহ৷