দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা হতে প্রায় বিলুপ্তির পথে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন ছোট-মাছ। সেই সাথে আশংকা করা হচ্ছে এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে এ এলাকায় এক সময় এসব মাছ সম্পূর্নভাবে বিলুপ্তি ঘটবে। ক্রমশই খাল বিল, পুকুর, নদ-নদীসহ মুক্ত জলাশয় গুলো মাছ শূন্য হয়ে পড়েছে।

হারিয়ে যাওয়া ওইসব মাছের স্বাদ ভুলে যাচ্ছে উপজেলার ৬ ইউনিয়নের মানুষজন। এক দশক আগেও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ছোট-বড় নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর-ডোবায় এবং ফসলী ক্ষেতে প্রচুর দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যেতো।

একশ্রেণীর মানুষ মাছ ধরাকে তাদের পেশা হিসেবে নিয়েছিল। কিন্তু যত্রতত্র মাছ আর পাওয়া না যাওয়ায় সে জেলেরা বর্তমানে তাদের পেশা বদল করতে বাধ্য হচ্ছেন।
উপজেলার ইছামতি নদী সংলগ্ন ছাতিয়ান গড় গ্রামের আনিছুর রহমান নামে এক যুবক বলেন, আগে নদীতে যে পরিমাণ দেশীয় মাছ পাওয়া যেতো বর্তমানে সে পরিমাণের এক ভাগ মাছও নদীতে নাই।আগে আমরা নদীর ঘাটগুলোতে হাত, পা ধোয়ার সময় অসংখ্য পুটি, টেংড়া দেখতে পেতাম। কিন্তু এখন আর দেখা যায় না।

এখন নদীতে সারাদিন বর্শি পেতে বসে থাকলেও চুনো পুটিও পাওয়া যায় না। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সরকারকে আরো কঠোর হতে হবে এবং এ ব্যপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের আরো তৎপর হতে হবে।

এ বিষয়ে ৫ নং ঝাপুপাপাড়া ইছামতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম বলেন,বর্তমানে কৃষিজমিতে অনিয়ন্ত্রিত সার ও কীটনাশকের ব্যবহার, অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে নির্বিচারে মা মাছ ও ছোট পোনা মাছ ধরা, খাল-বিল-ডোবা ভরাট, উন্মুক্ত জলাশয়ে বাঁধ নির্মাণসহ মাছের বিচরণক্ষেত্রের অনুকূল পরিবেশ সংকট হওয়ার কারণে দিনকে দিন দেশীয় প্রজাতির মাছগুলো বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে ভাবিষ্যতে হয়তো দেশীয় প্রজাতির এসব মাছ চিরতরে হারিয়ে যাবে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।

তিনি এই প্রতিনিধিকে আরও বলেন, এসব বিলুপ্ত প্রজাতির মাছগুলো সংরক্ষণ করতে হলে প্রথমে অবৈধ কারেন্ট জালের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং জেলেদের জালের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। কৃষিজমিতে কীটনাশক ব্যবহার সীমিত করতে হবে। এতে করে এসব মাছ বিলুপ্ত হওয়া থেকে রক্ষা করা যাবে।