আজম খান, বাঘারপাড়া(যশোর) : চ্ট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে নিহত ইব্রাহীম হোসেনের মরদেহ গ্রামের বাড়ি যশোরে পৌঁছেছে। ইব্রাহীম বাঘারপাড়া উপজেলার জহুরপুর ইউনিয়নের নরসিংহপুর গ্রামের আবুল কাশেম মুন্সীর ছোট ছেলে। তিনি সীতাকুণ্ডে প্রাণ আরএফএল কোম্পানিতে
শিপিং সহকারী পদে চাকরি করতেন

আজ সকাল ৭টায় বাঘারপাড়া উপজেলার জহুরপুর ইউনিয়নের নরসিংহপুরে গ্রামেে বাড়িতে তার মরদেহ বহনকারী ফ্রিজিং এ্যাম্বুলেন্সটি এসে পৌঁছায়।

এ সসময় আগুনে ঝলসে যাওয়া ইব্রাহীমের মুখ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। জীবন সঙ্গীকে হারিয়ে স্ত্রী মুন্নি খাতুন যেন বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন। ভাই-বোনসহ অন্যান্য স্বজনদের গগণবিদারী আহাজারি, প্রতিবেশি ও গ্রামবাসীদের শোকে এলাকার আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে।

সকাল ৮টায় শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ.ন.ম. আবুজর গিফারীসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিক নেতৃবৃন্দরা নরসিংহপুরে ছুটে আসেন।

নিহত ইব্রাহীমের খালাতো ভাই শিমুল হোসেন জানান, শনিবার রাতে অনেকের মতো ইব্রাহীম বিএম কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুনের ভিডিও ফেসবুকে লাইভ করছিলেন। কিছু সময় পর হঠাৎ কনটেইনারগুলোতে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। তখন থেকে ইব্রাহীমের মুঠোফোন বন্ধ ছিল। এরপর ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁজাখুজির পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তার মরদেহের সন্ধান মেলে।

ইব্রাহীমের মা আহাজারি করে বলেন, ‘শনিবার রাত নয়টায় ইব্রাহীমের সাথে মুঠোফোনে আমাদের শেষ কথা হয়। ঈদে বাড়ি এসে সন্তানের মুখ দেখতে চেয়েছিলো সে। পুত্র সন্তান হলে মাদরাসায় পড়াতে চেয়েছিল, হাফেজ বানাবে। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডে ইব্রাহীমের সেই স্বপ্ন শেষ হয়ে গেলো।’

জহুরপুর ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টু জানান, পাঁচ বছর আগে প্রাণ আরএফএল কোম্পানিতে চাকরি পান ইব্রাহীম। দেড় বছর আগে নিজ গ্রামেই বিয়ে করেছেন। তার স্ত্রী এখন নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ইব্রাহীম মারা যাওয়ার পর পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

আজ সকাল ৯টায় নরসিংহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইব্রাহীমের জানাযা নামাজ শেষে পারিবারিক করবস্থানে দাদা-দাদির পাশে তাকে দাফন করা হয়েছে।