রথযাত্রার নির্মল প্রবাহে মন্ত্র বা স্তব সহযোগে জগন্নাথকে বন্দনা করা যায়। জীবন ও জগতের ধারাপাতে জগন্নাথদেব অর্থ, সুখ, সমৃদ্ধি ও শান্তির প্রতীক হয়ে যুগযুগ ধরে বিরাজিত।

মানুষের জীবনপ্রবাহে জগন্নাথদেব যেন লক্ষীশ্রীর আধার। রথযাত্রার দিন শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের আশীর্বাদ শিরে ধারণ করে তাঁর উপাসনা করলে জীবনরথটিকেও সুন্দর ছন্দময় করে তোলা সম্ভব।

মানুষের জীবনে সব উৎসবেরই মূল ভিত্তি হল মানুষের সুখে থাকা, সমৃদ্ধিতে থাকা ও শান্তিতে থাকা। অর্থ বৃদ্ধির জন্য রথের দিন ঠাকুরের আসনে একটি সুন্দর হলুদ কাপড় রাখতে হবে। ওই কাপড়ের ওপর এগারোটি কড়ি রাখতে হবে, কড়িগুলোর ওপর কেশরের টিপ দিতে হবে।

এরপর অর্থ বৃদ্ধির জন্য সারা রাত ওগুলো ঠাকুরের আসনে রেখে দিতে হবে। পরের দিন কড়িগুলো ওই হলুদ কাপড়ে বেঁধে ক্যাশ বাক্স অথবা টাকা-পয়সার জায়গায় রেখে দিতে হবে। তা হলেই ক্রমাম্বয়ে আর্থিক সমৃদ্ধি ঘটবে।

শ্রীবলভদ্রকে ছাড়া জগন্নাথদেবের রথযাত্রা ও উৎসব পূর্ণতা পায় না। বলভদ্র যেন জগন্নাথের সঙ্গী এবং মৌলিকতার অধিষ্ঠানে প্রাণময় সোপান, সেখানে জীবন আঙিনার দ্যোতনা পরিপূর্ণ।

পরমপবিত্র ক্ষেত্র শ্রী শ্রী জগন্নাথ ধাম। নিজের পাপে ও তাপে জর্জরিত হলে সেই অনুতাপ ও অনুশোচনা থেকে মুক্তির জন্য শ্রী শ্রী জগন্নাথ ধামে এলে পরম প্রশান্তি এবং পাপ মোচন হয়। এ সব গল্প কথা নয় বরং বাস্তবের বিমূর্ত অধ্যায়।

জগন্নাথদেবের তীর্থক্ষেত্রে সব মানুষ আসে প্রিয়ময় উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা সঙ্গে করে। এবং সমুদ্রস্থান, প্রকৃতি দর্শন, জগন্নাথ দর্শন ও অপরাপর মন্দির দর্শন করে মনোমন্দির অপূর্ব তৃপ্তিতে ভরিয়ে নেয় যা প্রকৃতই প্রাপ্য।

ভগবানকে শুদ্ধ চিত্তে, নিষ্ঠাভরে ভজন করলে অতি সহজেই তাঁর কৃপা লাভ করা যাবে এবং মনে শান্তি বিরাজ করবে।

প্রবাহমানতা, নির্মলতা, গতিময়তা, সুস্বাস্থ্য এবং অনন্য অনাবিল সুন্দরের প্রতীক রথযাত্রা। যেখানে জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার মঙ্গল স্পর্শে মানবকূলের পূর্ণতা প্রাপ্তি হয়। মূলত উন্নতি, গতি ও রূপান্তরের আলেখ্যে সুষম সন্নিধান ঘটে মানুষের প্রদীপ্তময় উজ্জ্বলতার তীর্থে।

যেখানে রথযাত্রা জগন্নাথদেব, বলভদ্র এবং সুভদ্রার সংসর্গে অর্থ, সুখ, সমৃদ্ধি ও শান্তির প্রতীক হয়ে প্রতীয়মান রয়।