প্রচন্ড তাপদাহ ও গরমের মাঝে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে ঠাকুরগাঁওবাসী অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। সবথেকে বেশি বিপাকে রয়েছে বিদ্যুৎ নির্ভরশীল ব্যবসায়ীরা। তবে জ্বালানী সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হওয়ায় এমন সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানান পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি।

জানা যায়, প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ বার লোডশেডিং এবং দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ ফিরে না আসা নৈমিত্তিক ঘটনায় পরিনত হয়েছে। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে বিদ‍্যুৎ ব‍্যবহার কারিদের মাঝে। এদিকে সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যাংক-বীমা, ছোট বড় পোল্ট্রি ও ডেইরী খামার, ওয়ার্কশপ, বিপনী বিতাণ ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা কেন্দ্রসহ প্রত্যন্ত পল্লী গ্রামের সাধারণ মানুষ বিদ্যুতের অব্যাহত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থী ও পরিক্ষার্থীরা চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ফটোস্ট্যাট ব্যবসায়ী হৃদয় জানায়, প্রতিদিন এমন লোডশেডিংয়ের কারণে দোকানে থাকা কম্পিউটার ও ফটোকপি মেশিন নিয়ে বিপাকে রয়েছে। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে কখন কোন যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায় তার কোন গ্যারান্টি নেই। এদিকে বিদ্যুৎ না থাকার আয় রোজগার কমে গেছে ফলে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে বলে জানান তিনি।

গ্রাহক রবিউল ইসলাম বলেন, এমন অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের জন্য ছেলেমেয়ের পড়ালেখার সমস্যা দেখা দিয়েছে। পরিবারে থাকা বয়স্করা অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে।

বালিয়াডাঙ্গী হাসপাতালের রোগী সানজিতা বলেন, আমি এমনিতেই অসুস্থ্য বিদ্যুৎ না থাকায় আরও অসুস্থ্য হয়ে পড়েছি।

জেলা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলায় প্রায় ৩ লক্ষের বেশি গ্রাহক আছে। এতে প্রায় জেলায় ৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎয়ের প্রয়োজন হয়। এর মধ্যে ৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ঘাটতি রয়েছে ৩০ মেগাওয়াট।

বালিয়াডাঙ্গী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) কামরুল হাসান জানান, জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে এ জন্য এ ধরণের সমস্যা দেখা দিয়েছে। কিভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে পাওয়ার গ্রীড কোম্পানি অফ বাংলাদেশ (পিজিসিবি) এতে জমা হয়। তারপর এখান থেকে জেলা ও উপজেলায় সরবরাহ হয়।

বালিয়াডাঙ্গী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জোনাল ম্যানেজার (ডিজিএম) আহসান কবির বলেন, এমন সংকট সমাধানের জন্য সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে তাহলে আমরা সমস্যা সমাধান করতে পারব। যেমন: বিদ্যুৎ অপচয় করা যাবে না, যারা বেশি এসি চালায় সেটা যদি ফ্যান চালালে সমাধান হয় তাহলে এসি বন্ধ রাখতে হবে, রাতে অপ্রয়োজনীয় ইলেকট্রিক ডিভাইস বন্ধ রাখতে হবে। বিশেষ করে যারা বিদ্যুৎ চুরি করে তাদের সনাক্ত করে পুলিশ অথবা স্থানীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জানানোর আহ্বান জানান তিনি।