মণিরামপুরে বিভিন্ন ঘটনায় কয়েকজন মাদককারবারীর মৃত্যু এবং প্রশাসনের নজরদারী ও অভিযানের কারণে নেশাদ্রব্য স্প্রীট ও গাঁজা বিকিকিনি অনেকটা কম হলেও ইয়াবা এবং ফেনসিডিল কারবারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে শহরতলীসহ পল্লী এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে প্রকাশ্যে এমন কারবার বৃদ্ধি পাওয়ায় যুব সমাজের পাশাপাশি কিশোরদের একটি অংশ বিপদগামী হচ্ছে। এসব ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে আগে-ভাগে নিয়ন্ত্রণ না থাকায় যুব ও কিশোর সমাজের জন্য তাদের অভিভাবকদের নানাভাবে চরম খেসারত দিতে হচ্ছে। অনেক পরিবার এখন তাদের নিয়ে আতঙ্কে আছে।

খোজখবর নিয়ে জানাযায়, মণিরামপুর পৌর এলাকার এক শীর্ষ নারী হেরোইন কারবারীর মৃত্যুর পর এ উপজেলায় বর্তমানে হেরোইন বিক্রেতা ও সেবনকারী নেই বললেই চলে। এরপর বিষাক্ত নেশাদ্রব্য সেবনকরাসহ বিভিন্ন ঘটনায় কয়েকজন শীর্ষ গাঁজা ও স্প্রীট বিক্রেতার পাশাপাশি কয়েকজন সেবনকারী মারা যায়। বর্তমানে মণিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলসহ পৌর এলাকায় গাঁজা ও স্পীট বিকিকিনির হার অনেকটা কমে এসেছে। সচেতন মহল মনে করেন, কিছুটা হলেও এসব ঘটনায় প্রশাসনের অভিযানের পাশাপাশি স্থানীয় প্রতিবাদীদের অবদান রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাদক কারবার ছেড়ে দেয়া কয়েকজন জানান, তারা যখন মাদকের কারবার চালিয়েছে তখন অনেক জায়গা ম্যানেজ ব্যবসা চালাতে হয়েছে। ফলে, তাদের অভিজ্ঞতায় দাবী করেন, প্রকাশ্যে হোক আর গোপনে হোক বর্তমানে যারা মাদকের কারবার চালিয়ে আসছে তাদেরকেও অনুরূপভাবে কিছুটা হলেও ম্যানেজ করে মাদক কারবার করতে হয়। সূত্র জানায়, উপজেলার গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন পয়েন্টে মাদকের এসব কারবার অনেকটা সুবিধাজনক। যে কারণে মাদক কারবারীরা এখন পল্লী এলাকার ওই সব স্থান বেছে নিয়েছে। তবে পৌর এলাকায় শতাধিক ইয়াবা ও ফেনসিডিল বিক্রেতা বিভিন্ন ক্ষমতাধর ব্যক্তির ছত্রছায়ায় তাদের কারবার পুরোদমে চালিয়ে আসছে। মাদকের ব্যাপারে আইন-শৃংখলা বাহিনীর অভিযান চলমান থাকলেও বর্তমানে পৌর শহরে যারা ওই কারবার চালিয়ে আসছে তাদের মধ্যে অধিকাংশই ক্ষমতাধর কিছু ব্যাক্তির আশীর্বাদ রয়েছে। তবে মাদক নির্মূলের ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন জিরো টলারেন্স। যদিও এ সমস্ত কারবারীদের কারবারে হস্তক্ষেপ করতে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষে কিছুটা হলেও দূরহ সৃষ্টি হতে পারে। এ ব্যাপারে সচেতন অনেকের মন্তব্য শুধু যুবসমাজ নয়, মণিরামপুর পৌর এলাকার পাশাপাশি বিভিন্ন অঞ্চলে মাদক বিক্রি ও সেবনে ঝুঁকে পড়েছে অসংখ্য শিক্ষার্থী কিশোররা। সমাজিক অবস্থানের কথা চিন্তা না করে নামী-দামী ভিডিও মোবাইল ফোন হাতে তুলে দেয়াসহ নানা কারণে আজকের অধিকাংশ কিশোররা অভিভাবকদের নিয়ন্ত্রণের দরজা পার হয়ে গেছে। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষকসহ সচেতন অনেকের মন্তব্য আইন প্রয়োগের পাশাপাশি অভিভাবক মহল কঠোর অবস্থানের সাথে সাথে সচেতন না হলে ওই সকল বিপদগামী কিশোররা ভবিষ্যতে বড় ধরনের অপরাধ কর্মকান্ডে জড়াতে পারে।

নূরুল হক
মণিরামপুর, যশোর।
মোবাইলঃ ০১৭২১৩৯০২০৮
তারিখ-২২/০৩/২০২১ইং