রাকিবুল হাসান, মনপুরা প্রতিনিধি: ভোলার মনপুরা উপকূলের মেঘনায় ভরা মৌসুমে জেলেদের জালে মিলছে না রুপালি ইলিশ। যেন নিখোঁজ রয়েছে ইলিশ। সেই নিখোঁজ রুপালি ইলিশের খোঁজে জেলেরা ঘন্টার পর ঘন্টা মেঘনায় জাল পেতে রাখলেও মিলছে না কাখিত সেই ইলিশ।এতে করে প্রতিনিয়ত ঋনের বােঝা বাড়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে জেলেরা।
তবে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আশাবাদ ব্যাক্ত করেন বৃষ্টি বাড়লেই মেঘনায় দেখা মিলবে কাখিত ইলিশের।
মেঘনার ইলিশ জেলে বশির মাঝি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে সাড়ে ৪ হাজার টাকার বাজার-সদাই করে ৭ জেলেকে সাথে নিয়ে মেঘনায় ইলিশ শিকারে যায়। টানা ৬ ঘন্টা জাল পেতে রাখেন মেঘনায়। তারপর জাল টানা শুরু করে। জাল টানা শেষে দেখে মিলে ৪ ইলিশের।
তিনি জানান, শুক্রবার সকালে ঘাটে এসে সেই ৪শত-৫শত গ্রামের ৪ টি ইলিশ আড়তদারের কাছে বিক্রি করেন ১২ শত টাকায়। এতে করে একদিন মেঘনায় মাছ শিকারে যাওয়া লােকসান হয় তিন হাজার দুইশত টাকা। সেই লােকসানের টাকা ও সংসার চালাতে ফের আড়তদার থেকে ঋণ নিবেন তিনি। এভাবে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ঋণের বােঝা।
এদিকে জনতা মৎস্য ঘাটের বেশ কয়েকটি আড়তের জেলে আবু বক্কর, রফিক,জিঠু, কালাম, হারুন, জাকির মাঝি জানান, ইলিশের আশায় প্রতিনিয়ত মেঘনায় যাই। কিন্তু প্রত্যেক দিনই একই অবস্থা। কােনদিন ৪ টি আবার কােনদিন ৬টি ইলিশের বেশি পাওয়া যায় না। এতে করে তৈল খরচ ও খাবারে যে টাকা যায় ইলিশ বিক্রি করে সেই টাকা ও উঠে না। এভাবে ইলিশ ধরা পড়লে দেনার দায়ে দেশ ছেড়ে পালাতে হবে।
জনতা ঘাটের আড়তদার অলিউল্লাহ কাজল,হাজিরহাট মৎস্য ঘাটের আড়তদার মতিন মাতাবর, দাসেরহাট ঘাটের গিয়াস উদ্দিন আযম, পঁচা কােড়ালিয়া ঘাটের আড়তদার বাবু মোহরলাল চক্রবর্তী, তালতলা ঘাটের ছাত্তার জানান, ভরা মৗেসুমে মেঘনায় ইলিশের দেখা নেই। এতে করে প্রতিনিয়ত জেলেদের মাছ শিকারের জন্য টাকা দিতে হয়। আর সেই টাকা তারা ঢাকার আড়তদারদের কাছ থেকে নেওয়া। এতে প্রতিনিয়ত তাদেরও ঋণের বােঝা বাড়ছে। ইলিশ না পড়লে তাদের কােটি কােটি টাকা লােকসান হবে।
সরেজমিন শুক্রবার দুপুর ১২ টায় হাজিরহাট মৎস্য ঘাট, দাসেরহাট ঘাট, জনতা ঘাট, পঁচা কােড়ালিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, মৎস্য আড়তদাররা মাছের গদি খুলে বসে রয়েছে। কি গদির বাক্সে ইলিশ নেই। কিছুক্ষন পর পর ৪-৫ টি করে জেলেরা মাঝারি সাইজের ইলিশ নিয় গদি আসছে। পরে সেই ইলিশ গদির বাক্সে ওঠানো হয়। পরে পাইকার ডেকে হাঁক-ডাক দিয়ে বিক্রি করা হছে। একই অবস্থা উপজেলা প্রত্যেক আড়তদারদের।
কিছু জেলে জানান,মেঘনা ইলিশের অকাল হলেও বঙ্গ সাগরে বেশ ইলিশ পাচ্ছে বোট জেলেরা।তাদের নৌকা ছোট হওয়া বঙ্গ সাগরে যেতে পারছে না।
এই ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ভিক্টর বাইন জানান, মেঘনায় ডুবো চরের কারণে নদীর নাব্যতা কম থাকায় ইলিশের দেখা মিলছে না। তবে বৃষ্টি পড়লে মেঘনায় কাখিত ইলিশের দেখা মিলবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।