সাতক্ষীরায় প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্যের প্রাণি দুম্বার খামার করেছেন মাছের ঘের ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম খোকা। গরু-ছাগলের মতো করে লালন-পালন করা যায় এবং বেশি লাভবান হওয়ার আশায় সাত মাস আগে শুরু করেন দুম্বা পালন। আর এ দুম্বা খামার দেখার জন্য প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় করছেন।
আব্দুস সালাম খোকা সাতক্ষীরা শহরের লষ্করপাড়া এলাকার মৃত কাজী আব্দুল মোকিতের ছেলে। শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে আগড়দাড়ি ইউনিয়নের চুপড়িয়া গ্রামে তিনি খামারটি গড়ে তুলেছেন। ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম খোকা জানান, ২০১০ সাল থেকে আমার ৫০ বিঘা মাছের ঘের রয়েছে। পাশাপাশি গরুর খামারও রয়েছে। ছেলেকে জানালাম, আমি কিছু গরু বাড়াব।
ছেলে জানাল, গরু থেকে দুম্বা কিনে পালন করলে বেশি লাভবান হওয়া যাবে। তাছাড়া সাতক্ষীরায় এটা নতুন হওয়ায় অনেকেই আগ্রহ দেখাবে। প্রথম দিকে যদি ভালোভাবে খামারটি করতে পারি তবে অনেক লাভ আসবে। ছেলের পরামর্শে ৭ মাস আগে পাবনার ঈশ্বরদী থেকে ৪ লাখ টাকায় দুটি দুম্বা কিনে আনি। তার থেকে একটি বাচ্চা হয়েছে। সেটির দাম এখন দেড় লাখ টাকা।
তিনি বলেন, দেড় মাস আগে ঢাকার জয়দেবপুর এলাকা থেকে তিন লাখ টাকা দিয়ে আরও দুটি দুম্বা কিনে এনেছি। বর্তমানে খামারে পাঁচটি দুম্বা রয়েছে। খামারটি দেখভাল করার জন্য একজন শ্রমিকও রাখা হয়েছে। প্রতিটি দুম্বার পেছনে দৈনিক ৬০ টাকা খরচ হয়। ছাগল-ভেড়া সেসব খাবার খায় দুম্বাও সেগুলো খাচ্ছে। বাড়তি বা ভিন্ন ধরনের খাবার দেওয়ার প্রয়োজন হয় না।
ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম খোকা জানান, একটি মেয়ে দুম্বা ছয় মাস পর পর বাচ্ছা দেয়। বছরে একটি মেয়ে দুম্বা থেকে দুইটা বাচ্চা পাওয়া যাবে। ৫-৬ মাস বয়সী একটি বাচ্চার দাম দেড় লাখ টাকা। খামারটি বড় পরিসরে করার ইচ্ছে আছে। সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি। খামারটি দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন শ্রমিক আশরাফ আলী।
তিনি বলেন, দিনে দুইবার খাবার দেওয়া হয়। ঘাস, আমপাতা, কলাপাতা, ভুসি এসব খাবার খায়। ছাগলের মতো লালন-পালন করতে হয় এদের। দুম্বা খুব তেজি প্রাণি। এদের শক্তিও অনেক। ক্ষেপে গেলে তেড়ে আসে। তখন সামলানো যায় না। আগড়দাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আশিকুর রহমান বলেন, দুম্বা আমি আগে কখনো দেখিনি। সাতক্ষীরায় প্রথম দেখছি। সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমিও একটি খামার গড়ে তুলব। সে কারণে খামারি চাচার কাছ থেকে পরামর্শও নিয়েছি। তবে দুম্বার দাম অনেক।
সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এবিএম আব্দুর রউফ জানান, দুম্বা সৌদি আরবের প্রাণি। বিশেষ করে কোরবানির সময় দুম্বার চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। বাংলাদেশেও এটা সম্ভাবনাময় প্রাণি। উপকূলীয় সাতক্ষীরার আবহাওয়া পশুটি পালনের উপযোগী। এতে একদিকে যেমন আমিষের চাহিদা পূরণ হবে তেমনি আর্থিকভাবেও লাভবান হবে খামারিরা।
তিনি বলেন, আর্থিকভাবে সচ্ছল খামারিরা দুম্বা পালন করে লাভবান হতে পারেন। সাতক্ষীরা অঞ্চলে পশুটির প্রচলন এখনো সেভাবে শুরু হয়নি। আব্দুস সালাম খোকা নামে একজন খামারি জেলায় প্রথম দুম্বা পালন শুরু করেছেন। আমরা তাকে পরামর্শ সহযোগিতাসহ ওষুধপত্র দিয়ে সহযোগিতা করব।
তথ্যসুত্র: ইন্টারনেট।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।