ভয়াবহ পরিস্থিতি চলছে পাকিস্তানে। সাম্প্রতিক অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় তলিয়ে গেছে দেশটির এক-তৃতীয়াংশ। শতাধিক শিশুসহ এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৩শ।
ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষ। বন্যা আক্রান্ত ১১৮টি জেলার মধ্যে ৮০টিকেই দুর্যোগপ্রবণ ঘোষণা করা হয়েছে। ভেসে গেছে ১৮ হাজার স্কুল।
ধ্বংস হয়েছে লাখ লাখ বাড়িঘর, রাস্তাঘাটসহ পয়ঃনিষ্কাশন ও জরুরি পরিষেবা অবকাঠামো। যে কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম। দুর্ভোগের শিকার বেঁচে যাওয়াদের বাঁচার আকুতি অবতারণা করেছে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের। সরকারের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়ে যাবে ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ভয়াল এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ও মোকাবিলায় পাকিস্তানের মানুষের জন্য ত্রাণ কিংবা সহানুভূতি পাঠাতে ব্যস্ত বহির্বিশ্ব। কিন্তু খোদ পাকিস্তানেই এর উলটো চিত্র। দেশটিতে এখন বন্যা নিয়ে চলছে রাজনৈতিক কূটচাল। ত্রাণ পাঠাতে বারণ করছে বিরোধীদলীয় নেতারা। বন্যার্তদের সাহায্যে ঝাঁপিয়ে পড়ার চেয়ে পারস্পরিক বিরোধিতায় ব্যস্ত সরকার এবং বিরোধী দল। রাষ্ট্রের এ বিশাল জাতীয় দুর্যোগে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পরিবর্তে তারা অবস্থান নিয়েছে দুই মেরুতে। ডন।
পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় অভূতপূর্ব ধ্বংসযজ্ঞের পর রাজনীতির মাঠ সরগরম হতে শুরু করেছে। দল-মত নির্বিশেষে সরকার-বিরোধী দল কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর পরিবর্তে জড়িয়ে পড়ছে অপরাজনীতিতে। আইএমএফের ঋণশর্তের একটি ছিল প্রাদেশিক সরকারের বাজেট উদ্বৃত্ত দেখানো।
কিন্তু পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পরিচালিত খাইবার পাখতুনখোয়ার অর্থমন্ত্রী তৈমুর ঘাগরা ফেডারেল সরকারকে লেখা চিঠিতে জানিয়ে দিয়েছেন- তারা উদ্বৃত্ত দেখাতে পারবেন না। তাদের উদ্দেশ্য ছিল আইএমএফ যেন এ অপারগতার জন্য নির্ধারিত বেলআউট বহাল রাখে। আর তখনই আরও বিপাকে পড়বে শাহবাজ শরিফের সরকার। যদিও পিটিআইয়ের উদ্দেশ্য সফল হচ্ছে না।
এখানে এক ভাষণে ইমরান খান বলেন, বন্যাদুর্গতদের সহায়তা ও পুনর্বাসনের জন্য সবকিছু করবে তার দল। বন্যার এ দুর্যোগেও সভা-সমাবেশ করার সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে বলেন, ‘বন্যা, তাপপ্রবাহ এমনকি যুদ্ধের সময়েও সমাবেশ চালিয়ে যাব।’
গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শরিফের সভাপতিত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এবং পরিষেবা প্রধানদের উপস্থিতিতে পরিস্থিতির পর্যালোচনা করা হয় এবং ব্যাপক ত্রাণ ও পুনর্বাসন পরিকল্পনা তৈরি করা হয়।
এ বৈঠক বয়কট করেছিলেন খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী ও পাঞ্জাবের পারভেজ এলাহী। এ দুই প্রদেশের প্রধান সচিবরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। কারণ ইমরান খান তার রাজনৈতিক কর্তাদের কোনো সরকারি বৈঠক থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।