ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ ঝালকাঠির নলছিটি পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী (১১)কে বিদ্যালয় কক্ষে আটকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে দপ্তরি কাম নৈশপ্রহরী আলমগীর হোসেন খোকন সিকদারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমিরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিদ্যালয়ের দপ্তরী আলমগীর হোসেন খোকনকে আসামী করে শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে নলছিটি থানায় মামলা দায়ের করেছে। নির্যাতিতা ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি রুজু করেছে।

আজ শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) যৌনহয়রানির শিকার শিশুছাত্রীকে ঝালকাঠি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক ইমরানুর রহমান ১৬৪ধারায় তার জবাববন্দি গ্রহন করেছে বলে আদালত সূত্রে জানাগেছে। এদিকে আলমগীর-জাহাঙ্গির দুই ভাইয়ের অপকর্মের প্রতিবাদে ও অপসারনের দাবীতে এলাকাবাসী আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর সোমবার মানববন্ধন, বিক্ষোভ-সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচী পালনের ঘোষনা দিয়েছে।

মামলার বিবরনে জানাগেছে, আমিরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী ও মজিদ সিকদারের পুত্র আলমগীর হোসেন খোকন শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টায় প্রাইভেট পড়ানোর কথা বলে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তালায় নিয়ে আসে। সেখানে আলমগীর এক ছাত্রীকে একটি কক্ষে ডুকিয়ে বিবস্ত্র করে ধর্ষনের চেষ্টা চালালে সে ডাক-চিৎকার করে। টেরপেয়ে এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ের মাঠে ফুটবল খেলায়রত বেশ কিছু লোকজন ছুটে এসে দপ্তরি আলমগীরকে অপ্রস্তুত অবস্থায় আটক করে।

প্রত্যক্ষদর্শী স্কুল মাঠে ফুটবল খেলতে আসা নাইম, মিঠু, সাদ্দাম, রুবেল জানায়, স্কুল ছাত্রীর চিৎকার শুনে তারা ভবনে ছূটে গিয়ে দপ্তরি আলমগীরকে একটি কক্ষের দরজা আটকে ভিতরে অবস্থানরত দেখতে পায়। ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলে বিবস্ত অবস্থায় আলমগীরকে দেখে তারা আটক করে। খবর পেয়ে প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গির সিকদার এসে বিচারের আশ্বাস দিয়ে কৌশলে তার ছোটভাই আলমগীরকে সটকে পরতে সহায়তা করে। এতে উত্তেজিত এলাকাবাসী আলমগীর ও তার বড়ভাই জাহাঙ্গিরের বিচারের দাবিতে স্কুল ছাত্রীদের পরিবার,স্বজন ও স্থানীয় সচেতন লোকজন বরিশাল-ঝালকাঠি আঞ্চলিক মহাসড়ক একঘণ্টা অবরোধ করে।

এদিকে শনিবার সকালে যৌনহয়রানির শিকার কিশোরীর আদালতে ১৬৪ধারায় তার জবাববন্দি গ্রহন কালে তার পিতা সাংবাদিকদের জানান, ল্যম্পট দপ্তরী আলমগীর ও তার বড়ভাই জাহাঙ্গিরের লোকজন ঘটনা চেপে যাওয়ার জন্য আমাকে ও আমার পরিবারকে নানারকম হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। তিনি উর্ধতন পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে তার পরিবারের নিরাপত্তা ও বহু অপকর্মের হোতা আলমগীর ও তার সহযোগীর জাহাঙ্গিরের কঠোর বিচার দাবী করেন।

এ ব্যাপারে নলছিটি থানার উপপরিদর্শক শহিদুল আলম জানান, এ নলছিটি থানায় নারী ও শিশুনির্যাতন দমন আইনে মামলা (নং-১৭) রেকর্ড করার পর শনিবার ভিকটিম কে ডাক্তারী পরীক্ষার পর ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে জবানবন্দি রেকর্ড করানো হয়েছে। আসামী দপ্তরি আলমগীর পলাতক, তাকে গ্রেপ্তারে জোড় চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানান।

প্রসঙ্গত, স্থানীয় এলাকাবাসী দপ্তরী আলমগীরের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বেও একাধিক শিশুকে যৌননির্যাতনের অভিযোগ করেছে। এরমধ্যে ৩টি শিশু নির্যাতনের ঘটনা ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে শালিশ মিমাংসা করে ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ করেছে। প্রতিটি ঘটনাতেই তার বড়ভাই একই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গির সিকদার তার সহযোগী হিসাবে ভূমিকা পালন করেছে।