রাকিবুল হাসান, মনপুরা প্রতিনিধি: সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজার আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা। ঢাখে কাঠি প্রায় পড়ে গেছে। মা’র আগমন ঘটছে। শেষ মুহূর্তে চলছে দেবী সাজাতে শিল্পীদের রঙ তুলির কারুকাজ।এদিকে,মণ্ডপ তৈরির কাজেও এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।

এবছর মনপুরা উপজেলা ১০ টি মণ্ডপে শারদীয় দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিবছর বিভিন্ন বাহনে সপরিবারে শ্বশুরবাড়ি কৈলাস থেকে কন্যারূপে দেবী মর্ত্যলোকে আসেন বাপের বাড়ি বেড়াতে। তাই দেবীকে বরণে আয়োজনের কমতি থাকে না এই সনাতন ধর্মালম্বীদের । এরই মধ্যে পাঁচ দিনব্যাপী পূজার সব প্রস্তুতি শেষের দিকে। আগামী ১ অক্টোবর মহাষষ্ঠী পূজা মধ্য দিয়ে শুরু হবে শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা।প্রতিমা তৈরী কাজ প্রায়ই শেষে দিকে।

প্রতিমা রংতুলিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। রবিবার(২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টায় উপজেলা দক্ষিন সাকুচিয়া শ্রী শ্রী আনন্দদায়নী মন্দিয়ে গিয়ে দেখা গেছে ,প্রতিমা রং তুলির কাজ শেষ । কারিকরগন প্রতিমা হস্থান্তর করে বিদায় নিচ্ছেন।মনপুরা প্রতিটি পূর্জা মন্দিরে প্রতিমার কাজ শেষ এর দিকে বলে জানান যায় ।

হিন্দু ধর্মালম্বীদেরধর্মীয় পুরোহিত বাবু লক্ষন চক্রবর্তী জানান, সনাতন বিশ্বাস ও বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে, অসুরকে দমন করার জন্য ও মানবের কল্যানের জন্য দেবী দূর্গা এই দারায় আগমন করবেন গজে(হাতি) চড়ে । মানবের কাছ থেকে আবার বিদায় নিবেন নৌকায় চড়ে। এরইমধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিতে কিছু দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের।

আবার পূজা উদযাপন পরিষদ থেকেও মন্দিরগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
“ধর্ম যার যার উৎসব সবার এ বিশ্বাসে সব মিলিয়ে এবারের পূজাতেও কোনো কমতি থাকবে না বলে জানান উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা ।”

হিন্দুসম্প্রদায়ে অনেকে জানান,গত তিন বছর তারা পূজা পালন করেছেন।তবে পূজার আনন্দ উপভোগ করতে পারেন নি করোনাভাইরাস এর কারণে। তবে এভাবে আবহাওয়া ভালো থাকলে আবার পূজা পূর্নতা ফিরে পাবো।

মনপুরা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনুপম চন্দ্র দাস জানান , ধর্মীয় এ উৎসবকে ঘিরে চলছে আমাদের প্রতিমা তৈরীর কাজ ও মণ্ডপ এর সাজ সাজ রব।বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্র থেকে পাঠানো ২৬ দফার নির্দেশনা সব মন্দির ও পূজা কমিটির কাছে
পাঠানো হচ্ছে। এ নির্দেশনা মেনেই সবাইকে পূজা উদযাপন করার অনুরোধ করা হয়েছে।

মনপুরা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নিল রতন দাস জানান,এরই মধ্যে সেচ্ছাসেবক নির্ধারণসহ মণ্ডপ ও মন্দিরের আঙিনার নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে।কারণ মনপুরায় বিদ্যুৎ না থাকায় অনেক মন্দির প্রাঙ্গণে এখনো সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা যায়নি।উপজেলা জুড়ে ১০টি মন্দিরে দুর্গাপূজার  আয়োজন করা হয়েছে। এই উপজেলায় শান্তিপূর্ন পরিবেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গোৎসব সম্পন্ন হবে বলে আশাকরি।

এইদিকে উপজেলা দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নে শ্রী শ্রী আনন্দদায়নী ও শ্রী শ্রী প্রেমদায়নী ২টি মণ্ডপে পালন করা হবে দুর্গা উৎসব। হাজিরহাট ইউনিয়নে তিন টি মণ্ডপে বাউলবাড়ি,সোনার চর,এআরপল্লি মন্দিরে পূজা উদযাপন হবে।১নং মনপুরা ইউনিয়নে ৩ টি মণ্ডপে দুলাল মেম্বার
বাড়ি,জ্ঞানদায়িনী হরি মন্দির ও বউ নিতাই সেবা শ্রম দূর্গা মন্দিরে  পূজা উদযাপন করা হবে।মনপুরা থেকে বিছিন্ন সদ্য ঘোষিত ৫নং ইউনিয়ন ২টি মণ্ডপে ভুবনেশ্বর বাড়ি মন্দির,হিন্দু কলনি মন্দির পূজা উদযাপন করা হবে।

এদিকে জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম পূজা উদযাপন কমিটির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানান তারা ।
মনপুরা থানা অফিসার ইনচার্জ সাইদ আহমেদ  জানান,পূজামণ্ডপে সিসি ক্যামেরার ব্যবহার নিশ্চিত করা ও নিরাপত্তা পরিকল্পনার পাশাপাশি পূজা উদযাপন কমিটিসহ মনোনয়নকৃত ভলান্টিয়ার থাকবে।প্রতিটি মণ্ডপে পুলিশের একটি টিম থাকবে।আনসার বাহিনীর সদস্য ও সাদা পোশাকে পুলিশ
টহলে থাকবে।পাশাপাশি অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে যেকোনো ধরনের তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা
করার আহ্বান জানান তিনি।