বাজারে বেশির ভাগ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। প্রতিদিনই জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে আর কয়েকদিন পরই শুরু হচ্ছে রমজান। এর আগেই বাজারে বেশির ভাগ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। প্রতিদিনই জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। তেল, মুরগি, পিঁয়াজ আর সবজিসহ প্রায় ধরনের ফলের দাম বেড়েছে। বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পটল, বরবটি, বেগুন, ঢেঁড়স। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা কেজি। ঢেঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। এ সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।
 
তবে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা। দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে লাউ। মাঝারি আকারের একটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৫০ টাকা।
 
এর সঙ্গে দাম বেড়েছে ফুলকপি, বাঁধাকপি ও শিমের। ২০-৩০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম বেড়ে ৩০-৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ৩০-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শিমের দাম বেড়ে ৪০-৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। নতুন করে দাম না বাড়লেও ধুন্দল, চিচিঙ্গা কিনতেও ভোক্তাদের ৫০ টাকার ওপরে গুনতে হচ্ছে। বাজার ও মানভেদে ধুন্দলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে চিচিঙ্গা। কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৬০ টাকা। শশা আগের সপ্তাহের মতো ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এখন ৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে পাকা টমেটো ও পেঁপে। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে পাকা টমেটোর দাম কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ১৫-২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকা টমেটোর দাম বেড়ে ২০-৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পেঁপের কেজি আগের মতো ৩০-৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গাঁজরের কেজিও আগের সপ্তাহের মতো ২০-৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী আলামিন বলেন, শীত চলে যাওয়ায় সবজির দাম বাড়তে শুরু করেছে। সামনে সবজির দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এখন বেশি দামে বিক্রি হাওয়া পটল, ঢেঁড়সের দাম সামনে কমে যাবে।
 
 
কম দামে সবজি খাওয়ার দিন শেষ। এখন টমেটোর কেজি ৩০ টাকা পাওয়া যাচ্ছে। কয়েকদিনের মধ্যে এই দাম বেড়ে যাবে বলে আমাদের ধারণা।
 
অন্যদিকে সাগর কলার ডজন ১৩০-১৪০ টাকা, চম্পা কলা ৬০-৭০ টাকা, বাংলা কলা ৭৫ টাকা, বেল আকারভেদে প্রতিটি ৬০-১০০, পেয়ারা কেজি ১০০, আনারস প্রতিটি ৩০-৬০, তরমুজের কেজি ৪০ টাকা এবং সবুজ আপেল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দামে।
 
গত সপ্তাহের চেয়ে সব মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ২০-১০০ টাকা। হাতিরপুলে ব্রয়লার মুরগি ১৬০ থেকে বেড়ে ১৮০ টাকা, সোনালী জাতের মুরগি কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে ৩৮০ টাকা, দেশি জাতের মুরগির কেজি ৪৫০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২২০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে। সব ধরনের মুরগির সাপ্লাই চাহিদার তুলনায় কম। এ কারণেই মুরগির দাম বেড়েছে বলে জানান, হোসেন চিকেন হাউজের মালিক আবুল হোসেন।
 
এদিকে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা। রোজার কারণে আলু, বেগুন আর পিঁয়াজের দাম বাড়বে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে আলু ২ টাকা বেড়ে ২০ টাকা, রসুন (বড়) ১০০-১২০ টাকা, মশুরি ডাল দেশিটা বিক্রি হচ্ছে কেজি ১০০-১০৫ টাকা দামে। ছোলা বুট মান ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৭০-৯০ টাকা কেজি দামে। ফার্মের মুরগির ডিম ডজন বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকা। দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে দেশি আদা।
 
 
পেঁয়াজের দামের বিষয়ে মালিবাগ হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর বলেন, পেঁয়াজের দাম কখন বাড়ে, আবার কখন কমে বলা মুশকিল। তারপরও বাজারের চিত্র দেখে মনে হচ্ছে রোজার আগে পেঁয়াজের দাম বাড়ার সম্ভাবনা কম।
 
গতকাল শুক্রবার নিউমার্কেট পাইকারি চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৬৩-৬৫ টাকায়। মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬২ টাকায়, আটাশ চাল দাম ৪৯-৫০ টাকা। মোটা চালও কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকায়।
 
নিউমার্কেট মাছ বাজারে দেখা যায়, রুই বিক্রি হচ্ছে কেজি ৩০০-৩৫০ টাকা, বড় কাতল ৩৫০-৪০০ টাকা, চিংড়ি বড় ১০০০ টাকা, মাঝারি ৬০০ টাকা। তেলাপিয়া ১৩-১৪- টাকা, বাতাসি মাছ প্রতি কেজি ৩০০ টাকা, বাইম মাছ ৫০০-৬০০ টাকা, শিং (দেশি) ৮০০ টাকা, বোয়াল ৪০০ টাকা, টেংরা ৪০০-৪৫০ টাকা এবং শোল মাছ ৪৫০-৫০০ টাকা করে বিক্রি করছে। এছাড়া মাঝারি আকারের রূপচাঁদা মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭৫০-৮০০ টাকায়।
 
ভোজ্য তেলের দাম গত সপ্তাহের মতোই রয়েছে। বাজারে সরকারিভাবে দাম নির্ধারণ করে দেওয়া মূল্যেই কোম্পানি ভেদে প্রতি লিটার ১৩৫-১৪০ টাকা, ২ লিটার ২৬৮-২৭৫ এবং ৫ লিটার সয়াবিন তেল ৬৩০-৬৮৫ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
 
লেবুর দাম প্রতিদিনই অবিশ্বাস্যভাবে বাড়ছে। রমজানের সময় শরবত পান করেন সবাই। এবারের পুরো রমজানজুড়েই থাকবে গরম। আর এই সময় লেবুর চাহিদা বেশি থাকবে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম, সে কারণে লেবুর দাম বাড়তি বলে জানান নিউমার্কেট বনলতা বাজারের মীর স্টোরের সবজি বিক্রেতা হারুন মিয়া।
 
তিনি বলেন, মাঝারি আকারের এক হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। বড় লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা।
 
এদিকে, গরুর মাংসের কেজি ৫৮০-৬০০ টাকা। খাশির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮৮০-৯০০ টাকায়।