মাগুরা প্রতিনিধিঃ মাগুরা জেলা শিক্ষা অফিসার জনাব মোঃ আলমগীর কবির ধারের টাকা ফেরত নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বলে জানা গেছে।
শুক্রবার একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে একটি ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে ঘুষ ছাড়া নিয়োগের ফাইল ছাড়েন না জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আলমগীর কবির।ফুটেজে যে শিক্ষক শিক্ষা অফিসারকে টাকা দিচ্ছেন সেই শিক্ষক বললেন ধার নেওয়া টাকা ফেরত দিয়েছেন তিনি। অথচ সেই ফুটেজ দেখিয়ে বলা হচ্ছে ঘুষের টাকা। এই ভিডিও চিত্র এবং খবর দেখে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে টাকাটা কি ঘুষের নাকি অন্য কিছু? এমন প্রশ্ন মানুষের মনে জেগেছে এ করণে, ভিডিও তে দেখা যাচ্ছে যে লোক জেলা শিক্ষা অফিসারকে টাকা দিচ্ছেন তিনি অনেক গুলো টাকা থেকে সামান্য কিছু টাকা সেখান থেকে গুনে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে দিলেন আর জেলা শিক্ষা অফিসার টাকা গুনে নিলেন।
জনমনে প্রশ্ন হলো ঘুষের টাকা কি গুনে দেয়,আর যিনি নেন তিনি কি গুণে নেন? আবার তার রুমে যে সিসি ক্যামেরা রয়েছে তার সামনে তিনি ঘুষের টাকা নিবেন? তাও আবার গুণে গুণে? ঘুষের টাকার লেনদেন কি সরাসরি অনেক টাকার ভেতর থেকে গুণে দেয়? নাকি সেটা আগে থেকে নির্ধারিত আলাদা করে রাখেন যিনি দিবেন তিনি? এমন প্রশ্নই মানুষের মনের মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে, তাহলে টাকাটা কিসের? ঘুষের? নাকি এর পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তর খুজতে আমরা কথা বলেছিলাম ভিডিওতে যিনি জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে টাকা দিচ্ছেন তার সাথে।
তিনি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার শ্রীপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার অধিকারী। আলাপ কালে বিভিন্ন ভাবে প্রশ্ন করে জানার চেষ্টা করলাম আসলে তিনি কিসের টাকা দিলেন? বললেন আমি আমার ব্যক্তিগত কজের জন্য ৪/৫ মাস যশোর যায়, সেখানে যাওয়ার পর আমার স্ত্রী আমাকে ফোন করেন চুইঝাল ও ইলিশ মাছ নিয়ে আসার জন্য।কিন্তু আমার কাছে তেমন কোন টাকা না থাকায় আমি স্যারের শরণাপন্ন হই। আমার জানামতে স্যার যশোরের বাসাবাড়িতে থাকে। এবং আমাদের মাগুরায় চাকুরী করে সেই কারণে তিনি পরিচিত হওয়ায় স্যারের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে ৫০০০ টাকা ধার করি। মাগুরা সব সময় যাওয়া পড়ে না বলেই সে টাকাটা স্যারকে দিতে দেরী হয়। মাস দুই আগে মাগুরা গিয়ে স্যারকে তাঁর অফিসে গিয়ে টাকাটা ফেরত দিয়ে আসি। টাকা ফেরত দেয়ার সময় সেখানে অনেক লোকজনও উপস্থিত ছিল। নিয়োগ সংক্রান্ত কোন বিষয়ে অর্থের আদান-প্রদান আমার সাথে স্যারের হয়নি।
এ বিষয়ে মাগুরার বিভিন্ন স্কুলের (যেখানে সম্প্রতি বিভিন্ন পদে নিয়োগ হয়েছে) কয়েকজন প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানাগেছে, বর্তমানে নিয়োগের কাগজপত্র অনলাইনে জমা হয়। জেলা অফিসে যাবার কোন প্রয়োজন পড়ে না। তাদের ফাইল গুলো ছাড়তে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে কোন টাকা দিতে হয়নি বলেও তারা জানান।
তারা আরো জানান, আর যারা নিয়োগ পান এমপিওর জন্য কাগজপত্র তারা নিজেরাই বিভিন্ন দপ্তরে পাঠান। এখানে প্রতিষ্ঠান প্রধান শুধু তাদের সহযোগীতা করেন। তাছাড়া ঐ খবরে যাদের বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে তারা কেউ ই বলেনি তারা জেলা শিক্ষা অফিসারকে ঘুষ দিয়েছন বা কেউ ঘুষ দিয়েছেন তারা সেটা জানেন।
এ বিষয়ে মাগুরা জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আলমগীর কবির বলেন, ঐ শিক্ষক আমার কাছ থেকে অনেক দিন আগে ৫০০০টাকা ধার নিয়েছিল,এবং বেশ কয়েক মাস আগে এসে সে টাকা টা আমাকে দিয়ে যায়। আমার অফিসে সিসি ক্যামেরা রয়েছে, আমি জেনে বুঝে ক্যামেরার সামনে এভাবে ঘুষের টাকা নিবো এটা কি করে হতে পারে। এটা আমার বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র,আমি মাগুরার শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির জন্য কঠোর পরিশ্রম করে সেটাকে উন্নতির দিকে নিয়ে যাচ্ছি। কিছু মানুষের এটা ভাল লাগছে না,তাই আমার বিরুদ্ধে এই অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।