রাকিবুল হাসান, মনপুরা প্রতিনিধি : ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে মনপুরায় মেঘনানদীতে আবারও পুরোদমে ইলিশ ধরা শুরু হয়েছে। শুক্রবার(২৮অক্টোবর) মধ্যরাত থেকেই ইলিশ আহরণে নেমে পড়েন জেলেরা।
দীর্ঘ অবসরের পর নতুন ইলিশে সরগরম হয়ে উঠেছে মাছের ঘাটগুলো, ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে জেলে ও আড়ৎদারদের। নতুন ইলিশের খবরে খুশি ক্রেতা-বিক্রেতারাও।
জেলেদের জালেও আশানুরূপ ইলিশ ধরা পড়ছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তারা। এদিকে নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে বাস্তবায়নের পাশাপাশি মা ইলিশ অবাধে ডিম ছাড়তে পারায় এবার রেকর্ডসংখ্যক উৎপাদনের আশা করছে মৎস্য বিভাগ।
মেঘনায় জাল ফেলতেই ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। তবে মাছ আকারে অনেক ছোট বলে জানিয়েছেন তালতলা মাছঘাট ব্যবসায়ী মোঃসাত্তার হোসেন।
ইলিশের নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।এ সময়ের মধ্যে জেলেদের মাছ ধরা থেকে বিরত রাখতে মৎস বিভাগ নিয়মিত অভিযান চালিয়েছে।এখন আশানুরূপ ইলিশ পেলে ২২ দিনের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন জেলে ও মাছ ব্যবসায়ীরা।
শনিবার (২৯অক্টোবর) সকাল থেকে উপজেলা বড় মাছ ঘাট গুলো সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে ব্যবসায়ী ও জেলেদের ব্যস্ততা। ভোররাত থেকে ঘাটে আহরিত ইলিশ নিয়ে আসতে শুরু করেছেন জেলেরা। ঘাটে অন্যান্য সময়ের চেয়ে ক্রেতার ভিড়ও চোখে পড়ার মতো।
জনতা ঘাটের জেলে রফিক মাঝির সাথে সময়ের আলো প্রতিবেদক এর কথা হলে তিনি জানান, দীর্ঘ ২২দিন অলস সময় কাটিয়েছি। নিষেধাজ্ঞা শেষে মেঘনায় রূপালি ইলিশ ধরা পড়ছে। এখন ব্যস্ত সময়। জালে মাছ ধরা পড়ায় খুশি লাগছে। আজকে যে মাছ পাওয়া গেছে, সেটা গত বছরের তুলনায় আকারে অনেক ছোট।তাই আমরা সঠিক দাও পাই না।নদী থেকে অনেক ইলিশ নিয়ে আসি।তবে ঘাটে দাম কম থাকায় আমাদের খরচ পুষিয়ে উঠতে কষ্ট হয়।
মাঝেরঘাট জেলে বশির বলেন,দীর্ঘ ২২ দিন নিষেধাজ্ঞা ছিলো।ঋণের চাপে দিশেহারা ছিলাম।এখন এই ইলিশ যদি নিয়মিত পেতে থাকি।ইনশাআল্লাহ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবো।
দক্ষিণ সাকুচিয়া তালতলা ঘাটের জেলে রফিক মিঝি বলেন, ‘রাত থেকেই নদীতে ইলিশ ধরা হয়েছে। প্রথম দিনের সকালে আশানুরূপ মাছ পাইনি। তবে যেসব মাছ ধরা পড়েছে, অধিকাংশ ইলিশের পেটে ডিম রয়েছে।
এখন যা ইলিশ পেয়েছি তা ঘাটে বিক্রয় করে আবার নদীতে ফিরে যাবো।তবে আজ আমরা যে ইলিশ পেয়েছি সেই ইলিশের কোন দাম নির্ধারণ করেনি আড়ৎদার। তাই আমরা ইলিশের দাম নিও চিন্তিত।
তালতলা ঘাটের মাছ ব্যবসায়ী রবিউল আলম সুমন জানান,দীর্ঘ ২২দিন ইলিশ এর বাজার বন্ধ ছিলো।তাই মাছে বাজার আমাদের জানা নাই।আমরা শুধু জেলেদের থেকে মাছ সংগ্রহ করছি। ঢাকা চালান শেষে জেলেদের থেকে যে মাছ নিয়েছি তার দাম নির্ধারণ করবো।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ভিক্টর বাইন বলেন,বঙ্গ সাগর থেকে মা ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্য মেঘনায় আসেন।এবং ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে মেঘনার পানি বৃদ্ধি থাকায় জেলের জালে ধরা পরছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।