অতনু চৌধুরী (রাজু),বাগেরহাট: বাগেরহাটের মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলে ড্রেজিং প্রকল্পের বালু ডাম্পিং ইস্যুতে চীনা কোম্পানি-বন্দর কর্তৃপক্ষ ও গ্রামবাসি মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। কৃষি জমি ও মৎস খামারের হ্মতিপূরন না দিয়ে জোরপূর্বক ডাইক নির্মান ও বালু ডাম্পিং প্রচেষ্টার অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন – ফসলি জমি ও জলাভ, মির শ্রেনী বিন্যাশে হুমকির মুখে পড়বে জীববৈচিত্র্য স্থানীয়দের জীবন- জীবিকা। আর চলতি ঝড়-জলোচ্ছাসের মৌসুমে উড়ো বালুর আগ্রাসরে বসবাসের অনুপোযোগী পরিবেশের শংকায় চরম হতাশার মধ্যে পড়েছেন শত-শত গ্রামবাসী। তাদের দাবী-বন্দর কর্তৃপক্ষ ও চীনা কোম্পানি পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়াই নাম মাত্র হ্মতিপূরনের আশ্বাস দিয়ে ফসলি জমি ও মৎস্য ঘেরে বালু ডাম্পিং প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। এ অবস্থায় জমির মালিক – সাধারণ মানুষ বিহ্মুদ্ধ হয়ে উঠেছেন। সোমাবার (০৫ এপ্রিল) সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১২ টে নাগাদ নারী – পুরুষ সহ শত-শত গ্রামবাসী তাদের ফসলি জমি ও চিংড়ি ঘেরে রহ্মার দাবীতে সমবেত হন পশুর নদীর তীরবর্তী চিলা ইউনিয়নের সুন্দরতলা এলাকায়। এ সময় মানববন্ধন সমাবেশ সহ সংবাদ সম্মেলনে গ্রামবাসীর পহ্মে মোঃ আলম গাজী লিখিত বক্তব্যে নানা অভিযোগ উপস্থাপন করেন।

তিনি বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ড্রেজিং কাজে নিয়োজিত চীনা কোম্পানি জমির মালিকদের কিছু না জানিয়ে কৃষি জমি – মৎস্য ঘের শুরু করেছে। পরে তারা এ বিষয় আপত্তি জানালে -১০ বছরের হ্মতিপূরন দেয়ার আশ্বাস দিয়ে আসছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তুু কৃষি – মৎস্য ঘেরের জমিতে বালু ডাম্পিং করা হলে জীবন – জীবিকার উৎস বন্ধ হবে। গ্রামবাসীরা জানান – যে জমিতে তারা ধান উৎপাদন করেন সেই একই জমিতে মৎস্য চাষ করে সংসার চালাতে হয় তাই ধান উৎপাদন ও মাছের চাষ বন্ধ হলে বেকারত্ব সহ পথে বসতে অসংখ্য পরিবার। এ ছাড়া বালু ভরাটের কারনে আগামী ৫০ বছরের জন্য চরম দূরাবস্থা এবং আর্থিক হ্মতির সম্মুখিন হতে হবে স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাউ ফসলি – মৎস্য চাষের জমিতে নদী ড্রেজিংয়ের বালু ডাম্পিংয়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন জমির মালিক ও গ্রামবাসী। আর এ জন্য কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দিয়েছেন তারা। এ অবস্থায় বন্দর কর্তৃপক্ষ – চীনা ড্রেজিং কোম্পানি এবং মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে বাপা’র বাগেরহাট জেলা সমন্বয়কারী নুর আলম শেখ বলেন, সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের মতামত নিয়ে প্রকল্প গ্রহন করা উচিৎ। আলোচনা ছাড়াই প্রকল্প গ্রহন ঠিক হয়নি। জমির মালিকদের যে ১০ বছরের হ্মতিপূরনেরর আশ্বাস দেয়া হয়েছে সে হ্মেত্রে জটিলতা রয়েছে। এ ছাড়া দীর্ঘ সময়ের জন্য ফসল সহ পরিবেশগত হ্মতির মুখে পড়বেন ফসলি জমির মালিক – সাধারণ মানুষ। এ বিষয় মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার জানান, ড্রেজিং প্রকল্পের বালু ডাম্পিং করার জন্য ১০ ফুট উচ্চতার ডাইক নির্মান ও ৮ ফুট পর্যন্ত বালু ভরাট করার কথা থাকলেও অতিরিক্ত উচ্চতায় করা হচ্ছে। এ ছাড়া এলাকাবাসীর উপস্থাপতি নানা অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তাকে সঙ্গে সরেজমিন পরিদর্শনে অনেক অসংগতি পাওয়া যায়। এ সকল বিষয় জেলা প্রশাসককে অবগত করা হয়েছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, ৭’শ ৯৪ কোটির টাকা ব্যয়ে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের ইনার বার ড্রেজিং প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। আর ড্রেজিং প্রকল্পের কাজের জন্য দুটি চীনা কোম্পানিকে চুক্তি হয়েছে। গত ১৩ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে নদী খননের কাজ। নদী খননের বালু ডাম্পিং করার জন্য ১ হাজার একর ফসলি জমি ও মৎস্য ঘের এলাকা হ্মতিপূরন দিয়ে নেওয়া হবে। এ ছাড়া ৫’শ একর সরকারি খাস জমি চিহ্নিত করা হয়েছে।
নদীর বারু ডাম্পিং বিষয় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষে প্রধান প্রকৌশলী (সি ও হা) ড্রেজিং প্রকল্প কর্মকর্তা শওকত আলী জানান, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জমির প্রকৃত মালিক ও হ্মতিগ্রস্থদের ১০ বছরের জন্য হ্মতিপূরন দেওয়া হবে। এ হ্মেত্রে তালিকা প্রনয়ন সহ প্রয়োজনীয় অর্থ প্রদান করা হবে। তিনি আরও বলেন, সু্বিধা ভোগীরা এ নিয়ে নানা চক্রান্ত করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।