দেশের সর্বপ্রথম পরিবেশবান্ধব ইট কারখানা 

 

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জামালপুর পারপুগীতে দেশের সর্বপ্রথম পরিবেশবান্ধব ইট তৈরীর কারখানা স্থাপন করা হয়। এ কারখানায় বালু, আই ফাস, কয়লার ডাস্ট, সিমেন্ট, পাথরকুচি দিয়ে ইট তৈরী শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই কারখানাটি থেকে ১ লক্ষাধিক ইট তৈরী করা হয়েছে। কারখানাটি স্থাপন করেছেন ঠাকুরগাঁও চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সভাপতি ও রাজ্জাক গ্রুপের চেয়ারম্যান হাবিবুল ইসলাম বাবলু। নাম দিয়েছেন বাবলু সুপার ব্রিক্স ইন্ডাষ্ট্রি লিমিটেড।

সমবার কারখানায় গিয়ে দেখা যায় স্বয়ংক্রিয় মেশিনের সাহায্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ অ্যাশ, বালু, সিমেন্ট ও পাথরকুচি মিশিয়ে যন্ত্রটির চাপে তৈরী করা হচ্ছে ইট। এসব ইট শুধু রোদে শোকাতে হবে। পোড়ানোর প্রয়োজন পরবে না। ইতিমধ্যেই লক্ষাধিক ইট প্রস্তুত হয়েছে কারখানা থেকে। কারখানার ভাইব্রো ক্যাভিটি নামের যন্ত্রে প্রতি ৮ ঘণ্টায় ২০ হাজার ইট তৈরি করতে পারে। সম্প্রতি এ কারাখানার ইট দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করেছেন বেশ কয়েকজন। এ ইট দিয়ে বাড়ি নির্মাণের ফলে সৌন্দর্য বেড়েছে ও খরচও কমেছে বলে জানিয়েছেন তারা।

কারখানার ম্যানেজার আসলাম হোসেন জানান, ব্যবসায়িক কাজে প্রতিষ্ঠানের মালিক হাবিবুল ইসলাম বাবলু মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন। অবকাঠামো নির্মাণে পরিবেশবান্ধব ইটের ব্যবহার তাঁর নজরে পরলে তিনি দেশে পরিবেশবান্ধব ইট উৎপাদনের পরিকল্পনা নেন। গত বছরের ১৯ নভেম্বর ইট উৎপাদন শুরু করেন তিনি। এই কারখানায় ইট তৈরিতে আনুমানিক হারে ৪০ শতাংশ ফাই অ্যাশ, ৪০ শতাংশ বালু, ১৫ শতাংশ সিমেন্ট ও ৫ শতাংশ পাথরকুচি ব্যবহার করা হয়। তিনি বলেন, এই কারখানায় উৎপাদনে লোকবলও অন্যান্য ভাটার তুলনায় কম ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় ক্ষতির দিকগুলো খুবই কম।

ঠাকুরগাঁও চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সভাপতি ও রাজ্জাক গ্রæপের চেয়ারম্যান হাবিবুল ইসলাম বাবলু বলেন, পরিবেশ বাঁচাতে পরিবেশবান্ধব ইটের বিকল্প নেই। এ চিন্তা থেকেই এই কারখানা চালু করেছি। এতে মাটি ব্যবহার না হওয়ায় ফসলি জমি রক্ষা পাচ্ছে। এছাড়াও জ্বালানি কাঠ, গাড়ির পুরোনো টায়ার, রাবার না পোড়ানোয় মারাত্মক ক্ষতি থেকে পরিবেশ রক্ষা পাচ্ছে। সরকারী কাজে ইতিমধ্যে ২০ শতাংশ বাধ্যতামূলক এ ইট তৈরীর নীতিমালা প্রনয়ন করেছেন। পরবর্তিতে ২/৪ বছরে শতভাগ কাজে এ ইট ব্যবহারের জন্য নীতিমালা প্রনয়ন করবে বলে জানা গেছে। এই ইটে কখনও লোনা পরবে না। আমরা সরকারি সকল প্রতিষ্ঠানকে উৎপাদনের বিষয়ে চিঠি দিয়েছি, তারা এ ইন ব্যবহার শুরু করলে ধীরে ধীরে এ ইটের ব্যাপক চাহিদা হবে।

ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নুরু কুতুবুল আলম বলেন, আমরা এ জাতীয় পরিবেশবান্দব ইট তৈরীর খারখানাকে সাধুবাদ জানাই। আগামীতে আধুনিক পদ্ধতিতে এ জাতীয় ইট তৈরীর কারখানা স্থাপন করলে আমরা তাদের যাবতীয় সহযোগিতা করবো।

ঠাকুরগাঁও এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী শাহারুল আলম মন্ডল বলেন, ‘পোড়ামাটির পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব ইট দিয়ে অবকাঠামো নির্মাণ বিষয়ে জেনেছি। সরকারি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এ উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এ জাতীয় কারখানা আগামীতে আরও বাড়বে বলে ধারনা করছি।