গাজীপুর প্রতিনিধিঃ– মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে দেশজুড়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সরকারের নানা প্রচারণা সত্ত্বেও লকডাউন মানছে না মানুষ।
করোনার সর্বোচ্চ ঝুঁকির মধ্যেও নিত্যপণ্য কেনার জন্য কাঁচাবাজার খোলা রাখা হলেও সেখানে সামাজিক দূরত্ব একদমই মানা হচ্ছে না।
বাজারগুলো স্বাভাবিক সময়ের মতোই জমজমাট। শরীর ঘেঁষে ভিড় করে কেনাকাটা করা হচ্ছে। জটলা হচ্ছে। এ সময় সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করতেও দেখা যাচ্ছে না বেশির ভাগ মানুষকে। বিশেষ করে ক্রেতারা মাস্ক ব্যবহার করলেও হাট-বাজারের বিক্রেতাদের মধ্যে এ প্রবণতা একেবারেই কম।
প্রয়োজনীয় কেনাকাটার বাইরেও মানুষ চায়ের দোকানে এখনো আড্ডা অব্যাহত রেখেছে। পাড়া-মহল্লার অলি-গলিতেও অহেতুক আড্ডা জমাচ্ছে মানুষ। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাইকিং, টহল, জরিমানা কোনো কিছুই মানছেন না অনেকে।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জৈনাবাজারে ধাক্কাধাক্কি করে, একে অপরের সঙ্গে শরীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করছিলেন ক্রেতারা। মহাসড়কের উপরে চলছে কেনাকাটার ধুম। ওই বাজারের ইজারাদার সাহাব উদ্দিন। বুধবার (০৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
মাছের বাজারে সামাজিক দূরত্ব তো দূরের কথা, বরং ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতিতে জমজমাট চারপাশ। মাছ বাজারের পাশেই সবজি বাজার। সেখানেও মানুষ জটলা বেঁধে সবজি কেনে। দূরত্ব বজায় না রেখে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতারা কেনাবেচা করছে। বাজারে আসা বেশির ভাগ মানুষ মুখে মাস্ক ছাড়াই ঘোরাফেরা করছে। কারো আবার মুখে মাস্ক পরা থাকলেও তা খুলে বিক্রেতাদের সঙ্গে দর-কষাকষি করছে। সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই এসব স্থানে। ঠেলাঠেলি করে তারা প্রয়োজনীয় পণ্য কিনছে। বাজারের প্রতিটি মুদি দোকান ঘিরেও মানুষের ভিড়। কোথাও কম, কোথাও বেশি।
মাস্ক না পরে ঝুঁকি নিয়ে বাজারে ঘোরাঘুরি করছিলেন সাইফুল ইসলাম। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মাস্ক পরলে দম বন্ধ হয়ে আসে। তাই পরি না। বাজার করতে আসছি, বাজার নিয়েই বাসায় চলে যাব। দরকার ছাড়া বাসা থেকে বের হই না।’
স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে বাজারে মাছ বিক্রি করছেন আবু রায়হান। তিনি বলেন, মাস্ক পরে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলতে সমস্যা হয়। তাই মাস্ক পরি না। মুখে মাস্ক পরে বসে থাকলে তো চলবে।
বাজার কমিটির ইজারাদার সাহাব উদ্দিন জানান, স্বাভাবিকভাবেই বাজারে একটু ভিড় বেশি হয়। এ ব্যাপারে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অবগত আছেন।
মাওনা হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ কামাল হোসেন জানান, মানুষের নিরাপত্তার জন্য আমরা সর্বদা কাজ করে যাচ্ছি। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী লকডাউন সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বৃদ্ধি নিয়ে সচেতন করতে মাঠে পুলিশ কাজ করছে। আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাসলিমা মোস্তারীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।