নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে বাকি আর মাত্র দুই সপ্তাহ। অন্যান্য বছর এ সময়ে অন্তত ৭০ শতাংশ বই মাঠপর্যায়ে পৌঁছে যায়। কিন্তু এবার এখন পর্যন্ত ২৭ শতাংশের মতো বই পাঠানো সম্ভব হয়েছে। বাকি সময়ে দিনরাত কাজ করলেও ৬০ শতাংশের বেশি বই পাঠানো সম্ভব হবে না। এ অবস্থায় ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের পুরো সেটের পরিবর্তে দু-চারটি করে বই দিয়ে পালন করতে হবে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক উৎসব। মুদ্রণসংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলামের দাবি-এখন পর্যন্ত ৬২ শতাংশের বেশি বই মুদ্রণ হয়ে গেছে। ১ জানুয়ারির আগে অন্তত ৮০ শতাংশ বই উপজেলায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে কাজ চলছে। মূলত কাগজ সংকটের কারণে এবার তারা পিছিয়ে আছেন। নইলে শতভাগ বই দিয়েই তারা পাঠ্যপুস্তক উৎসব করতে পারতেন। তিনি আরও বলেন, তারা উজ্জ্বলতায় ছাড় দিয়েছেন, কাগজ, কালি আর বাঁধাইয়ের মানে নয়। তাই নিম্নমানে বই সরবরাহ করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক শনিবার বলেন, দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী মুদ্রাকরদের ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে পাঠ্যবই সরবরাহ করার কথা। এবার কাগজ ব্যবস্থাপনায় দরদাতাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাছাড়া প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবই মুদ্রণ কাজ শুরু করতে মুদ্রাকরদের সঙ্গে একটি সমস্যা তৈরি হয়েছিল। তবে সেসব সমস্যা সমাধান করা হয়েছে। এখন পুরোদমে মুদ্রণ আর সরবরাহ কাজ চলছে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কত শতাংশ বই পাঠানো সম্ভব হবে সেটা আগাম কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে ২-৪ কোটি বই কম গেলে উৎসবের ঘাটতি হবে না। আর সারা দেশে সব জায়গায় বই না গেলেও ১ জানুয়ারি উপজেলা-জেলায় পৌঁছে যাবে।
এনসিটিবি থেকে জানা যায়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের স্তরের জন্য ৩৩ কোটি ৪৮ লাখ ৭৬ হাজার ৯২৩ কপি পাঠ্যবই ছাপানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক থেকে প্রাথমিক স্তরে ৯ কোটি ৬৬ লাখ ৮ হাজার ৯৭৮ এবং মাধ্যমিক (স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি) স্তরে মোট ২৩ কোটি ৮২ লাখ ৬৭ হাজার ৯৪৫ কপি পাঠ্যবই আছে। এনসিটিবি চেয়ারম্যান জানান, ইতোমধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ের পৌনে ১৭ কোটি বা ৭০ শতাংশ বই ছাপার কাজ শেষ হয়েছে। প্রাথমিকের তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির বই গেছে ৫০ শতাংশ। আর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বই গেছে ৪৬ লাখ। তবে এই দুই শ্রেণির ৯৩ লাখ বই ছাপার কাজ শেষ হয়েছে। ছাড়পত্র পেলে সেগুলোও ট্রাকে তোলা হবে পাঠানোর জন্য।
কিন্তু মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত মাধ্যমিক স্তরের সর্বোচ্চ ৮ কোটি বই গেছে। আর প্রাথমিক স্তরের গেছে ১ কোটির মতো। বাকি দু’সপ্তাহ দিন-রাত কাজ করলে সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ বই যেতে পারে। কিন্তু কিছুতেই এই হার ৮০ শতাংশ হবে না।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।