খানজাহান আলী থানা প্রতিনিধিঃ বন্ধকৃত রাষ্ট্রায়ত্ব ইষ্টার্ণ ও আলিম জুট মিলের প্রায় তিনশ শ্রমিকের বকেয়া পাওনা পরিশোধসহ ৮দফার দাবীতে গতকাল রবিবার সকাল ১১টায় আলিম জুট মিলের প্রধান ফটক সংলগ্নে খানজাহান আলী থানা জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন সাংবাদিক সম্মেলন করে করে দু্ই দিনের কর্মসুচি ঘোষনা করেছে।

প্রেস ক্লাব খানজাহান আলী থানায় সাংবাদিক সম্মেলনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তৃতায় খানজাহান আলী থানা জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের আহবায়ক মোঃ আমিরুল সরদার বলেন, গত বছরের ১লা জুলাই সরকারি ঘোষনায় দেশের রাষ্ট্রায়ত্ব ২৫টি জুট মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দুই মাসের মধ্যে সকল শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করে মিল গুলোকে আধুনিকায়ন করে নতুন রুপে চালানোর ঘোষনা দেওয়া হয়। সরকারি ঘোষনা অনুযায়ী খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ব ইষ্ট্রার্ণ ও আলিম জুট মিলের শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা শুরু করা হয়। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে, ইষ্ট্রার্ণ ও আলিম জুট মিলের প্রায় তিনশ অবসর ও অবসায়নকৃত শ্রমিকের পাওনা পরিশোধে কাগজপত্রের কিছু ত্রুটি থাকার কারণে তাদের বকেয়া পাওনা পরিশোধে অন্তরায় হয়ে দাড়ায়। এ সকল শ্রমিক পরিবার গুলো করোনাকালীন সময়ে মানবেতর জীবন যাপন করায় খানজাহান আলী থানা জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন পাশে এসে দাড়ায়। ইষ্ট্রার্ণ ও আলিম জুট মিলের এ সকল শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ, বন্ধকৃত পাটকল গুলো উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আধুনিকায়ন করে পুনরায় চালুসহ ৮দফার দাবীতে নতুন করে আন্দোলন কর্মসুচি ঘোষণা করেছে।

সরকারি ঘোষনা অনুযায়ী ২ মাসের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ব জুট মিল গুলোর শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ এবং ৩ মাসের মধ্যে বন্ধকৃত রাষ্ট্রায়ত্ব জুট মিল গুলোকে আধুনিকায়ন করে পুনরায় চালু করার কথা থাকলেও প্রায় ১০ মাস অতিক্রম হয়েছে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ হয়নি। চালু হয়নি বন্ধকৃত রাষ্ট্রায়ত্ব জুট মিল গুলো, পরিশোধ করা হয়নি ইষ্ট্রার্ণ জুট মিলের অবসার ও অবসায়নকারী ১২৯জন এবং আলিম জুট মিলের অবসরকৃত ১২৫জন ও অবসায়নকৃত ৪২জন শ্রমিকের কোন পাওনা।

তিনি বলেন একদিকে হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে অপর দিকে তাদের পাওনা টাকা না পেয়ে ধুকে ধুকে মরতে চলেছে। বন্ধকৃত রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল উন্নত প্রযুক্তি দ্বারা আধুনিকায়ন করে পুনরায় চালু, বদলী শ্রমিকদের এরিয়াসহ সকল বকেয়া পাওনা পরিশোধ, স্থায়ী ও বদলী শ্রমিকদের সকল বকেয়া মজুরী পরিশোধ, শ্রমিকদের মামলা প্রত্যাহার, যে সকল শ্রমিকদের নামের ভুল আছে তাদের ভুল সংশোধন করে পাওনা পরিশোধ, সকল স্থায়ী শ্রমিকদের বকেয়া শিক্ষা সহায়ক ভাতা পরিশোধ, উৎপাদন ভিত্ত্বিক শ্রমিকদের গড় মজুরী হিসাবে গ্রাচুটির অর্থ প্রদান, অবসার ও অবসায়নকৃত সকল শ্রমিক কর্মচারীদের অডিট আপত্তি প্রত্যাহার করে অবিলম্বে তাদেও পাওনা পরিশোধের ৮দফার দাবী বাস্তবায়নের দুই দিনের কর্মসুচি ষোষণা করা হয়েছে। কর্মসুচির মধ্যে আজ সোমবার সকাল ১১টায় খুলনা জেলা প্রশাসকের নিকট স্বারকলিপি প্রদান শেষে শ্রম পরিচালকের নিকট স্বারকলিপি প্রদান এবং আগামীকাল মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় মশিয়ালী সিএন্ডবি মাঠে স্বস্থ্যবিধি মেনে শ্রমিকদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেশনের যুগ্ন আহবায়ক শেখ তবিবুর রহমান, সদস্য সচিব শেখ খান আঃ রাজ্জাক(বাবলু), সদস্য মোঃ জাকির হোসেন সরদার, মোঃ সাকাওয়াত হোসেন, ওয়াকার্স পার্টির নেতা আ. সাত্তার মোল্যা, আঃ মজিদ মোল্যা, শেখ মুজিবর রহমান, ইজদান ফরাজি(সোহেল), মিজানুর রহমান মিলন, আবুল কলাম, জামাল মোল্যা, মিজানুর রহমান(জাকার) মাইনল ইসলাম, ইষ্টার্ণ জুট মিলের জাকির হোসেন, মোজাহার গাজীসহ শ্রমিক প্রতিনিধিগণ।

এ ব্যাপারে আলিম জুট মিলের প্রকল্প পরিচালক মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, মিলের ৯৩২জন শ্রমিকের মধ্যে ৭৭৭জন শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে। বাকী শ্রমিকদের মধ্যে কার নামের ভুল, নমিনীর এবং ব্যাংক একাউন্টের কারণে একটু জটিলতা ছিল। এ সকল শ্রমিকদের কাগজপত্র সংশোধন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করে এ বিষয়ে সিন্ধান্ত নিলেই শ্রমিকরা তাদের পাওনা টাকা পেয়ে যাবে।