বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যে সব ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন ও স্থাপনা ইতিহাস আর মহাকালকে সাক্ষী হিসাবে বাঙ্গালীর ঐতিহ্য ও ধর্মীয় মূল্যবোধকে সমুন্নত রেখেছে দিনাজপুর জেলার নায়বাদ মসজিদ এর মধ্যে অন্যতম। মসজিদটি সকল ধর্মের মানুষের কাছে পবিত্র স্থান হিসাবে পরিচিত। প্রাচীনতম মসজিদ সমূহের মধ্যে অন্যতম এটি। স্থাপত্যকলা শিল্পসৌকর্য্য নিয়ে মসজিদটি আজও দাঁড়িয়ে আছে। কাহারোল উপজেলার ঢেঁপা নদীর পশ্চিম তীরে শান্ত নিবিড় গ্রামীণ পরিবেশে নয়াবাদ মৌজায় মসজিদটি অবস্থিত। প্রাচীন আমলে নির্মিত মসজিদটি কবে এবং কার শাসন আমলে তৈরি তার সঠিক বিশ্লেষণ কঠিন ব্যপার। কেউ মনে করেন এটি মুসলিম শাসন আমলে কেউ বলেন নবাবী আমলে নির্মিত।
তাই সহজে জানা যায় কান্তজিউ মন্দির নির্মাণের স্থপতিগনই এ মসজিদের নির্মাতা। মুসলমান মিস্ত্রিরা নামাজের জন্য এটি নির্মাণ করেন। মসজিদটি নির্মাণের কত সময় বা কত অর্থ ব্যায় করা হয় তা জানা সম্ভব হয়নি।মসজিদের পৃর্ব দেওয়ালে প্রবেশ দ্বারের উপর ১২”/৯” আয়তাকার এক খণ্ড মসৃণ প্রস্তরের শিলালিপি সংস্থাপিত আছে যা প্রাচীন ফরাসি অক্ষরে লিপিবদ্ধ, কোন কোন জায়গায় অক্ষরগুলো অস্পষ্ট বিধায় সঠিক তথ্য অনুবাদ ও সাল তারিখ উল্লেখ করা সম্ভব হয়নি। টেরাকোটর নকশা খচিত অনুপম সৌন্দর্য মণ্ডিত মসজিদটি নির্মাণের কারিগর ছিলেন অন্যদেশের। কান্ত-জিউ মন্দির নির্মাণের জন্য দিনাজপুরের মহারাজা প্রাণনাথ (১৭০৪ খ্রীঃ) সুদূর পারস্য হতে তাদের নিয়ে আসেন।
মিস্ত্রির বংশধর-গন সে সময় থেকে মসজিদের তত্ত্বাবধান করে আসছেন। মোঘল স্থাপত্যের ঐতিহাসিক নিদর্শন সম্বলিত নয়াবাদ মসজিদটি দেখতে খুব বড় নয়। তবে এর ঐতিহ্য নির্মাণের কলা কৌশল সমূহ বড় মাপের এত সুন্দর কারূকার্য তৈরিকৃত মসজিদ বাংলাদেশে বিরল। তিন গুম্বুজ বিশিষ্ট অ-আয়তাকার মসজিদটির দৈঘ্য ১২.৪৫ মিটার, প্রস্থ ৫.৫ মিটার, দেওয়ালের প্রস্থতা ১.১০ মিটার। মসজিদের প্রবেশদ্বার ৩টি, ২টি জানালা ভিতরে মিহরাব বহু খাঁজযুক্ত খিলানাকৃতির নকশা খচিত। মসজিদটি বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে অধিভুক্ত একটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।