সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের ধুপাজান চলতি নদীতে প্রশাসনের চোখের সামনে চলছে প্রভাবশালী চক্রের দ্বারা  বালু ও পাথর  উত্তোলনের মহোৎসব। সীমান্তবর্তী ডলুরা থেকে শুরু করে আদাং, খাইয়েরগাওঁ, রামপুর, বালাকান্দা বাজারের পূর্বপাশসহ  প্রভাবশালী  চক্রটি প্রতিদিন   সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে (ধামাইল) চলতি নদীসহ কয়েকটি স্পট থেকে প্রকাশ্যে পাড়কেটে উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে লাখ লাখ টাকার বালু ও পাথর । যার ফলে  নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে মসজিদ, খবরস্থান, রাস্তাঘাট ও বসতবাড়ি।  সরকার ও প্রশাসনের তরফ থেকে ধুপাজান(চলতি) নদীতে বালু ও পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও একটি পাথরখেকো চক্র ব্যাপরোয়া রয়েছে যারা প্রকাশ্যে পুলিশ ও বিজিবি”র চোখের সামনে প্রতি নিয়ত অবৈধ ভাবে পাড়কেটে নিয়ে যাচ্ছে  বালু ও পাথর। ।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ডলুরা শহীদের গণকবরের পাশে (ধামাইল) চলতি নদীতে চলছে অবাধে পাথর উত্তোলন । এই ডলুরার পাশে চলতি নদীকে ঘিরে ডলুরা ও নারায়নতলা দুটি বিজিবির ক্যাম্প ও রয়েছে। এই সমস্ত অবৈধ কর্মকান্ডগুলো চলে তাদের সামনে। এছাড়াও নৌ-পুলিশের চোখের সামনে চলছে আদাং গাং, খাইয়েরগাওঁ, রামপুর, বালাকান্দা বাজারের পূর্বপাশসহ একাধিক জায়গা থেকে বালু ও পাথর উত্তোলনের মহোৎসব।  যার ফলে নদীর পাড়ে থাকা মসজিদ,মন্দির, ফসলী জমি, অসহায় মানুষের  চলাচলের রাস্তা ,বসতবাড়ি , কবরস্থানসহ  নদীর গর্ভে বিলীন হচ্ছে প্রতি নিয়ত। হুমকির মুখে পড়েছে কয়েকটি গ্রাম । একদিকে যেমন লাভবান হচ্ছে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলনকারী চক্র । অন্য দিকে এদেরকে সহযোগিতা করছেন  প্রশাসনের কিছু অসাধু ব্যাক্তিরা।  যার কারনে  সুন্দর্য হারাচ্ছে ধুপাজান নদীর  ভারসাম্য ও পরিবেশ। ধুপাজান চলতি  নদী এখন হয়ে উঠেছে সমুদ্রে পরিণত ।
 জানা যায় নদী তীরবর্তী ডলুরা গ্রামের  প্রভাবশালী ফারুক মিয়ার নেতৃত্বে ১০/১২জনের একটি সিন্ডিকেট চক্র সীমান্ত বাহিনীর সদস্যদের ম্যানেজ করেই প্রতিদিন প্রকাশ্যে (ধামাইল) চলতি নদী হতে সরকারের রাজস্ব ফাকিঁ দিয়ে স নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শতাধিক শ্রমিকদের দিয়ে নদী হতে পাথর উত্তোলন করে। রাতের আধাঁরে ঐ সমস্ত পাথর ভ্যান গাড়ি কিংবা ঠেলা গাড়ি দিয়ে স্থানীয় হালুয়ারঘাট বাজারসহ আশপাশের বাজারে কাশার দোকানে এনে বিক্রি করে অল্পদিনে আঙ্গুল ফুলে গলাগাছ বনে যাচ্ছে ঐ চক্রটি। ঐ সমস্ত অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কোন কার্যকরী ব্যবস্থা নেননি প্রশাসন এমটি দাবী সাধারণ মানুষের । জানা যায় মাঝে মধ্যে বিজিবির সদস্যরা পাথর খেকোদের বিরুদ্ধে লোক দেখানো দায়সারা অভিযান পরিচালনা করলেও সীমান্ত নদীতে পাথর উত্তোলন যেন বন্ধই হচ্ছে না। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে সামান্য  জরিমানা করে ছেড়ে দিচ্ছেন ঐ সমস্ত অবৈধ বালু পাথর উত্তলণ কারীদের। যার ফলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করলে ও অবৈধ বালু পাথর উত্তোলনকারীদের ব্যবসার কোন ক্ষতি হয়না বরং প্রতি বলগেট নৌকায় লাখ খানিক টাকা ইনকাম হয়। অন্য দিকে সাধারন ব্য্সায়ীরা বালু কিনে পড়েছেন বিপাকে। এছাড়াও প্রতিনিয়ত থানা পুলিশ ও নৌ-পুলিশকে সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার কঠোর নির্দেশনা দিয়ে থাকলেও  সেটি  ঠিকমত পালন হচ্ছেনা ডিউটিতে থাকা পুলিশ সদস্যরা এমনটির বাস্তব চিত্র ফুটে উঠে ক্যামেরায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় সদর থানা পুলিশ ও নৌ-পুলিশের উপস্থিতিতে  সীমান্তবর্তী ডলুরা থেকে শুরু করে আদাং, খাইয়েরগাওঁ,রামপুর, সৈয়দপুর, বালাকান্দা বাজারের পূর্বপাশসহ আরও একটি  সিন্ডিকেট  চক্র  প্রতিদিন  ধুপাজান চলতি নদীসহ কয়েকটি স্পট থেকে পুলিশের চোখের সামনে পাড়কেটে বালু উত্তোলন করে বড় বড় বলগেট/কার্গো জাহাজ/নদীতে রেখে বুজাই দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। জানা যায়  বালাকান্দা বাজারের বালু ব্যবসায়ী রমজান আলী,লায়েছ মিয়া, ময়না মিয়া, কাইয়ারগাওঁ এর মকবুল,ইকবাল হোসেন , আদাং নদীতে জিয়া, রামপুর গ্রামের কাইয়ূমসহ আরও কয়েকজন মিলে পুলিশকে ম্যানেজ করে প্রকাশ্যে চালিয়েছে তাদের  লাখ লাখ টাকার বালু ও পাথর উত্তোলনের রমরমা ব্যবসা।
স্থানীয় এবং পরিবেশবাদীরা জানান ডুলরায় অনেক শহীরের গনকবর রয়েছে। প্রতিদিন এখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পর্যটকরা শহীদ মিনার, ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত (ধামাইল) চলতি নদীর সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে আসেন। কিন্তু এই পাথরখেকোরা যেভাবে এই (ধামাইল) চলতি নদীর পাড় কেটে কোদাই করে বালি ও পাথর উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে। ফলে ধুপাজান নদীটি এখন সমুদ্রে পরিনত হয়ে যাচ্ছে, ভ্রমন পিপাসুরা এক সময় এই পর্যটন খ্যাত ডুলরা হতে মুখ ফিরিয়ে নিবেন। পাশাপাশি অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন অব্যাহত থাকলে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলো নদীগর্ভে বিলিন হওয়ার ও শংঙ্কা রয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে এই সমস্ত বালু ও পাথর খেকোদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সরকার ও প্রশাসনের উধর্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানান পর্যটকসহ সাধারণ মানুষ ও  পরিবেশবাদীরা।
 এছাড়াও কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে আলাপ করে জানা যায় নদীরপাড়ে রাখা স্টক করা বালু বিক্রয় বন্ধ করে প্রশাসন অবৈধ ব্যবসায়ীদের বালু ও পাথর উত্তোলনে পাদান্য দিচ্ছেন। সাধারণ বৃষ্টি এবং পাহাড়ী ঢলে এ বছর  লোকসান হবে বলে জানিয়েছেন অনেকে । তাদের দাবী অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধ করে ব্যবসায়ীদের স্টকে থাকা বালু বিক্রয় করার সুযোগ দিবেন প্রশাসন।
এব্যাপারে পুলিশ সুপার মো: মিজানুর রহমান বার বার জানিয়েছেন অবৈধ ভাবে বালু পাথর উত্তোলনে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এবং পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত বালু পাথর উত্তোলন বন্ধে পুলিশ সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছে।  যারাই অপরাধের সাথে জড়িত থাকবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এব্যপারে জেলা প্রশাসক মো: জাহাঙ্গীর হোসেন জানান আমার কাছে কিছু তথ্য এসেছে রাতের আধারেঁ কিছু অসাধু চক্র প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বালু ওপাথর উত্তোলন করে যাচ্ছে। তবে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন নদীতে বালু পাথর উত্তোলনে কঠোর অবস্থানে রয়েছে কোন ভাবেই অবৈধ ভাবে বালু পাথর উত্তোলন করতে দেওয়া হবে না । যারা এসব করবে তাদের রিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এবং প্রশাসনের তরফ থেকে অভিযান অব্যহত আছে