সাগর তীরের অসহায় আওয়ামী লীগ কর্মী দেলোয়ারের কান্না শুনলেন প্রধানমন্ত্রী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেলোয়ারের মর্মস্পর্শী দুঃখের কথা শুনে পটুয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. মহিব্বুর রহমানের মাধ্যমে অসহায় দেলোয়ারের পরিবারকে এক লাখ টাকা সহায়তা তুলে দেন।
একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দেলোয়ারের বসতঘর নিয়ে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করে দেন এমপি মহিব্বুর রহমান।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ার একজন দিনমজুর আওয়ামী লীগ কর্মীর দুর্দিনে প্রধানমন্ত্রী সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় খুশি কলাপাড়ার সর্বস্তরের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। আর খুশিতে আপ্লুত দেলোয়ার নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছেন প্রধানমন্ত্রীর মমতা ও ভালোবাসা পেয়ে।
২০১৮ সালে পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মহিব্বুর রহমান মহিব বিজয়ী হন। এ সময় কলাপাড়া পৌর শহরে বের হয় একটি বিজয় মিছিল। ওই মিছিলে অংশ নেওয়ায় আওয়ামী লীগ কর্মী দেলোয়ার হোসেনকে মারধর করে কতিপয় যুবক। ক্ষোভে-দুঃখে দেলোয়ার বিষয়টি গোপন করে নিজেকে দলের কার্যক্রম থেকে গুটিয়ে রাখে। মাঠে-ঘাটে কাজ করে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করলেও দলের কারো কাছে সাহায্য চায়নি ওই ঘটনার পর।
কলাপাড়া পৌর শহরের ৬নং ওয়ার্ড নাইয়াপট্টি এলাকায় একটি ঝুপড়ি ঘরে দেলোয়ার স্ত্রী, সন্তান নিয়ে বসবাস করেন; কিন্তু সেই ঝুপড়ি ঘর থেকে তাকে উচ্ছেদের জন্য শুরু হয় ষড়যন্ত্র; যা নিয়ে আদালতে মামলা পর্যন্ত গড়ায়।
সম্প্রতি দেলোয়ার তার নিজস্ব ফেসবুকে আওয়ামী লীগ করেও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এমন একটি ভিডিও আপলোড করেন। ভিডিও মুহূর্তেই ভাইরাল হলে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হয়। প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ কর্মী দেলোয়ারের দুঃখ-দুর্দশার কথা শুনে তথ্যমন্ত্রীর মাধ্যমে তার খবর নেন এবং প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে অসহায় দেলোয়ারকে এক লাখ টাকা প্রদান করেন।
সংসদ সদস্য মহিব্বুর রহমান বলেন, তথ্যমন্ত্রীর মাধ্যমে তিনি দেলোয়ারের দুঃখের কথা জানতে পারেন। তথ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সহায়তার এক লাখ টাকা দেন দেলোয়ারকে পৌঁছে দিতে।
এমপি মুহিব বলেন, দেলোয়ার একনিষ্ঠ আওয়ামী লীগ কর্মী। কিন্তু তার এ দুঃখের কথা চার বছরেও তাকে জানায়নি। তথ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে দেলোয়ারের খবর জানতে পেরে দ্রুত কলাপাড়ায় এসে তার বাসায় ছুটে যান এবং সব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। দেলোয়ারের হাতে তুলে দেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেরণ করা এক লাখ টাকা।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেরিত টাকা হাতে পেয়ে আপ্লুত দেলোয়ার হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, দিনমজুরির টাকা জমা করে দলের জন্য পোস্টার, লিফলেট করেছেন একসময়। কিন্তু দল যেদিন ক্ষমতায় আসে তখনই অজ্ঞাত কতিপয় যুবক তাকে মারধর করেছে। কষ্টে দলের কার্যক্রমে আর অংশ নেইনি। পরিবার নিয়েও আছি কষ্টে। মাথা গোঁজার শেষ আশ্রয়টুকু দখল হতে চলছিল। বাধ্য হয়ে নিজের কষ্টের কথা ফেসবুকে বলেছি। কিন্তু কল্পনাও করিনি প্রধানমন্ত্রী তার কথা শুনবেন। তাকে সহায়তা করবেন। কখনো কল্পনাও করিনি কলাপাড়ার এমপি মহিব্বুর রহমান সহায়তা নিয়ে তার বাড়ি যাবেন। তার সব মামলা ও জমি নিয়ে সমস্যার সমাধান করে দেবেন।
তিনি বলেন, যতদিন বেঁচে থাকব প্রধানমন্ত্রী ও এমপি মহিব্বুর রহমানের জন্য দোয়া করবেন। তাদের দুজনের জন্য জীবনের শেষলগ্নে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।