বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ক্যালিফোর্নিয়ার রাজধানী স্যাক্রামেন্টোর পাশের শহর ডেভিস এ এইচবিবির (হিউম্যানিটি বিইয়ন্ড ব্যারিয়ার) উদ্যোগে শত কন্ঠে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হয়েছে । 

গত শনিবার বিকেল ৪ টায় ভেটেরান মেমোরিয়াল সেন্টার থিয়েটারে ‘স্বাধীনতা মেলা’ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয় ।

জানা যায়, পরিবেশ ও মানব সেবামূলক প্রতিষ্ঠান এইচবিবি দেশাত্মবোধের টানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের আয়োজন করে। সেসময় এইচবিবির বার্ষিক তহবিল সংগ্রহ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।

মেলা উদ্বোধন করেন এইচবিবির সাধারণ সম্পাদক আকীম কবীর। মেলায় বিভিন্ন ধরনের দেশীয় খাবার, বই, দেশীয় শাড়ি, গহনা এবং বাংলাদেশের প্রতীক চিহ্নিত সুভেনির দোকান অংশগ্রহণ করে। এইচবিবির পরিচালক জাওদাত হাসান রহমানের সার্বিক আয়োজনে স্বাধীনতা মেলা যেন উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার বাংলাদেশিদের মিলন মেলায় পরিণত হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ছিল স্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহনে স্বাধীনতার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং একইসঙ্গে উপস্থাপন করা হয় এইচবিবির গত এক বছরের কার্যক্রম।

এতে প্রধান অতিথি এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যথাক্রমে বাংলাদেশী ফিলান্থ্রোপিস্ট মিসেস সিতারা খান এবং মিডিয়া ব্যাক্তিত্ব আনিসুর রহমান মিলন।

এইচ,বি,বি ইয়ুথ ডিরেক্টর সায়মা শহীদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে কিশোর কিশোরীরা তাঁদের গত এক বছরে বিভিন্ন প্রকল্প উপস্থাপন করে। দেশের প্রতি কিছু করার তাগিদে মানুষকে আহ্বান জানানো এবং উতসাহিত করার ইতিবাচক সময় হিসেবে স্বাধীনতার দিনটি কে বেছে নেওয়ায় এইচবিবির গ্রহণযোগ্যতা সবার কাছে সমাদৃত হয়ে উঠে।

এইচবিবির প্রেসিডেন্ট ড. শেখ সেলিম শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। এইচবিবির কোষাধ্যক্ষ এম এম আর মুকুল সার্বিক তথ্য উপস্থাপনে সহায়তা করেন৷ পরিবেশ ও মানব কল্যাণে এইচবিবি ২০১৫ সাল থেকে আমেরিকা, এশিয়া এবং আফ্রিকার মহাদেশে কাজ করে আসছে । বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতি বছর এইচ,বি,বি বৈচিত্রময় সেবামূলক কার্যক্রম গ্রহন করে থাকে। যেমন বান্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের স্কুল তৈরি করে দেওয়া, উত্তরবঙ্গে শিশু সর্গ নির্মাণে সহযোগী হওয়া, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য যাতায়াত বাহন তৈরি, করোনা আক্রান্ত রোগীদের অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ, পানি সরবরাহ, ঝুকিপূর্ন হাস্পতাল বর্জ্য বেবস্থাপনায় জড়িত সেবা কর্মিদের প্রশিক্ষণ প্রদান, প্রাকৃতিক দূর্যোগে ক্ষতি গ্রস্থদের সহায়তা, সমাজের তৃতীয় লিঙ্গ মানুষের সহায়তা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নত করনে সহায়তা, দুস্থ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমে সহায়তা প্রদান সহ বর্তমানে আরও বেশ কিছু কার্যক্রম চলমান আছে। এইচবিবির উল্লেখযোগ্য একটি কার্যক্রম হল টেলিমেডিসিন।

উক্ত প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত উপস্থাপন করেন এইচবিবি পরিচালক ডাঃ হালিমা করিম। এইচবিবির আরো একটি উল্লেখযোগ্য প্রকল্প হল ছিন্নমূল পথশিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে ‘ছায়াতল বাংলাদেশ’।

উক্ত প্রকল্পের কার্যক্রমের সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ডা. সৈয়দা কবির তুলি। বিভিন্নভাবে এইচবিবি থেকে এ পর্যন্ত প্রত্যক্ষ সেবা গ্রহীতার সংখ্যা প্রায় এক লাখ এবং পরোক্ষভাবে প্রায় ১০ লাখ মানুষ। অনুষ্ঠান চলাকালীন উপস্থিত অনেকেই তহবিল সংগ্রহে এগিয়ে আসার জন্য সবাইকে উদাত্ত্ব আহ্বান জানান। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে শুরু হয় আমন্ত্রিত অতিথি শিল্পীর সঙ্গীতানুষ্ঠান। ডাঃ সাঈদা লতার তত্ত্বাবধানে শতকন্ঠে উচ্চারিত হয় বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। স্বাধীনতার মিলন মেলা এবং বার্ষিক তহবিল সংগ্রহের এই অনুষ্ঠান যেন ডেভিস শহরে হয়ে উঠেছিল উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার বাংলাদেশিদের সর্ব বৃহৎ অনুষ্ঠান।

তাছাড়া অন্যভাষী এবং অন্য দেশের অতিথিদের অংশগ্রহনে অনুষ্ঠানের মাত্রা যেন অনেকটাই বইচিত্রময় হয়ে উঠে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মিসেস সিতারা খান তাঁর অনুভূতি ব্যক্ত করেন প্রেসিডেন্ট শেখ সেলিম, আকীম কবির এবং ডাঃ সৈয়দা কবির তুলি কাছে। তিনি বলেন, আজকে এখানে এসে আমার মনে হচ্ছে আমি অনেক ভালো কিছুর সাথে যুক্ত হতে পেড়েছি। দেখতে পেয়েছি এবং জানতে পেড়েছি গত সাত বছরে এইচ,বি,বি’ পরিবেশ ও মানব কল্যাণে কত কিছুই না করেছে। আমি এইচ,বি,বি’ সার্বিক কল্যাণ কামন করছি। আমি সব কিছুই উপভোগ করেছি। আমি এখানে এসে আনন্দিত