২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধকে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করার পাশাপাশি সৌধ চত্বরের সিঁড়ি ও নানা স্থাপনায় পড়েছে রংতুলির আঁচড়। নানা রঙের বাহারি ফুলে ঢেকে ফেলা হয়েছে স্মৃতিসৌধের সবুজ চত্বর। মুক্তিযুদ্ধের শহিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে জড়ো হয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন সর্বস্তরের মানুষ। অন্যান্য বছরের মতো এবারও এ দিনটিকে ঘিরে প্রস্তুত করা হয়েছে সৌধ প্রাঙ্গন ও এর আশপাশের এলাকা।
পরিচ্ছন্ন হয়ে সেজেছে সৌধ: ২৫ মার্চ দিনে জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে দেখা যায়, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ এরইমধ্যে শেষ হয়েছে। সৌধস্তম্ভের চূড়া থেকে শুরু করে শহিদ বেদি, পায়ে চলার সড়ক সবখানে ধুয়ে মুছে চকচকে করা হয়েছে। প্রয়োজন মতো করা হয়েছে রঙ। সৌধের মূল ফটক থেকে বেদি পর্যন্ত হাটা পথে লাল ইটের মধ্যে সাদা রংয়ের ছোঁয়া ছড়াচ্ছে শুভ্রতা।
চত্বরজুড়ে শোভা পাচ্ছে লাল, নীল, বেগুনি, হলুদ, সাদাসহ বিভিন্ন রঙের ফুলের গাছ। এসব গাছে ফুটে আছে রঙিন ফুল। সৌন্দর্য বর্ধন করা হয়েছে এসব গাছেরও। নির্দেশক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে একেকটি ঝাউগাছ। সৌধ বেদির সামনের অংশে গাছ দিয়ে বানানো হয়েছে জাতীয় পতাকা। লেকের পানিতে নতুন করে রোপণ করা হয়েছে লাল শাপলা।
এছাড়া পুরো জাতীয় স্মৃতিসৌধের ভেতর ও বাইরে আলোকসজ্জার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
সাভার গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, সৌধ চত্বর এলাকাজুড়ে ধোঁয়ামোছা ও অন্যান্য সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।
সেজেছে আশপাশের সড়ক-মহাসড়ক: সৌধ এলাকা ছাড়াও এর বাইরের আশপাশের এলাকাতেও সৌন্দর্য বর্ধন করা হয়েছে।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নবীনগর থেকে আমিনবাজার ও নবীনগর থেকে বাইশ মাইল এবং নবীনগর থেকে পল্লী বিদ্যুৎ সড়ক জুড়ে সড়ক বিভাজকে রঙের কাজ করা হয়েছে। এছাড়া দিনটি উপলক্ষে নজর কাড়তে স্থানীয় নেতাকর্মীদের ছবি সম্বলিত বহু ব্যানার পোস্টার সাঁটানো হয়েছে সড়কের দুইপাশে।
নিরাপত্তার চাদরে মোড়ানো থাকবে সৌধ এলাকা: ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই সৌধ ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে ঢাকা জেলা পুলিশ। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সিসি ক্যামেরার পাশাপাশি বসানো হয়েছে অস্থায়ী ওয়াচ টাওয়ার।
গত ২৩ মার্চ থেকেই জাতীয় স্মৃতিসৌধে জনসাধারণের প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সৌধ এলাকা এরইমধ্যে পরিদর্শন করেছেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আসাদুজ্জামান রিপন।
এসপি আসুদুজ্জামান বলেন, ‘এবার স্বাধীনতা দিবসকে ঘিরে তিনস্তরের নিরাপত্তার চাদরে স্মৃতিসৌধের পুরো এলাকা ঢাকা থাকবে। এরইমধ্যে আমরা সৌধ এলাকায় জনসাধারণের প্রবেশ বন্ধ রেখেছি। নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ওয়াচ টাওয়ার বসানো হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মাঠে কাজ করছে। আমিনবাজার থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত ব্যপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্মৃতিসৌধ এলাকা জুড়ে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। কয়েকশ পুলিশ সদস্য এই নিরাপত্তায় কাজ করবেন।
দিবসের আনুষ্ঠানিকতার শুরু যেভাবে: স্বাধীনতা দিবসের প্রত্যুষে শহিদদের প্রতি প্রথমে শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরপর মন্ত্রী পরিষদ সদস্য, বিদেশি কূটনৈতিক, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠনসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন।
সুর্যোদয়ের সঙ্গে-সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এসময় তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করবে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গন সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।