বাঁচা-মরার লড়াইয়ে নেমেছিল দুদল। লিগে নিজেদের শেষ ম্যাচে হারলেই পড়তে হবে বাদ। জিতলেও প্লে অফে যাওয়ার নিশ্চয়তা নেই। এমন সমীকরণের ম্যাচে শেষ ওভারের রোমাঞ্চে হেরে আইপিএলের এবারের আসর থেকে বিদায় নিয়েছে পাঞ্জাব কিংস।

পক্ষান্তরে, ৪ উইকেটের জয়ে প্লে অফে খেলার আশা এখনো টিকিয়ে রেখেছে রাজস্থান রয়্যালস। শুক্রবার ধর্মশালায় হওয়া ম্যাচে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা পাঞ্জাব ৫ উইকেট স্কোরবোর্ডে তোলে ১৮৭ রান। জবাবে রাজস্থান দুই বল হাতে রেখে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছায়।

১৪ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে রাজস্থান। বেঙ্গালোর ১৩ ম্যাচে সমান পয়েন্ট নিয়ে রানরেটে এগিয়ে থাকায় টেবিলের চারে রয়েছে। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে রানরেটে পিছিয়ে থাকায় ছয়ে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।

লিগের সব ম্যাচ খেলে ফেলা রাজস্থানের সামনে প্লে অফে খেলার জন্য তিনটি সমীকরণ মিলতে হবে। আগেই আসর থেকে ছিটকে যাওয়া টেবিলের তলানির সানরাইজার্স হায়দরাবাদের কাছে মুম্বাইকে হারতে হবে। একইসঙ্গে একমাত্র দল হিসেবে প্লে অফে খেলা নিশ্চিত করা গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোরকে এমন ব্যবধানে হারতে হবে, যাতে রানরেটে তারা রাজস্থানের চেয়ে পিছিয়ে যায়। পাশাপাশি লক্ষ্ণৌর বিপক্ষে কলকাতা নাইট রাইডার্সের পরাজয়টাও রাজস্থানের রাস্তা সহজ করবে।

পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা গুজরাট টাইটান্স ১৩ ম্যাচে পেয়েছে ১৮ পয়েন্ট। চেন্নাই সুপার কিংস ১৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় এবং লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস তৃতীয় স্থানে আছে।

ট্রেন্ট বোল্টের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে প্রথম ওভারেই ফেরেন প্রভসিমরান সিং, পাঞ্জাবের দলীয় রান তখন দুই। এরপর অথর্ব তাইদেকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৩৬ রানের জুটি গড়েন শিখর ধাওয়ান। ১২ বলে ১৯ রান করে নবদ্বীপ সাইনির বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তাইদে।

ধাওয়ান ১৭ রান করে অ্যাডাম জাম্পার বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন। খানিক পর সাইনির বলে লিয়াম লিভিংস্টোন বোল্ড হলে পাঞ্জাবের স্কোর দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ৫০ রান।

পঞ্চম উইকেটে স্যাম কারেন ও জিতেশ শর্মার ৬৪ রানের জুটিতে পাঞ্জাব ঘুরে দাঁড়ায়। জিতেশ ২৮ বলে ৩ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৪ রান করে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে জুটি।

শাহরুখ খানকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে ৭৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন স্যাম। পাঞ্জাব পেয়ে যায় লড়াই করার মতো পুঁজি। স্যাম ৩১ বলে ৪টি চার ও ২ ছক্কায় ৪৯ ও শাহরুখ ২৩ বলে ৪টি চার এবং ২ ছক্কায় ৪১ রানে অপরাজিত থাকেন।

রাজস্থানের পক্ষে সাইনি ৪০ রান খরচায় নেন ৩ উইকেট। একটি করে উইকেট পান বোল্ট ও জাম্পা। দলীয় ১২ রানের মাথায় জস বাটলারের উইকেট হারায় রাজস্থান। ইংলিশ ব্যাটার কোনো রান না করেই কাগিসো রাবাদার বলে এলবিডব্লিউ হন। দ্বিতীয় উইকেটে দেবদূত পাডিকলকে নিয়ে ৭৩ রানের জুটি গড়েন যশস্বী জয়সওয়াল।

৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৩০ বলে ৫১ রান করা দেবদূত ড্রেসিং রুমে ফিরলে ভাঙে জুটি। এরপর সাঞ্জু স্যামসন আউট হলে রাজস্থানের স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৯০ রান। শিমরন হেটমায়ারকে নিয়ে ৪৭ রানের জুটি গড়ার পর নাথান এলিসের শিকারে পরিণত হন জয়সওয়াল। ৩৬ বলে ৮ চারে জয়সওয়াল ৫০ রান করে ফেরেন।

হেটমায়ারের সঙ্গে রিয়ান পরাগের কার্যকরী ৩২ রানের জুটি ম্যাচ জমিয়ে তোলে। পরাগ ১২ বলে এক চার ও ২ ছক্কায় ২০ রান করে ক্রিজ ছাড়ার সময় রাজস্থানের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১২ বলে ১৯ রান।

১৯তম ওভারে স্যাম ১০ রান ব্যয় করলেও হেটমায়ারের উইকেট তুলে নেন। ক্যারিবীয় ব্যাটার ২৮ বলে ৪টি চার ও ৩ ছক্কায় ৪৬ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন। শেষ ওভারে রাজস্থানের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৯ রান, তখন বল হাতে নেন রাহুল চাহার। প্রথম তিন বল থেকে আসে ৪ রান। জয়ের সমীকরণ দাঁড়ায় ৩ বলে ৫ রান।

চতুর্থ বলে ধ্রুব জুরেল ছক্কা মেরে খেলার সমাপ্তি রেখা টেনে দেন। জুরেল ৪ বলে এক ছক্কায় ১০ ও বোল্ট এক রানে থেকে দলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন। রাবাদা পাঞ্জাবের পক্ষে নেন ২ উইকেট। আর্শদ্বীপ সিং, স্যাম, এলিস ও রাহুল একটি করে উইকেট পান।