ঠাকুরগাঁওয়ে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। এতে ব্যবসায়িদের মুখে হাসি ফুটেছে। লকডাউনে করোনা পরিস্থিতি তার উপরে আবার রমজান ও সামনে ঈদকে রেখে ব্যবসায়িদের দুশ্চিন্তার যেন শেষ ছিলনা। অবশেষে সীমিত আকারে হলেও প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ায় তারা নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন।
পৌর শহরের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মালিকজন জানান, গত বছর করোনা পরিস্থিতি শুরুর পর থেকে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এতে করে ব্যবসায়িগণ লোকসানের মুখে পরে। তারা মুনাফা তো দূরের কথা মুলধনই উঠাতে পারেননি। ব্যবসায়িগণ রমজান, ঈদুল ফিতর, দূর্গাপূজা ও ঈদুল আজহায় কেনাবেচার দিকে বিশেষ করে তাকিয়ে থাকেন। ওই সময়ে গ্রাহক সংখ্যা প্রচুর হয়। করোনার কারনে সেই লোকসান পুষাতে এ বছর লক্ষ্য স্থির করে রেখেছিলেন। কিন্তু গত ১৪ এপ্রিল থেকে সরকার আবারও লকডাউন ঘোষনা করায় বীপাকে পরে তারা। পরবর্তীতে গতকাল রোববার থেকে দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলায় আবারও স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন তারা।
ছবিঃ দৈনিক কলম কথা
গতকাল রোববার পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায় প্রচুর লোক সমাগম ঘটেছে। শহরে প্রচুর যানবাহন চলাচলে এক প্রকার যানযটের সৃষ্টি হয়। শহরের কালিবাড়ি বাজারে উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা যায়। নর্থ সার্কুলার রোড, নরেশ চৌহান সড়ক, শহীদ মোহাম্মদ আলী সড়ক, কালিবাড়ী বাজার, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, সত্যপীর ব্রীজের মোড়, ঠাকুরগাঁও রোড বাজার জমে উঠতে দেখা যায়। বিশেষ করে নর্থ সর্কুলার রোডের কাপড়ের দোকনগুলোতে বেশি ভীড় লক্ষ্য করা যায়। বিভিন্ন বয়সী মানুষের জন্য কাপড়-চোপড় কিনছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে। এছাড়াও স্বর্নকার, টেইলার্স, কসমেটিকসসহ অন্যান্য দোকানেও ভীড় লক্ষ্য করা যায়। সাধারণ মানুষের ধারনা, যে কোন সময় আবারও লকডাউন দিতে পারে সরকার। তাই আগে ভাগেই রমজান ও ঈদের কেনাকাটা সারছেন তারা।
পৌর শহরের নর্থ সার্কুলার রোডের কাপড় ব্যবসায়ি আব্দুল মজিদ বলেন, গত বছর দুই ঈদ ও পূজায় কোন ব্যবসা করতে পারিনি। এবছরও লকডাউন থাকলে পরিবার পরিজন নিয়ে কিভাবে দিন পার করবো। তাই রমজান, ঈদকে সামনে রেখে নতুন করে ব্যবসা বানিজ্যের উপর তাকিয়ে রয়েছি। নতুন করে লকডাউন না দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি।
বঙ্গবন্ধু সড়কের শহরের সবচেয়ে বড় শপিংমল টিপটপ বাজারের স্বাত্তাধিকারী রফিকুল ইসলাম রোহান বলেন, এতদিন লকডাউন থাকায় মানুষজন বাড়ি থেকে বের হচ্ছিল না। এখন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্ধারিত সময়ে হলেও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান-শপিং মল খুলে দেওয়াকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তিনি। তার মতে এ সিদ্ধান্তের ফলে রমজান ও সামনের ঈদুল ফিতরে সামান্য হলেও ব্যবসায়িরা উপকৃত হবে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. কেএম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে গতকাল রোববার থেকে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শপিং মল খোলা রাখা যাবে। তবে ব্যবসায়ি ও ক্রেতা সাধারণকে সতর্ক থাকতে হবে। অবশ্যই কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে। নিয়ম না মেনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।