জাবি প্রতিনিধিঃ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) নতুন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) হিসেবে ক্যাম্পাসে বিএনপিপন্থি শিক্ষক হিসেবে পরিচিত প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি শিক্ষক রাজনীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তিনি বিএনপিপন্থি উপাচার্যদের সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি থাকাকালীন সময়ে ভর্তি পরীক্ষা এবং স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর বিভিন্ন পর্বে পরীক্ষা কমিটি গঠনে পক্ষপাতদুষ্টতা ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ রয়েছে। তার ঘনিষ্ট শিক্ষক অধ্যাপক মফিজুল কবির টানা তিনবার ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান।

এছাড়া অধ্যাপক মোস্তফা ফিরোজের বিরুদ্ধে ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় অপেক্ষমাণ তালিকা প্রণয়নে জালিয়াতির অভিযোগ করে প্রশাসনের কাছে চিঠি দেন নাজিয়া জামান নামে এক শিক্ষার্থী। পরে প্রশাসন ওই বিভাগে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ভর্তি স্থগিত করেন।

এদিকে বিভাগের সভাপতি থাকাকালীন সময়ে প্রভাব খাটিয়ে একটি বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনে নিজেই একই শিক্ষাবর্ষে তিনবার ২য়, ৩য় ও ৪র্থ স্নাতক (সম্মান) পর্বে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া বিএনপিপন্থি এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে পরীক্ষার খাতা নিজে মূল্যায়ন না করে অন্য শিক্ষক দিয়ে মূল্যায়ন করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীলীগপন্থি একধিক শিক্ষককেরা বলেন, ‘অধ্যাপক মোস্তফা ফিরোজ কখনও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন না। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনপিপন্থি শিক্ষক রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। অধ্যাপক ফিরোজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমানসহ বিএনপিপন্থি উপাচার্যদের সময়ে সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন। তিনি বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন বলেই সেসব পদের দায়িত্ব পান।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এর আগে, বুধবার (১২ জুলাই) সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মোছা. রোখছানা বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজকে চার বছরের জন্য জাবির উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৭৩ এর ১৩ (১) ধারা অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য পদে নিয়োগ করা হলো। উপ-উপাচার্য হিসেবে তার এ নিয়োগের মেয়াদ যোগদানের তারিখ থেকে চার বছর হবে।

এতে বলা হয়, উপ-উপাচার্য পদে কর্মরত থাকাকালীন তিনি তার বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতন ভাতাদি পাবেন। তিনি উপ-উপাচার্য পদ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন এবং সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন।

এছাড়া তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত ও উপাচার্য কর্তৃক প্রদত্ত দায়িত্ব পালন করবেন। রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর প্রয়োজন মনে করলে যে কোনো সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।