মণিরামপুর প্রতিনিধি: মনিরামপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও পৌর মেয়র আলহাজ্ব অধ্যক্ষ কাজী মাহমুদুল হাসানের পৈত্রিক বাড়িসহ পাশাপাশি আরো দুইটি ধর্ণাঢ্য পরিবারের ৬ সদস্যকে চেতনানাশক ঔষধ প্রয়োগে অজ্ঞান করে প্রায় ৩০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টা থেকে ২টার মধ্যে উপজেলার দত্তকোনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। উর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

জানা যায়, মনিরামপুর পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি কাজী মাহমুদুল হাসানের পৈত্রিক বাড়ি উপজেলার দত্তকোনা গ্রামে। মঙ্গলবার রাতে মেয়রের পৈত্রিক বাড়ীসহ আশপাশের মাষ্টার কওছার ও মোশাররফ গাজীর বাড়ির ৬ সদস্যকে অজ্ঞান করে অচেনা দুর্বৃত্তরা এ সকল বাড়ি ঘরে লুটপাট করেছে। প্রতিবেশিসহ স্বজনদের ধারণা তিন বাড়ি থেকে ৩০ লক্ষাধিক টাকার সম্পদ লুটপাট হয়েছে। আহতরা হলো মেয়রের ছোটভাই অবসরপ্রাপ্ত আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা কাজী হুসাইন (৭০), মাষ্টার কওছার আলী (৬৫) ও তার স্ত্রী রেবেকা খাতুন (৪৫), মোশাররফ গাজী’র বৃদ্ধ পিতা হারান গাজী (৮০) ও স্ত্রী তানিয়া বেগম (৪০) কণ্যা শোভা খাতুন (১৩)। পুলিশ ও স্থানীয়দের দাবী, অচেনা দুর্বৃত্তরা অজানা চেতনানাশক বিষ স্প্রে করে এদেরকে অজ্ঞান করে ফেলে রেখে বাড়িঘর তছনছ করে লুটপাট করেছে। এদের সকলের বাড়ির শোকেচ, আলমারী, ওয়ারড্রপসহ সাব-বাক্স দুর্বৃত্তরা তছনছ করে মূল্যবান জিনিষপত্র খুজে নিয়ে যায়। মোশাররফ গাজীর শ্যালক নুর ইসলাম জানান, তার ভাগ্নি শোভা খাতুনকে দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বাড়ির মধ্য থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র, বাইসাইকেল, সোনার অলংকার ও নগদ টাকার হদিস জানে এবং সেখানে সেখানে তল্লাসি করে প্রায় ১৫/২০ লক্ষ টাকার সম্পদ লুটপাট চালায়। তার ভাগ্নে ইমন (২০) কে ছিটকিনি দিয়ে ঘরের মধ্যে দুর্বৃত্তরা আটকে রাখে এবং তার বোন তানিয়া ও হারান গাজীকে অজ্ঞান করে রেখে যায়। মাষ্টার কওছার আলী’র আইটি সেক্টরে কর্মরত পুত্র রাজিবুল বলেন, তার বাড়িতে থাকা পিতা ও মাতাকে অজ্ঞান করে দুর্বৃত্তরা লুটপাট করে নিয়ে গেছে। তার পিতা ও মাতার জ্ঞান না ফেরা পর্যন্ত কিভাবে এই ঘটনা ঘটেছে ও কি পরিমান সম্পদ লুটপাট হয়েছে তা বলা মুশকিল। পৌর মেয়রের ছোট ভাই কাজী হুসাইন একাই বাড়িতে ছিলেন। তিনি অচেতন থাকায় পৌর মেয়রের বাড়ি থেকে কি পরিমান অর্থ ও মালামাল লুটপাট হয়েছে তা কেউ বলতে পারেনি। তবে তার চাচাত ভাই জসিম উদ্দীন বলেন বাড়ী থেকে নগদ টাকা, সোনার অলংকার ভাল কাপড়চোপড় ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট হয়েছে। তার ভাই হুসাইনের জ্ঞান ফিরে আসলে এ বিষয়ে সব কিছু জানা যাবে। আহত সকলের মনিরামপুর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার নাহিদ হাসান জানান, অজানা বিষাক্ত কিছু এই রোগীদের শরীরে প্রয়োগ বা দেয়া হয়েছে। একারণে সকলে অচেতন হয়েে পড়েছেন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এই রোগীদের চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু বিগত ৪ ঘণ্টায় এদের কারো উন্নতি না হওয়ায় সকলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনা কিভাবে ঘটল এবং কারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তা জানার জন্য উর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হুসাইন, সহকারী পুলিশ সুপার আশেক সুজা মামুন, ওসি শেখ মনিরুজ্জামান, নেহালপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আল ইমরানসহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেন নি। তবে ঘটনার আইনগত প্রতিকার বিষয়ে তারা দেখভাল করছেন বলে জানা যায়।