বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে ধারণা দিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বুধবার বিকেলে সেনা নিবাসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমরা কালকে শপথের চেষ্টা করছি। প্রস্তাব ছিল বিকেলে করার। কিন্তু এতে শিডিউল অনেক টাইট হয়ে যায়। উনি (ইউনূস) দুপুরে এসে পৌঁছাবেন। আমরা রাত ৮টায় আমরা করতে পারি। প্রায় ৪০০ জনের মতো উপস্থিত থাকতে পারেন।’

ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সভায় কতজন সদস্য থাকবেন জানতে চাইল তিনি বলেন, ‘১৫ জনের সদস্য হতে পারে। যেহেতু ফরমালি জানানো হয়নি, এটা নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না।’

গত ৫ আগস্ট গণ আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে তাঁর টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে দেশে কার্যত কোনো সরকার নেই। ফলে ঢাকাসহ সারা দেশে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে।

এর মধ্যে গত মঙ্গলবার বঙ্গভবনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৩ সদস্যের দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে বৈঠক করেন রাষ্ট্রপতি। পরে বঙ্গভবন প্রেস উইং জানায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে অন্যদের নাম জানানো হবে।

ইউনূস সেন্টার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, তিনি বৃহস্পতিবার ঢাকা পৌঁছাবেন। ধারণা করা হচ্ছে, এরপরই তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের দায়িত্ব নেবেন।

দেশের বিভিন্ন স্থানে তৈরি হওয়া অস্থিতিশীল পরিবেশের বিষয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‌‘পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে। আশা করি, ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে। যারা অপরাধ করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ড. ইউনূসের সাথে আমার কথা হয়েছে। তিনি নতুন দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী। আমি নিশ্চিত উনি আমাদের একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে যাবেন।’

পুলিশ পুনর্গঠনে কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‌‘আমি নিশ্চিত তারা মনোবল নিয়ে আবার ফেরত আসবে। আমি সব কিছুর দায়িত্ব নিয়েছিলাম, কিছু ঘটনা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি ভাল। কিন্তু সারাদেশে পুলিশ ডিউটিতে নেই। এত বড় একটা ফোর্স না থাকায় সব কিছু সেনাবাহিনী দিয়ে করা সম্ভব না। তবুও আমরা চেষ্টা করছি। হাজার হাজার মানুষকে উদ্ধার করেছি। বিমানবন্দর, ডিপ্লোম্যাটিক জোন, বিচারপতিদের আবাসন রক্ষা করা হচ্ছে।’

সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমার স্ট্রেনথ যা ছিল তা দিয়ে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। আমি নিশ্চিত পুলিশ যখন কাজে নেমে যাবে তখন ঠিক হয়ে যাবে। যারা এসব করেছে, তাদের আইনের আওতায় আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা আমরা করব। আমি দায়িত্ব নিয়েছিলাম, ব্যর্থতা থাকলে সেটাও আমার। একটু সময় দেন, আশার করি সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’