মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ কোথায়? আবর্জনার স্তুপে,নোংরা ও দুষিত পরিবেশে কাঙ্ক্ষিত শিক্ষার্জন সম্ভব নয়। সুস্থ থাকতে চাই, পরিচ্ছন্ন পরিবেশ চাই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন ময়লার ভাগাড়,কেউ কথা রাখেনি,আমাদের দাবী মানতে হবে এমন লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে ময়লার ভাগাড় সরানোর দাবিতে ফের মানববন্ধন,বিক্ষোভ মিছিল,প্রতিবাদ সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে শিক্ষার্থীরা।

বৃহষ্পতিবার সকালে শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশ নেয় ভুক্তভোগী সরকারি কলেজ,দি বার্ডস রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ ও গাউছিয়া সফিকিয়া সুন্নীয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দ।

পরে সেখান থেকে শত শত শিক্ষার্থী একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের চৌমুহনায় গিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে পৌরসভায় গিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন পৌরসভা প্রশাসক এর নিকট।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন,শহরের কলেজ রোডে তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে পৌরসভার বিশাল ময়লার ভাগাড় আছে। দীর্ঘ বছর হইতে প্রতিদিন পুরো শহরের ময়লা-আবর্জনা এখানে এনে ফেলা হয়।
ময়লার গন্ধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে থাকা কষ্টকর। শিক্ষার্থীদের নাকমুখ চেপে ধরে ক্লাস করতে হয়। এ ছাড়া ময়লার ভাগাড়ের জন্য সেখানে কুকুরের আনাগোনা বেশি। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীরা কুকুরের আক্রমণের শিকার হয়েছেন। এছাড়া ময়লার ভাগাড়ের পাশে রয়েছে আরও দুটি আবাসিক এলাকা। মশা,মাছির উপদ্রব ও ময়লার দুর্গন্ধে শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর নাভিশ্বাস অবস্থা বিরাজ করছে। এ সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। এ ভাগাড় সরানোর জন্য বারবার আন্দোলন করেছি। বারবার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কিছুই করা হয়নি। এর আগেও কলেজের সামনে থেকে ময়লার ভাগাড় সরানোর দাবিতে শিক্ষার্থীরা সড়কে নেমেছিলেন।

শিক্ষার্থীরা আলটিমেটাম দিয়েছিলেন,স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ ২০১৭ সালে মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীদের ৬ মাসের মধ্যে ময়লার ভাগাড় সরানো হবে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। এভাবে একটি সভ্য সমাজ চলতে পারে না। শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টা ড.মোহাম্মদ ইউনুস ও পরিবেশ উপদেষ্টার নিকট দাবী রাখেন অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে ময়লার ভাগাড় সরিয়ে তাদেরকে সুস্থ পরিবেশে পড়ালেখা করার সুযোগ দান করতে।
উল্লেখ্য পৌর কর্তৃপক্ষ এই দাবীর প্রেক্ষিতে ময়লা ফেলার জন্য বিগত ২০১৩ সালে সদর ইউনিয়নের জেটি রোডে হাওর এলাকার পাশে জেলা প্রশাসক মৌলভীবাজার এর মাধ্যমে ২ একর ৪৩ শতক ভূমি অধিগ্রহন করে। কিন্তু তৎকালীন স্থানীয় সদর ইউনিয়ন চেয়াম্যান ও সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ভানু লাল রায় ওই এলাকায় ময়লা না ফেলার জন্য বিরোধীতা শুরু করেন।
এ প্রেক্ষিতে কৌশলে হাই কোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়। মামলার বাদীর মৃত্যু হলেও আদালতের স্থগিতাদেশ এর কারণে এই অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল পৌরসভা প্রশাসক এডিসি মোছাম্মৎ শাহিনা আক্তার জানান,প্রথমে তিনি ময়লার ভাগাড় ও অধিগ্রহনকৃত স্থান পরিদর্শন করবেন আজকের ভেতর (বৃহষ্পতিবার),তারপর মহামান্য হাইকোর্টে দ্রুত স্থগিতাদেশ ( ব্রেকেট) প্রত্যাহার করার আবেদন করবো। এরপর সবাইকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করা হবে বলে তিনি শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের জানান।