নিজস্ব প্রতিনিধি: রত্ন রাজ রায় ২০২০ সালে যুক্ত হয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ঐক্য-বন্ধন এর সাথে। বর্তমানে তিনি ঐক্য-বন্ধনের কার্যকারি সদস্য হিসাবে দায়িত্বরত আছেন। বর্তমানে সংগঠনের সদস্য সংখ্যা শতাধিক। এ সদস্যের বেশিরভাগই নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও সদ্য মাধ্যমিক পার হওয়া তরুণ-তরুণী। তারা কার্যক্রম পরিচালনা করে যশোরের বিভিন্ন এলাকায়। বর্তমানে ঐক্য-বন্ধন অসহায় মানুষের আত্মকর্মসংস্থান, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও ক্রীড়াসামগ্রী বিতরণ, বৃক্ষরোপণ, মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ করে যাচ্ছে। এ ছাড়া বিনামূল্যে রক্তদান কর্মসূচি, গরিব ও অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো, বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সমাগ্রি বিতরন, ঈদে অসহায় পরিবারের মাঝে ঈদসামগ্রী বিতরণ, বাল্যবিবাহ, মাদক, দুর্নীতিবিরোধী প্রচারণামূলক,নারীদের সচেতন করতে উঠান বৈঠাক সহ বিভিন্ন  কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সংগঠনের মাধ্যমে প্রায় ৫ হাজার মানুষ সুবিধা পেয়েছে। তাদের কার্যক্রম নিজ গ্রামের গণ্ডি ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে আশপাশের একাধিক উপজেলায়।

তিনি আরও বলেন একজন সেচ্ছাসেবকের কাজ সম্পর্কে ,, স্বেচ্ছাসেবী কাজ বলতে সাধারণত স্বার্থহীন কাজকে বোঝায় যা একজন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী কোনো আর্থিক বা সামাজিক লাভের জন্য করে না, “একজন ব্যক্তি বা দল বা সংস্থার সুবিধাৰ্থে করে”।

[১]স্বেচ্ছাসেবী কাজ দক্ষতা বিকাশের জন্যও অতি পরিচিত এবং প্রায়ই সৎকর্ম প্রচার অথবা মানুষের জীবনমান উন্নত করার উদ্দেশ্যে করা হয়। স্বেচ্ছাসেবী কাজ, স্বেচ্ছাসেবক সেই সাথে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী উভয়ের জন্য সুবিধাজনক হতে পারে।

[২] এটি সম্ভাব্য কর্মসংস্থানের জন্য যোগাযোগ তৈরি করতেও করা হয়। অনেক স্বেচ্ছাসেবক তাদের কাজের ক্ষেত্র গুলোতে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত, যেমন চিকিৎসাশাস্ত্র, শিক্ষা বা জরুরি উদ্ধারকার্য। অন্যরা প্রয়োজন অনুযায়ী সেবা প্রদান করে, যেমন একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রতিক্রিয়া হিসাবে সেবা দান করা।

ঐক্য-বন্ধনের চলমান কার্যক্রমের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে খাতা-কলম ও অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ প্রদানসহ পরীক্ষার মেধাক্রম অনুসারে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা এবং শিক্ষার্থীদের উন্নতি-অবনতি নিয়ে তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করা। সংগঠনটি অধিকারবঞ্চিত শিশুদের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে এছাড়াও আমরা বর্তমানে সংগঠনের সদস্যদের নিজস্ব অর্থায়নে ক্রিয়েটিভ স্কুল চালু করেছি যেখানে বিদ্যালয়ের পাঠ্য বইয়ের কোন পড়া আমরা পড়ায় না।আমরা গ্রামে কেন্দ্রের মাধ্যমে সপ্তাহিক ছুটির দিনে ছোট শিশুদের নিয়ে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, সংগীত চর্চা, কুইজ প্রতিযোগিতা, বিভিন্ন আবিষ্কার নিয়ে চর্চা,হাতের লেখা শিক্ষা, ধর্মীয় জ্ঞান প্রদান সহ মানবিক ও সামাজিক কাজে অনুপ্রাণিত করি। একজন ক্রিয়েটিভ, স্মার্ট,দক্ষ সামাজিক ও মানবিক মানুষ তৈরী করতে সকল ধরণের কর্মকাণ্ড আমরা করা চেষ্টা করে যাচ্ছি।
চেষ্টা করি এই ছোট বয়সে আমরা যেটা জানতে পারিনি তাদেরকে সেটা জানানোর জন্য। তাদের ভবিষ্যৎ নিয়েও কথা হয় আমাদের তাদের যতটা সম্ভব দিকনির্দেশনা দিয়ে অনুপ্রপণিত করি।আমরা সবাই মানবিক কাজ গুলোকে সহযোগিতা করি কিন্তু সামাজিক কাজ গুলো করি না.

সংগঠনের কার্যক্রম ও পরিচালনা সম্পর্কে জানতে চাইলে রত্ন রায় বলেন, ‘আমাদের সংগঠন সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাসেবী,অরাজনৈতিক । নেই আলাদা কোনো ফান্ড। মূলত শিক্ষার্থীরা টিফিনের টাকা থেকে কিছু কিছু টাকা জমিয়ে এ সংগঠনের ফান্ডে জমা রাখে। তাই দিয়ে চলে আমাদের কার্যক্রম। তবে মাঝেমধ্যে সদস্যের বাইরেও কেউ কেউ নিজ থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। আসলে আমাদের ফান্ড আরেকটু শক্তিশালী হলে মানুষকে যেসব বিষয়ে সচেতন করে যাচ্ছি তা আরও জোরালোভাবে করতে পারব ইনশাআল্লাহ । আগামীতে আমরা সদস্যদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বিভিন্ন ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান করার চিন্তা করেছি যেটা থেকে সদস্যদের ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কমসংস্থান হবে বলে আশা করছি।
বর্তমানে সাম্প্রতিক সময়ে বন্যা কবলিত মানুষের জন্য আট শতাধিক পরিবারের মাঝে শুকনা ও রান্না করা খাবার বিতারন করছে এবং তাদের পূর্ণবাসন ও কর্মসংস্থানের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
বন্যার্তদের সহযোগিতায় তার অতুলনীয় অবদানের জন্য তিনি সংগঠনের কার্যকারী সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হন,এছাড়া তিনি বিভিন্ন মহলে সামাজিক ও মানবিক কাজের জন্য আলোচিত।
তার জীবনের লক্ষই হচ্ছে একজন দক্ষ স্বেচ্ছাসেবক হওয়া, মানবসেবামূলক কাজে নিজেকে সর্বদা নিয়জিত রাখা তিনি মনে করেন ভালো কাজের মধ্যে আত্মতৃপ্তি কাজের মধ্যে পরিপূর্ণতা আনে
ভালো কাজের ভিতরেই আছে শান্তি এবং আমার দ্বারা মানুষের উপকার হলে আমার নিজের ভিতের অন্য রকম ভালোলাগা কাজ করে।