মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের সদর উপজেলার ১নং খলিলপুর ইউনিয়নের পংমদপুর গ্রামে রেদুয়ানকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার ঘটনায় জড়িতরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছে এবং মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের পরিবার।
নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে ফয়সাল আহমেদ ২৬ সেপ্টেম্বর শহরের ওয়েস্টার্ন রেস্তোরাঁর হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলন করে হত্যাকারীসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকল আসামিদের গ্রেফতারের এবং বন্দুক উদ্ধারের দাবি জানান।
ফয়সাল আহমেদ লিখিত বক্তব্যে জানান, নিহত রেদুয়ান আমার আপন ছোট ভাই। গত ২৮/০৭/২০২৪ইং সকাল ৭ ঘটিকায় তখন আমাদের বাড়ির প্রায় সকল লোকজনই ঘুম থেকে মাত্র উঠেছেন। তখন আমি আমার ভাই রেদুয়ান এবং আমার আম্মা ঘরের উঠানের সামনের রাস্তায় ছিলেন। হঠাৎ আমরা দেখি একই গ্রামের বাসিন্দা আকবর, লেফাস, লিয়াকত, মুকিদ, আকমান, লায়েক, জয়তুন, জমশেদ, মিছিল, ছুফি, সুমন, ছায়াদ ও জাবেদ সহ প্রায় শ’কানেক লোক আমাদের বাড়ি ঘেরাও করে দিয়েছে। আমরা কিছু বুঝে উঠার আগেই লেফাছ সবাইকে হুকুম দেয় যে কেউ যেন পালাতে না পারে সবাইকে মেরে ফেলো। একথা বলতেই আমরা চিৎকার করি এবং সাথে সাথে আকবর তার হাতে থাকা বন্দুক দিয়ে আমার ভাই রেদুয়ানের মাথায় গুলি করে এবং সাথে সাথেই আমার ভাই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং আমি আর আমার আম্মা জোরে চিৎকার শুরু করি। আমাদের চিৎকার শুনে আমাদের পাশের বাড়ির সকল লোকজন এগিয়ে আসে। যারা আমাদের বাঁচানোর জন্য এগিয়ে এসেছিলো একসময় লেফাস আবার সবাইকে বলে যে যারা আসবে সবাইকে হত্যা করো। এ সময় আমার ফুফু মৌ বেগম এগিয়ে আসলে লেফাস তার হাতে থাকা বন্দুক দিয়ে গুলি করে মৌ বেগমের পায়ে এবং মৌ বেগম সেখানেই মাথা ঘুরিয়ে পড়েন।
অন্যদিকে আমাদের পাশের বাড়ির হোসেন আমাদের বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসলে আকমান নামের একজন তার বুকে গুলি করে। এই সময় আমাকে আর আমার আম্মাকে তারা লাতি, কিল মারে এবং চিৎকার না করার জন্য হমকি দেয়। আমাদের রক্ষা করতে এসে হাসিদ মিয়া নামক একজন গুলি এবং চুলফির আঘাতে তার একটি পা কেটে ফেলা হয়। হোসেন নামের একজন মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তার বুক থেকে গুলি বের করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন এবং সে পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যায় এবং আমার ভাইকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর আমরা মৌলভীবাজার মডেল থানায় নিহত রেদুয়ান এর মা রেশনা বেগম বাদী হয়ে ৭২ জনকে আসামী ও ১০/১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে ৩০/০৭/২৪ইং তারিখে একটি হত্যা মামলা দায়ের করি (মামলা নং ৩৯/২১৫ইং)। তাদের ৫/৬জন লোক জেল হাজতে আছে কিন্তু হত্যা মামলার প্রধান আসামী আকবর হোসেন এখনো পলাতক রয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি যে আকবর এবং আকমান দুবাই ও সৌদিতে বর্তমানে রয়েছে। তারা দেশ ও প্রবাস থেকে নিয়মিত বিভিন্ন মাধ্যমে আমাদের এখনো হুমকি ধামকি দিচ্ছে যে, আমরা যদি মামলা না তুলে আনি তাহলে পরবর্তীতে আবার আমাদের হত্যা করবে। আমরা এখনো ভয়ে আছি।
ভূক্তভোগীর পরিবার আরও জানান, সম্প্রতি চলতি মাসের ২৩/০৯/২৪ইং, বিকালে আসামী মুকিদ মিয়া, ছুফি মিয়া, জাবেদ মিয়া, লেফাস, লিয়াকত, ছায়াদ, জমশেদ আমাদের বাড়ির রাস্তার পাশে এসে আমাদের হুমকি দেয় যে, যদি আমরা মামলা না তোলি তাইলে আমাদের মেরে ফেলবে।
এ বিষয়ে ভূক্তভোগী মৌলভীবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে ফোনে সব ঘটনা বললে তিনি আমাদের কিছু করতে পারবেন না বলে ফোন কেটে দেন এবং পরবর্তীতে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হই।
পরবর্তীতে শেরপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই নিয়াজ মোহাম্মদ শরীফ সাহেবকে বলি তিনিও একই কথা বলে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে এস আই নিয়াজ মোহাম্মদ শরীফ সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকাকে জানান আমরা ৪ জনকে গ্রেফতার করেছি এবং প্রায় ৪৫ জন জামিনে আছেন। আসামি জামিনে থাকলে আমাদের কিছু করার নেই।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।