রংপুরে এক বছরে প্রকৃতির পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে খ্যাত বিপন্ন প্রজাতির ১৮ শকুনসহ বিপদসংকুল ৪০ প্রাণীকে উদ্ধার করে মুক্ত প্রকৃতিতে ছেড়ে দিয়েছে বনবিভাগ। প্রাণীগুলোর মধ্যে রয়েছে অজগর সাপ, লক্ষ্মী পেঁচা, ময়ূর, সাদা বক, পানকৌড়ি, বনবিড়াল, ঘড়িয়াল, গন্ধগোকূল ও শকুনপাখি। এসব প্রাণী বিভিন্ন সময়ে প্রতিকূল অবস্থায় মানুষের কাছে ধরা পড়ে।
পরে বন বিভাগ সেগুলোকে উদ্ধার ও সেবা-যত্ন করে মুক্ত প্রকৃতিতে ছেড়ে দিয়েছে। রংপুর বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৪ জুন ও চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল রংপুর নগরী থেকে দুটি পেঁচা উদ্ধার করে চিকিৎসা শেষে মুক্ত আকাশে উড়িয়ে দেওয়া হয়। ১০ জুন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি থেকে একটি ময়ূর উদ্ধার করা হয়। গত বছরের ২ জুলাই ও চলতি বছরের মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে লালমনিরহাট থেকে দুটি অজগর সাপ উদ্ধার করা হয়।
একই দিন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ থেকে একটি বনবিড়াল, ১০ আগস্ট রংপুরের পীরগাছা উপজেলা থেকে তিনটি সাদা বক ও দুটি পানকৌড়ি, ১ নভেম্বর রংপুর নগরী থেকে একটি বানর, ১৫ নভেম্বর কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী থেকে একটি শকুন, ২৭ নভেম্বর কুড়িগ্রাম থেকে দুটি শকুন, ২৪ ডিসেম্বর রংপুরের গঙ্গাচড়া থেকে একটি শকুন, এর আগের দিন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী থেকে একটি বানর, ২৯ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম থেকে দুটি শকুন উদ্ধার করা হয়। ৭ জানুয়ারি জলঢাকা থেকে একটি ও তারাগঞ্জ থেকে একটি শকুন উদ্ধার করা হয়। ১০ জানুয়ারি লালমনিরহাট থেকে একটি শকুন, ১৬ ফেব্রুয়ারি কুড়িগ্রাম থেকে একটি শকুন একই দিন রংপুরের তারাগঞ্জ থেকে একটি শকুন উদ্ধার করা হয়। ২ মার্চ গাইবান্ধা থেকে একটি ঘড়িয়াল, ১০ মার্চ কুড়িগ্রাম থেকে একটি গন্ধগোকুল, ১৬ মার্চ কুড়িগ্রাম থেকে আরেকটি গন্ধগোকুল, ৩১ মার্চ ও ৩০ এপ্রিল লালমনিরহাট থেকে বনবিড়াল উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া এসব প্রাণীকে চিকিৎসা শেষে মুক্ত প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বানর রংপুর চিড়িয়াখানায়, ময়ূর দিনাজপুরের রাম সাগর উদ্যানে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. মতলুবুর রহমান জানান, গত এক বছরে বিপন্ন প্রজাতির ১৮ শকুন উদ্ধার করে দিনাজপুরের শিঙ্গারা ফরেস্টের রেসকিউ সেন্টারে রাখা হয়। পরে সেগুলোকে আনুষ্ঠানিভাবে মুুক্ত আকাশে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। লালমনিরহাটে উদ্ধার হওয়া অজগর সাপ দুটি হাতিবান্ধা ইকোপার্কে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঘড়িয়ালকে ব্রহ্মপুত্র নদে ও অন্য প্রাণীগুলোকে স্বাধীন স্থানে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
রেঞ্জ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশে ছয় প্রজাতির শকুন দেখা যায়। এর মধ্যে চারটি স্থায়ী এবং দুটি পরিযায়ী। এগুলো হলো রাজ শকুন, গ্রিফন শকুন বা ইউরেশীয় শকুন, হিমালয়ী শকুন, সরুঠোঁট শকুন, কালা শকুন ও ধলা শকুন। সব প্রজাতির শকুনই সারা বিশ্বে বিপন্ন। তাই শকুন উদ্ধার হলে তাদের বিশেষ যত্ন নেওয়া হয়।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।