ভবদহ জলাবদ্ধ অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ,
বাড়ির উঠানে থৈথৈ পানি! 

আলিমুন খান, মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি: ভবদহ জলাবদ্ধ অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ এখনো কমেনি। এখনো অনেক বাড়ির উঠোনে পানি। বাশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা।

জলাবদ্ধ অঞ্চলে বেশ কিছু রাস্তা এখনো তলিয়ে আছে। এসকল রাস্তায় চলাচল করা দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। দুর্ভোগের আর এক নাম হয়ে দেখা দিয়েছে এই সড়কগুলো। ঘটছে দূর্ঘটনা। হাজার হাজার মানুষকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করতে হচ্ছে সড়কগুলোতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া-মশিয়াহাটী রাস্তার সরখোলা এলাকায় প্রায় আধা কিলোমিটার রাস্তা, উপজেলার ডুমুরতলা থেকে আন্ধা পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার ও বেদভিটা, বলারাবাদ গ্রামের রাস্তা এবং মণিরামপুরের হাটগাছা, সুজাতপুর, ডহর মশিয়াহাটি রাস্তার ওপর এখনো পানি রয়েছে। কেউ কেউ নৌকা ভাড়া করে, আবার কেউ কেউ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সরখোলার জলাবদ্ধ রাস্তা পার হচ্ছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, এখানে প্রায়ই মোটরসাইকেল উল্টে পানির মধ্যে পড়ে যায়। ব্যাটারির ক্ষতি হওয়ার ভয়ে ইজিবাইক পার হতে চায় না। বেশি ভাড়া দিলে অবশ্য চালকরা রাজি হন।

কথা হয় রাস্তায় আটকে যাওয়া নসিমনচালক তাপস বিশ্বাসের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাস্তায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্ত পানির নিচে থাকায় মালবোঝাই গাড়ি রাস্তায় পানির মধ্যেই উল্টে পড়ছে।
পথচারী দুধ ব্যবসায়ী তনু সরকার জানান, আধা কিলোমিটার রাস্তা যেতে তার প্রায় আধা ঘণ্টা সময় লেগেছে।

মণিরামপুর উপজেলার কুলটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখরচন্দ্র রায় বলেন, ভবদহ অঞ্চলের সব রাস্তা উঁচু করে নির্মাণ করতে হবে। রাস্তার দুইধারে গাইডওয়াল নির্মাণ করতে হবে। তাহলে জলাবদ্ধতার হাত থেকে রাস্তাগুলো রক্ষা করা সম্ভব হবে।

এব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম বলেন, ওই রাস্তার এস্টিমেট পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে রাস্তা নির্মাণ করা হবে। আর সরখোলায় ব্রিজের সমান উঁচু করে রাস্তা করা হবে।

এদিকে, ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে একাট্টা পানিবন্দি হাজার হাজার মানুষ। তাদের দাবি, ভবদহ নয়, আমডাঙ্গা খাল থেকে বøক অপসারণ করে পানি বেরুনোর গতি বাড়ালে বেঁচে যাবে পানিবন্দি হাজার হাজার পরিবার। তারা বলছেন, সামান্য কয়েকটি ব্লক খালটির তলদেশ ও দুইপাশ সরু করে পানির গতি বাধাগ্রস্ত করছে। এই সামান্য কয়েকটি  ব্লকের জন্য পানিবন্দি রয়েছে ভবদহ এলাকার হাজার হাজার পরিবার। স্থানীয়রা খালে নেমে কয়েকটি ব্লক অপসারণ করতেই পানির গতি বাড়ে। তারা বলছেন, যেহেতু ভৈরব নদের পানির চেয়ে জলাবদ্ধ বিলগুলোর পানি ৪-৫ ফুট উঁচু। ফলে খালের ব্লক অপসারণ করলে অল্প সময়ের মধ্যে নেমে যাবে বিলের পানি।