কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে এবার পাওয়া গেছে দুই কোটি ৩৩ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। শুধু টাকা নয়, সেখানে ছিল সোনা-রূপার অলঙ্কারের সঙ্গে ইউএস ডলারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা পাওয়া গেছে। আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত অন্তত দুই শতাধিক লোক টাকাগুলো গুণে শেষ করে।
গণনা শেষে কঠোর নিরাপত্তায় টাকাগুলো রূপালি ব্যাংকে নিয়ে যাওয়া হয়। সর্বশেষ গত ২৩ জানুয়ারি দানবাক্স খোলা হয়েছিল। সেবার দুই কোটি ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার ৫৪৫ টাকা পাওয়া যায়। এর আগে, গত বছরের ২২ আগস্ট সিন্দুক খোলা হয়েছিল। তখন এক কোটি ৭৪ লাখ ৮৩ হাজার ৭১ টাকা পাওয়া যায়। এবার আগেরবারের চেয়ে দানের টাকা কিছু কম পড়েছে।
সাধারণত তিন মাস পর পর পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলা হয়। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে এবার চার মাস ২৬ দিন পর শনিবার (১৯ জুন) খোলা হয়েছে। সকাল ৯টার দিকে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দান সিন্দুক খোলা হয়।
এরপর এগুলো বস্তায় ভরে মসজিদের দোতলায় গণনার কাজ শুরু করা হয়। টাকা গণনা কাজ তদারকি করছেন কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা মাজিস্ট্রেট (এডিএম) ফরিদা ইয়াসমিন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুলহাস হোসেন সৌরভ, মো. ইব্রাহীম, মাহামুদুল হাসান ও মো. উবায়দুর রহমান সাহেল, পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শওকত উদ্দিন ভূঞা প্রমুখ। টাকা গণনার কাজে মসজিদের কর্মকর্তা কর্মচারি ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।
এ সময় সিন্দুক খোলা কমিটির সদস্যরা ছাড়াও প্রশাসনের কর্মকর্তা, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ ও সার্বক্ষণিক দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদের সভাপতি মোহাম্মদ শামীম আলম দুপুরের দিকে টাকা গণনার কাজ দেখতে মসজিদে যান। তখন তিনি বলেন, পাগলা মসজিদে লোকজনের দানের টাকায় মসজিদ উন্নয়নসহ সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজও হচ্ছে।
এবার কোরোনা মোকাবেলায় বিভিন্ন হাসপাতালে পাগলা মসজিদ থেকে সাজ-সরঞ্জাম কিনতে অনুদান দেওয়া হয়। তাছাড়া গরিব অসহায় লোকজনের চিকিৎসাতেও সহযোগিতা করা হয়। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, পাগলা মসজিদের হিসাবে সব মিলিয়ে বর্তমানে ১৭ কোটি টাকার মতো রয়েছে।
কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ ভূমির ওপর এই মসজিদটি গড়ে উঠেছিল। সময়ের বিবর্তনে আজ এ মসজিদের পরিধির সাথে সাথে বেড়েছে এর খ্যাতি ও ঐতিহাসিক মূল্যও। এ মসজিদের আয় দিয়ে কমপ্লেক্সের বিশাল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। সম্প্রতি মসজিদটিকে ঘিরে চলছে ব্যাপক উন্নয়নযজ্ঞ।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।