পর্নো ভিডিও তৈরি ও অ্যাপের মাধ্যমে সরবরাহের মামলায় গ্রেফতার ধনকুবের রাজ কুন্দ্রার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ফাঁস হয়েছে। বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।

যে কারণে বিপদ বাড়ছে তার স্ত্রী বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেঠির।

স্বামীর পর্নো ব্যবসায় শিল্পা কোনোভাবে জড়িত কিনা, খতিয়ে দেখছে মুম্বাই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ।

কারণ স্বামীর অধিকাংশ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এই বলিউড অভিনেত্রী। তাই রাজের পর্নোগ্রাফি ছবির ব্যবসা সম্পর্কে শিল্পা কতটা জানেন, তারই তদন্ত করছে মুম্বাই পুলিশ।

যে কারণে শিল্পাকে ৫ ঘণ্টার বেশি সময় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই বক্তব্য দিয়েছেন শিল্পা। স্বামী পর্নো ব্যবসায় জড়িত নন বলে দাবি তার। তবে পুলিশের হাতে আসা ভিডিও ক্লিপগুলো কামোদ্দীপক বলে স্বীকার করেছেন তিনি। এর পরও স্বামীকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন শিল্পা।

জিজ্ঞাসাবাদের সময় রাজ কুন্দ্রার পাশেই শিল্পাকে বসিয়েছিল ক্রাইম ব্রাঞ্চ। যেখানে শিল্পা তথ্য দেন রাজ কুন্দ্রার ‘ভিয়ান ইন্ডাস্ট্রি’তে নির্দেশকের পদে বহুদিন কাজ করেছেন শিল্পা। কিছু দিন আগে এই পদ থেকে পদত্যাগ করেন এ বলিউড অভিনেত্রী।

সেই তথ্যসূত্র ধরে ভিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজের আয়-ব্যয়ের হিসাব খতিয়ে দেখছে ক্রাইম ব্রাঞ্চ। তারা শিল্পার ব্যাংক অ্যাকাউন্টও খতিয়ে দেখছে। ভিয়ান ইন্ডাস্ট্রি থেকে শিল্পা কেমন সুবিধা নিয়েছেন তা বের করার চেষ্টা করছেন।

এদিকে ভারতীয় বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমের দাবি, রাজের ‘হটশটস’ অ্যাপের ব্যাপারে ভালোভাবেই জানা ছিল শিল্পার। যদিও তিনি বিষয়টি লুকাচ্ছেন।

রাজের ফাঁস হওয়া হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের মাধ্যমে মুম্বাই পুলিশ জানতে পেরেছে, এই অ্যাপে ২০ লাখের বেশি গ্রাহক ছিলেন। ১২১টি ভিডিও ১২ লাখ ডলারে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০ কোটি ১৭ লাখ টাকা) বিক্রি করতে চলেছিলেন রাজ কুন্দ্রা! ‘হটশটস’ অ্যাপ বাতিল করে দিয়ে ব্যবসা চালানোর জন্য ‘বলিফেম’ নামে একটি অ্যাপ বাজারে আনার পরিকল্পনা করেছিলেন রাজ।

পর্নোগ্রাফির ব্যবসা করে পাওয়া অর্থ রাজ অনলাইন জুয়ায় খরচ করতেন বলে দাবি পুলিশের। পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে যে, জুয়া কোম্পানি থেকে একটা মোটা অঙ্ক রাজের অ্যাকাউন্টে এসেছে।

মুম্বাই পুলিশ বলছে, ইয়েস ব্যাংক এবং আফ্রিকার ইউনাইটেড ব্যাংকে রাজের দুটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ওগুলো খতিয়ে দেখলেই ওই অর্থ কোথায় খরচ হয় তার খোঁজ মিলবে।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, রাজ গ্রেফতারের পর অনেক তথ্য-উপাত্ত মুছে ফেলেছেন শিল্পা ও রাজের সহকর্মীরা।

এদিকে শুক্রবার রাজ-শিল্পার মুম্বাইয়ের জুহু এলাকার বাড়ি তল্লাশি করে পুলিশ।

রাজ-শিল্পার জুহুর এলাকার বাড়ি তল্লাশিতে ৫১টি পর্নো ভিডিও উদ্ধার হয়েছে। এসব ভিডিওর মধ্যে ৩৫টি ‘হটশটস’ অ্যাপেও পাওয়া গেছে।

পুলিশ বলছে, রাজের গ্রেফতারের পর তার বাড়ি ও অ্যাপ থেকে অনেক তথ্য মুছে ফেলা হয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহারে সেসব তথ্য পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

এদিকে রাজের গ্রেফতারির বিরুদ্ধে বোম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তার আইনজীবী।

রাজের আইনজীবীর অভিযোগ, তার মক্কেলের গ্রেফতার অবৈধ। ২৩ জুলাই রাজ আর এই মামলায় অন্যতম মূল অভিযুক্ত রায়ন থার্পের রিমান্ড শেষ হওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু ক্রাইম ব্রাঞ্চের আবেদনে রাজ আর তার সঙ্গীর রিমান্ড ২৭ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এখনো পর্যন্ত পর্নোগ্রাফি ভিডিওর র্যা কেটে রাজ কুন্দ্রাসহ ১১ জনকে মুম্বাই পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি, আনন্দবাজার পত্রিকা