ড: ইনামুল হক একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশি নাট্যকার। পাশাপাশি একজন লেখক ও শিক্ষক। দীর্ঘ বছর ধরে তিনি অভিনয়ের সঙ্গে জড়িত। অসুস্থ থাকায় আজ ১১ অক্টোবর তিনি না ফেরার দেশে চলে যান।

সূত্র থেকে জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বরেণ্য এই অভিনেতা।

জন্ম ১৯৪৩ সালের ২৯ মে ফেনী সদরের মটবী এলাকায়। তার বাবা ওবায়দুল হক ও মা রাজিয়া খাতুন। ফেনী পাইলট হাইস্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকার নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি এবং পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগ থেকে অনার্স ও এমএসসি সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি লাভ করেন।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) তিনি দীর্ঘ ৪৩ বছর শিক্ষকতা করেন, এই দীর্ঘ সময়ে ১৫ বছর রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান এবং দুই বছর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

নটরডেম কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি প্রথম মঞ্চে অভিনয় করেন। ফাদার গাঙ্গুলীর নির্দেশনায় তিনি ‘ভাড়াটে চাই’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন। ১৯৬৮ সালে বুয়েট ক্যাম্পাসেই ‘নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়’র যাত্রা শুরু হয়। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন, দলটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন এনামুল হক। এই দলের হয়ে প্রথম তিনি মঞ্চে ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রো’,দেওয়ান গাজীর কিসসা’, ‘নূরুল দীনের সারা জীবন’সহ আরও বহু নাটকে অভিনয় করেন।

১৯৯৫ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘নাগরিক নাট্যাঙ্গন’। এই দলের হয়ে তিনি মঞ্চে অভিনয় করেন ‘জনতার রঙ্গশালা’,‘সরমা’সহ আরও বেশ কয়েকটি নাটকে। ২০০০ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘নাগরিক নাট্যাঙ্গন ইনস্টিটিউট অব ড্রামা’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এর অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

তার অভিনীত প্রথম টিভি নাটক মোস্তফা মনোয়ার পরিচালিত ‘মুখরা রমনী বরশীকরণ’। তার লেখা প্রথম নাটক ‘অনেকদিনের একদিন’ নির্মাণ করেন আব্দুল্লাহ আল মামুন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিটিভির প্রথম নাটক ‘বাংলা আমার’ এবং একুশের প্রথম নাটক ‘মালা একশত মালঞ্চের’ তারই লেখা ছিল।