অন্য ওপেনাররা ধুঁকছেন রান করতে। ধারাবাহিকতার অভাবে যেখানে তাদের আত্মবিশ্বাস তলানিতে, সেখানে পুরো দলের মধ্যেই সবচেয়ে ধারাবাহিক মোহাম্মদ নাঈম শেখ। বিশ্বকাপে এবার তিন ম্যাচে করেছেন দুই ফিফটি। এই বছর দলের সর্বোচ্চ রানও তার। এমন একজনকে নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকার কথা নয়। কিন্তু তাকে নিয়ে অস্বস্তির জায়গা তার স্ট্রাইক রেট!
২৫ ম্যাচে নাঈমের রান চার ফিফটিতে ৬৯৬। গড় ২৯, টি-টোয়েন্টিতে তা খুব একটা খারাপ নয়। তবে স্ট্রাইক রেট মাত্র ১০৮.৪১। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ২৫ ইনিংস খেলা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে যা দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের সবশেষ দুই সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে একশর বেশি স্ট্রাইক রেটে রান করেন কেবল দুবার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে, ২৯ বলে ৩০। আর নিউ জিল্যান্ড সিরিজে সবশেষ ম্যাচে ২১ বলে ২৩। ওই দুই সিরিজ অবশ্য ব্যাটিং প্রতিকূল উইকেটে কাজটা কঠিন ছিল। কিন্তু অন্য সব উইকেটেও তার স্ট্রাইক রেট খুব ভালো নয়। চার-ছক্কা তার ব্যাট থেকে কম আসে না। তবে সঙ্গে ডট বলও কম থাকে না!
বিশ্বকাপের দুই প্রস্তুতি ম্যাচে রান ছিল না তার ব্যাটে। জায়গা হারান স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে। সেই ম্যাচে বাংলাদেশের হারের পর একাদশে ফেরেন ওমানের বিপক্ষে। চারটি ছক্কা ও তিনটি চারে ৫০ বলে করেন ৬৪ রান। ১২৮ স্ট্রাইক রেটে ইনিংসটি সবশেষ ১৬ ম্যাচে তার সবচেয়ে গতিময় ইনিংস। পাপুয়া নিউ গিনির বিপক্ষে শূন্য রানে ফেরার পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সুপার টুয়েলভের ম্যাচে ৬ চারে ৫২ বলে করেন ৬২। তিনি এক প্রান্ত আগলে রাখেন। আরেক প্রান্তে ঝড় তোলেন মুশফিকুর রহিম। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ করে ২০ ওভারে করে ১৭১ রান।
শ্রীলঙ্কা পরে সেই রান পেরিয়ে যায়। ম্যাচ শেষে প্রশ্ন, ওপেনিংয়ে ৫২ বলে ৬২ রানের ইনিংস আসলে কতটা কার্যকর? ৫২ বলে ৮০-৮৫ না হোক, অন্তত ৭২-৭৫ হলেও তো দলের রান আরেকটু সমৃদ্ধ হয়! নাঈম অবশ্য সেসব ভাবছেন না। বিসিবির ভিডিও বার্তায় সোমবার নাঈম বলেন, রান করাই তার কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। “প্রতিটি ব্যাটসম্যানেরই একটা ব্যক্তিগত পরিকল্পনা থাকে। আমারও আছে। আর উইকেট বুঝে নিয়েই তো খেলতে হয়।
উইকেট, কন্ডিশন এগুলো দেখে পরিকল্পনার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে এরপর ব্যাটিং করতে হয়।” “সব সময় আমি চাই রান করতে। রান করলে যে কোনো ব্যাটসম্যানের আত্মবিশ্বাস খুব ভালো থাকে। আমি সব সময়ই চেষ্টা করি রান করার জন্য। কোনো টুর্নামেন্ট থাকলে অন্য সময়ের চেয়ে মনোযোগ বেশি থাকে। ঘরোয়া ক্রিকেটের চেয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রান করার জন্য মনোযোগ বেশি রাখতে হয়। রান করলে এমনিতেই ব্যাটসম্যানরা আত্মবিশ্বাসী থাকে।”
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে সুযোগ হাতছাড়া হওয়ায় বেশ হতাশ নাঈম। তবে সেই হতাশা ভুলে সামনে তিন বিভাগেই ভালো করার প্রত্যয় শোনালেন তিনি। “গত ম্যাচে কোনো একটা কারণে আমরা ভুল করেছি, যে জন্য জিততে পারিনি। সামনে ‘ম্যাচ বাই ম্যাচ’ মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করব। তিনটা বিভাগেই আমাদের ভালো করার লক্ষ্য থাকবে।”
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।