রাসেল ডমিঙ্গো চিৎকার করে একেকটা লক্ষ্যের কথা বলছেন, ব্যাটসম্যান-বোলাররা ব্যস্ত সেটা পূরণ করে এগিয়ে থাকতে। কখনও চার-ছক্কা হচ্ছে, কখনও ক্যাচ। ওটা আউট কিনা, সেখানে ফিল্ডার থাকবে কিনা, এসব নিয়ে তুমুল খুনসুটি। অনুশীলনে দেখা গেল সুখী একটি দলের প্রতিচ্ছবি। দেখে বোঝার উপায় নেই, এই দলটিই চাপে আছে ভীষণ। আশার ছবিরও ফুটে উঠল তাতে। শ্রীলঙ্কার কাছে হারের ধাক্কা ভুলে হয়তো ইংল্যান্ডের জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ।
পরীক্ষা অবশ্য আগের ম্যাচের চেয়ে কঠিন হওয়ার কথা আরও। টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল ইংল্যান্ড, টুর্নামেন্টের ফেভারিটদের কাতারেও আছে তারা। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উড়িয়ে শুরু করেছে টুর্নামেন্টের পথচলা। সেই দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ মাঠে নামছে বুধবার। খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় বেলা চারটায়।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ তো বটেই, এই সংস্করণেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম খেলবে বাংলাদেশ। এই লড়াইয়ের আগে দুই দলের অবস্থান দুই প্রান্তে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ক্যারিয়ানদের ৫৫ রানে গুঁড়িয়ে দিয়ে বিশ্বকাপ পুনরুদ্ধার অভিযান শুরু করেছে ইংল্যান্ড। হার দিয়ে প্রাথমিক পর্ব শুরুর পর মূল আসরও হার দিয়েই শুরু করেছে বাংলাদেশ। অনেক প্রশ্ন, অনেক চাপকে সঙ্গী করে তারা নামছে ইংলিশ-চ্যালেঞ্জের সামনে।
ধারাবাহিকতা নেই ব্যাটসম্যানদের। কিছুটা আছে যার, সেই মোহাম্মদ নাঈম শেখের সমস্যা স্ট্রাইক রেটে। কাজে লাগানো যাচ্ছে না পাওয়ার প্লে। শেষটাতেও হচ্ছে না বড় রান। স্কটল্যান্ডকে বাগে পেয়েও তাদের বিপক্ষে হারে বড় দায় ছিল শেষের বাজে বোলিংয়ের। এর পুনরাবৃত্তি হয়েছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও।
শেষ ম্যাচে লিটন দাস গুরুত্বপূর্ণ দুটি ক্যাচ ছাড়ার পর সামনে এসেছে ফিল্ডিংয়ে ব্যর্থতা। এত সমস্যার মধ্যেও কোনো সন্দেহ নেই, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, বিশেষ করে দুই জন থাকবেন আতশ কাঁচের নিচে। লিটন কোথায় ফিল্ডিং করছেন, কী করছেন না করছেন, সেদিকে থাকবে একটা চোখ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫ রানে হারা ম্যাচে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল মাহমুদউল্লাহর বোলিং পরিবর্তন। বোলারদের কীভাবে ব্যবহার করছেন, বিশেষ করে ইংল্যান্ডের বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের থামাতে কী করছেন, অনেকেই সেটা দেখতে কৌতুহল নিয়ে অপেক্ষায় থাকবেন।
হার দিয়ে মূল পর্ব শুরু করা বাংলাদেশ গ্রুপের সম্ভাব্য সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে। ইংল্যান্ডের দৃশ্যমান কোনো দুর্বলতা নেই। বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানে ঠাসা ব্যাটিং লাইন আপ, এক প্রান্ত আগলে রাখার প্রয়োজন হলে আছেন দাভিদ মালান। বেশ কজন অলরাউন্ডার থাকায় ব্যাটিং গভীরতা অতলস্পর্শী। গতিময় বোলারদের সঙ্গে আছেন সুইংয়ে পারদর্শী পেসার। স্পিনে আছেন মইন আলি ও আদিল রশিদের মতো পরীক্ষিত দুই জন। ইংল্যান্ডের আগের ম্যাচে এই দুই জনে দাঁড়াতেই দেননি ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানদের।
৪ ওভারে ১৭ রান নিয়ে ২ উইকেট নেন অফ স্পিনার মইন আলি। লেগ স্পিনার রশিদ হাজির হয়েছিলেন আরও বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে। তিনি ৪ উইকেট নেন স্রেফ ২ রানে। ইংল্যান্ডের এমন শক্তিশালী হয়ে ওঠার শুরু ২০১৫ বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর। ওয়েন মর্গ্যানের নেতৃত্বে পুরোপুরি পাল্টে যায় দলটি। ডরভয়হীন ক্রিকেট খেলে হয়ে ওঠে রীতিমত ভীতিকর। সেই শুরুর সময়টায় ইংল্যান্ডের পেস বোলিং কোচ ছিলেন ওটিস গিবসন।
এখন বাংলাদেশে সেই একই দায়িত্ব পালন করা সাবেক ক্যারিবিয়ান পেসার আশা দেখাচ্ছেন দলকে। তার মতে, ইংল্যান্ডের আগ্রাসী ক্রিকেটের মাঝেই আসবে সুযোগ, ঠাণ্ডা মাথায় সেটা লুফে নিতে হবে। তেমন কিছু হলে সেটা কাজে লাগানোর সামর্থ্য আছে বাংলাদেশের। ওয়ানডেতে ২০১১ ও ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের অভিজ্ঞতা আছে তাদের। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও তেমন কিছু করার অপেক্ষায় বাংলাদেশ।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।