বাজারে আমরা হরহামেশাই ২ টাকা, ৫ টাকা থেকে নিয়ে ১০০, ২০০, ৫০০ কিংবা ১০০০ টাকার নোট দেখতে পাই। তবে আপনি কি কখনো ‘শূন্য (০)’ টাকার নোট দেখেছেন? শুনতে অবাক মনে হলেও ২০০৭ সালে ভারতে ছাপানো হয়েছিল ‘শূন্য (০)’ টাকার নোট।

কিন্তু কেন? চলুন জেনে নেওয়া যাক– ২০০৭ সালে ‘শূন্য (০)’ টাকার ওই নোট ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ছাপেনি; ছেপেছিল দক্ষিণ ভারতের একটি অলাভজনক সংস্থা। ভারতীয় প্রদেশ তামিলনাড়ু-ভিত্তিক ‘৫ম স্তম্ভ’ নামের ওই এনজিও ত্রিশ লাখের বেশি শূন্য টাকার নোট ছাপিয়েছিল। নোটগুলো ছিল হিন্দি, তেলেগু, কন্নড় এবং মালায়ালাম ভাষায়। মূলত দুর্নীতি ও কালো টাকার বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করতেই ছাপানো হয়েছিল এই নোট। দুর্নীতি ও কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শূন্য টাকার নোটকে বানানো হয়েছিল অস্ত্র। বিভিন্ন ভাষায় মুদ্রিত এই নোটগুলোর উপরে লেখা ছিল, ‘কেউ যদি ঘুষ চায়, তবে এই নোটটি দিন এবং বিষয়টি আমাদের জানান!’ সংগঠনটি শুধু তামিলনাড়ুতে ২৫ লাখের বেশি নোট বিতরণ করেছিল। ভারতজুরে বিতরণ করা হয়েছিল ৩০ লাখের বেশি নোট। ৫ম স্তম্ভ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা বিজয় আনন্দ এই প্রচারটি শুরু করেছিল। তিনি তার স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে রেল স্টেশন থেকে প্রতিটি বাজারে, চৌরাস্তায়, বাসস্ট্যান্ডে শূন্য টাকার নোট বিতরণ করেছিলেন। নোটের পাশাপাশি জনগণকে একটি হ্যান্ডবিল দেয়া হয়েছিল, যার মধ্যে মানুষের অধিকার সম্পর্কিত তথ্য ছাপানো ছিল। ৫ম স্তম্ভ নামের এই সংগঠনটি গত পাঁচ বছর ধরে দক্ষিণ ভারতে ১ হাজার ২০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করছে। এছাড়া তারা ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যের শূন্য টাকার একটি নোট তৈরি করেছিল, যেখানে জনগণের স্বাক্ষর নেয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৫ লাখের বেশি লোক এতে স্বাক্ষর করেছে। এই নোটে লেখা আছে, ‘আমি ঘুষ নেব না, দেব না।’