স্টাফ রিপোর্টারঃ ঠাকুরগাঁও সুগার মিলস্ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন রেজি: ৭৮৬ এর কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও নির্বাচন না হওয়ায় সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ ও চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। তারা সংগঠনের গঠনতন্ত্র মেনে অবিলম্বে নির্বাচন আয়োজনের জোর দাবি জনিয়েছেন।
গতকাল বুধবার চিনিকল এলাকায় সংগঠনের একাধিক সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ১৭ এপ্রিল কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। এ অবস্থায় মেয়াদ উত্তীর্ণের বিষয়টি দিনাজপুর আঞ্চলিক শ্রম দপ্তরের রেজিষ্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন ও উপ পরিচালক মোহা: আবুল বাশারের নজরে আনা হলে তিনি গত ২৬ অক্টোবর কমিটির সভাপতি-সম্পাদক বরাবর একটি পত্র প্রেরন করেন। পত্রে উল্লেখ করা হয় কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও নির্বচান অনুষ্ঠিত হয়নি,
১৯-২০ সালের বার্ষিক আয়-ব্যয় বিবরনী ওই দপ্তরে দাখিল করা হয়নি। বর্তমানে ইউনিয়নটি মেয়াদ উত্তীর্ণ ও অনির্বাচিত কমিটি দ্বারা পরিচালিত করা হচ্ছে বিধায় বাংলাদেশ শ্রম আইন ও অত্র সংগঠনের গঠনতন্ত্রের নির্দেশনা লঙ্ঘিত হচ্ছে তাই ৭ দিনের মধ্যে সাধারণ সভা, নির্বাচন অনুষ্ঠান ও আয়-ব্যয় হিসাব প্রস্তুত করে দিনাজপুর আঞ্চলিক শ্রম দপ্তরের উপ পরিচালক বরাবর জানাতে বলা হলেও অদ্যবাধি তা করা হয়নি। পরক্ষনে প্রথমের দিকে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি-সম্পাদক ৭ দিন বাড়িয়ে ১৫ দিনের মধ্যে নির্বাচনের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা করতে চাইলেও বর্তমানে তারা এ মুহুর্তে নির্বাচন করলে সমস্যা হবে তা জানিয়ে পত্রের মাধ্যমে নির্বাচন করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন।
এ অবস্থায় সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন না হওয়ায় সদস্যদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও চাপা উত্তেজনা চরম আকার ধারন করেছে। এ অবস্থায় চললে যে কোন সময় শ্রমিক অসন্তোষ থেকে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে।
কার্যনির্বাহী সদস্য মো: আব্দুর রহমান, মাসুদ হোসেন, আজিজুর রহমানসহ বেশকয়েকজন সদস্য জানান, আমরা মেয়াদ উত্তীর্ন এই কমিটির যাবতীয় কার্যক্রম আইন ও গঠনতন্ত্র বহির্ভুত বলে অবিলম্বে নির্বাচন অনুষ্ঠানের যাবতীয় কার্যক্রম গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
সংগঠনের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর আলম সরকার নবাব বলেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটিকে আমরা মানি না। সংগঠনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ চিনিকল শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি মো: আব্দুল কুদ্দুস বলেন, নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় আমি গত ১৮ অক্টোবর দিনাজপুর আঞ্চলিক শ্রম দপ্তরের উপ পরিচালক বরাবর লিখিতভাবে অভিযোগ করলে ২৮ অক্টোবর আমাকে, মেয়াদ উত্তীর্ন কমিটির সভাপতি-সম্পাদক এবং ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে দিনাজপুরে হাজির হতে বলা হয়।
সেখানে সকলে হাজির হলে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি-সম্পাদক নির্বাচন দিতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। বিগত বছরে কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার মাসখানিক পার না হতেই দিনাজপুর আঞ্চলিক শ্রম দপ্তরের উপ পরিচালক মো: আবুল বাশার তার নির্দেশনায় ১৭ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে বাধ্য করান। অথচ এ বছর কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণের সাড়ে ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন না করায় তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
মেয়াদ উত্তীর্ন কমিটির সভাপতি মো: উজ্জল হোসেন বলেন, আমরা উভয় পক্ষ ম্যানেজমেন্ট সহ দিনাজপুরে গেছিলাম। যেহেতু মাঠ পর্যায়ে কাজের চাপ বেশি, সেহেতু আপাতত নির্বাচন না দিতে অনুরোধ করেছি। এ মুহুর্তে নির্বাচন করলে মিলের ক্ষতি হবে। উপ পরিচালক আমাদের মৌখিকভাবে জানিয়েছেন ডিসেম্বরের মধ্যে একটা সাধারণ সভা করেন নির্বাচন না হয় পরে করা যাবে। পরবর্তিতে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিলে আপনাদের জানিয়ে দেওয়া হবে।
দিনাজপুর আঞ্চলিক শ্রম দপ্তরের রেজিষ্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন ও উপ পরিচালক মোহা: আবুল বাশারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে সকল পক্ষকে দ্রæত পত্র প্রদানের মাধ্যমে পরবর্তী নির্দেশনা প্রদান করা হবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।