যশোর পৌরসভার অন্তর্গত মুরলীতে যশোর খুলনা মহাসেকের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত ঐতিহাসিক জোড়া শিব মন্দির। সেন রাজবংশের সর্বশেষ রাজা ছিলেন লক্ষ্মণ সেন। তিনি শিব ভক্ত পরায়ণ নৃপতি ছিলেন। রাজা লক্ষ্মণ সেন কর্তৃক বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বহু মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়।
এর মধ্যে যশোর জেলার মুরলী গ্রামের জোড়া শিব মন্দির দুটি খুবই মনোরম। রাজা লক্ষ্মণ সেন শিব ভক্ত প্রজাদের জন্য ভৈরব নদের পশ্চিম তীরে ১১৮৯ খ্রীষ্টাব্দে পাশাপাশি এই মন্দির দুইটি প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দিরের মধ্যে বেদীর উপর স্থাপন করেন যোগাসনে অধিষ্ঠিত প্রস্তর নির্মিত শিব(মহাদেব) মূর্তি।
পাশে শুয়ে আছে বৃষভ বা বলদ। সেই হিসাবে মন্দিরের বয়স হয় প্রায় ৮২৩ বছর। এত বৎসর পার হলেও নির্মাণ শৈলী এত মজবুত এবং স্থানীয় জনগণের রক্ষা করার কারণে সেই প্রমাণে ক্ষয় প্রাপ্ত হয়নি। মন্দিরের অদূরে পূজারীর বসবাসের স্থান, সম্মুখে ভক্তদের অনুষ্ঠানের জন্য ছিল বৃহৎ খোলা চত্বর।
প্রতিষ্ঠিত মন্দিরের সম্পত্তি দেবোত্তর হিসাবে রেকর্ডভুক্ত হয়। মন্দির দুটি প্রত্নতাত্ত্বিক এবং ধর্মীয় ঐতিহ্য বহন করে। এর নির্মাণ কুশলতা অতীব দৃষ্টিনন্দন। এই মন্দিরের উচ্চতা প্রায় ৪০ ফুট, ১৫ ফুট করে দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ। চুড়ায় ত্রিশুল, তার নিচেই ১টিতে গণেশ, একটিতে শিব, লাইন ধরে যুক্ত চড়াই এবং টিয়া পাখি,
কারুকার্য খচিত দরজা ২টি প্রায় পূর্বমুখী এবং অপর ২টি প্রায় উত্তর ও দক্ষিণমুখী। দরজার উপর লড়াই করছে ২টি অশ্ব এবং সুদৃশ্য পদ্ম। মন্দির দুটি কোনার্কের (উড়িষ্যায়) সূর্য্য মন্দিরের সাথে তুলনীয়। মন্দিরের গায়ে লেখা আছে ১১৮৯ ইং সন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।