বোয়ালমারী (ফরিদপুর) বোয়ালমারী: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত নৌকার পাঁচ প্রার্থী সংবাদ সম্মেলন করেছে। বুধবার (২৯.১২.২১) দুপুরে বোয়ালমারী ওয়াপদা মোড়ে অবস্থিত একটি রেস্টুরেন্টে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত পরাজিত ওই পাঁচ প্রার্থী অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের কোনরূপ সহযোগিতা করেনি। প্রত্যেক প্রার্থী তাদের ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটির ভোট পর্যন্ত পাননি বলে অভিযোগ করেন। প্রত্যেক ওয়ার্ড কমিটির সদস্য সংখ্যা ৫১ জন। অথচ ওইসব ইউনিয়নের বিভিন্ন কেন্দ্রে নৌকার ভোট দুই অঙ্ক
স্পর্শ করেনি। নৌকার প্রার্থীদের পরাজয়ের পেছনে দলীয় নেতৃবৃন্দ দায়ী বলে পরাজিত ওই পাঁচ প্রার্থী অভিযোগ করেন। তারা আরও বলেন, প্রত্যেক ইউনিয়নেই উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের একজন করে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিল।
আমরা এ বিষয়গুলো জানিয়ে আমাদের সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করবো।
এ সময় চতুল ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী এবং ইউনিয়ন আ’লীগের সহসভাপতি খন্দকার আবুল বাশার বলেন, আমি উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে বার বার সহযোগিতার জন্যে গেলে তারা আমাকে কোন সহযোগিতা করেননি এবং তাদের
অনুসারিরাই উপজেলা এবং ইউনিয়ন আ’লীগের পদে থাকা ব্যক্তিরাই নৌকার বিপক্ষে চশমা প্রতিকের পক্ষে কাজ করেছে। চতুল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আমি পাঁচ ভোট পেয়েছি।
অথচ ওই কেন্দ্রের পাশে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বাড়ি। আর ওই কেন্দ্রে ভোট দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম খান, উপজেলা আ’লীগের সদস্য মো. জালাল সিকদারসহ কোনো ওয়ার্ডের নেতাকর্মীই নৌকার পক্ষে ভোট চায়নি। তারা বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলামের চশমা প্রতীকের পক্ষে
কাজ করেছেন।
রূপাপাত ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী এবং জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি মো. মাহব্বত আলী বলেন, আমার ইউনিয়নের সভাপতি মো. কোবাদ হোসেন মোল্যা নিজে আমার পক্ষে কাজ না করে পাশের ইউনিয়নের একটি চায়ের দোকানে বসে
থাকতেন। আর তার ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম আমার প্রতিদ্বন্দ্বী এবং ইউনিয়ন সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু মোল্যার ছেলে মিজানুর রহমান সোনার পক্ষে কাজ করেছেন। তিনি আরও বলেন, মনোনয়ন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে মনোনয়ন বাণিজ্যের প্রশ্ন্ই আসে না। যারা মনোনয়ন পাননি তারাই এই অপপ্রচার রটিয়ে বেড়াচ্ছে।
ময়না ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত প্রার্থী এবং জেলা মৎস্য লীগের সদস্য পলাশ বিশ্বাস বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির মো. সেলিম, সদস্য আবুল খায়ের এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর সিদ্দিকী আমাকে কখনোই নির্বাচনে সহযোগিতা করেননি। জাফর সিদ্দিকীকে বারবার বলার পরেও তিনি দলীয় কোন লোক আমার নির্বাচনী
প্রচারাভিযানে দিতে পারবেন না বলে জানান। সেলিম এবং জাফর চাচা-ভাতিজা মিলে প্রতিপক্ষ হাতপাখার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন।
দাদপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত প্রার্থী এবং ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি শেখ সাজ্জাদুর রহমান হাই বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। ডা. জলিল, দাদপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনসহ আ’লীগের পদধারী কোন নেতাই নৌকার পক্ষে কাজ না করে বিদ্রোহীর পক্ষে কাজ করেছেন।
বোয়ালমারী সদর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত প্রার্থী এবং ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আ. ওহাব মোল্যা তারা বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের প্রার্থী ছিলেন ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল হক শেখ।
বারবার বলার পরেও উপজেলা আওয়ামী লীগের ওই দুই নেতা আব্দুল হককে বসানোর জন্য কোনো চেষ্টাই করেননি, নৌকাকে পরাজিত করার জন্য আব্দুল হককে সব ধরণের সহযোগিতা করেছেন এবং আমাকে নির্বাচনে কোনো সার্বিক সহযোগিতা করেননি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চতুল ইউনিয়নের নৌকার পরাজিত প্রার্থী খন্দকার আবুল বাশার, রূপাপাত ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী মহব্বত আলী, ময়না ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী পলাশ বিশ্বাস, দাদপুর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী শেখ সাজ্জাদুর রহমান হাই, বোয়ালমারী সদর ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী আ. ওহাব মোল্যা তারা প্রমুখ।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।