নান্দনিকতার ছোঁয়ায় যশোর শহর সেজেছে সৌন্দর্যের নতুন মাত্রায়

ওয়েব ডেস্কঃ বাসস

শহরজুড়ে নান্দনিকতার ছোঁয়া যশোর পৌরসভার উন্নয়নে যোগ করেছে এক ভিন্নমাত্রা। গত কয়েক বছর ধরে অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি পৌর এলাকার সৌন্দর্যও বেড়েছে। ফুটপাতের পাশে লাগানো ফুলসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ শহরের শোভা বৃদ্ধি করেছে। এমনকি কয়েকটি পয়েন্টে নির্মিত ভাস্কর্যও শহরের উন্নয়নের চিত্র করে তুলেছে আরও নান্দনিক। এসব ছাড়াও দৃষ্টিনন্দন ল্যাম্প পোস্ট ও রোড ল্যাম্প গোটা শহরকে করেছে আলোকিত।
পৌরসভা কার্যালয় সংলগ্ন জিরো পয়েন্টে সম্প্রতি নির্মিত হয়েছে নান্দনিক শৈলীর দু’টি ভাস্কর্য। এর একটি হলো যশোরের ঐতিহ্য খেঁজুরগাছ। আর অন্যটি এর বিপরীত পাশে আল্লাহু লেখা ভাস্কর্য। এছাড়া বছরখানেক আগে শহরের চারখাম্বায় নির্মাণ করা হয় শেখ রাসেলের ভাস্কর্য। এদিকে, শহরের একসময়ের ‘বাঁশহাটা’ নামক রোডের সড়ক বিভাজকে আধুনিক ডিজাইনের ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন কওে সড়কটির শোভা বাড়ানো হয়েছে। এর পাশাপাশি এখানে রোপণ করা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছও।
রাতের বেলায় সড়ক বাতিগুলো জ¦লে উঠলে সৃষ্টি হয় এক ভিন্ন দৃশ্যপটের। সড়কটি তখন যেন রূপ নেয় ভিনদেশি কোনো উন্নত শহরের। আর এমনটি হওয়ায় স্থানীয়ভাবে সড়কটির নামকরণ হয়েছে ‘প্যারিস রোড’। ফলে সন্ধ্যার পর থেকে রাস্তাটি নাগরিক বিনোদনের একটি কেন্দ্রে পরিণত হয়। রাতে শহরবাসীদের অনেকেই এখানে বেড়াতে আসেন। তারা ফুটপাতে বসে ও গল্প করে সময় কাটান।
এই সড়কটির প্রবেশ মুখে নির্মাণ করা হয়েছে অনন্য শৈলীর আল্লাহু-লেখা একটি ভাস্কর্য। ভাস্কর্যটি সৌন্দর্য প্রিয় ধর্মপ্রাণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। দেখা গেছে, একটি গাছের আকৃতি নিয়ে আল্লাহু লেখা ভাস্কর্য শোভা ছড়াচ্ছে। যশোর পৌরসভা থেকে এটি নির্মাণ করা হয়।
ভাস্কর্যটির খুব সন্নিকটেই নির্মিত হয়েছে খেঁজুর গাছের ভাস্কর্য। নজর কাড়া সৌন্দর্যের তিনটি খেঁজুর গাছের ভাস্কর্য সেখানে শোভা ছড়াচ্ছে। তিনটি খেঁজুর বৃক্ষেই রসের ঠিলে ঝুলছে। রাতে সড়ক বাতির আলো ছড়ালো ‘খেঁজুর গাছের ভাস্কর্য’র সবুজপাতা যেন আভা ছড়ায়। অন্যদিকে শহরের চারখাম্বায় বছরখানেক আগে নির্মাণ হয় রাসেল ভাস্কর্য। সেখানে চার রাস্তার মাঝখানে কোমরে হাত রেখে দ-ায়মান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র রাসেলের দৃষ্টিনন্দন একটি ভাস্কর্য। ভাস্কর্যটির সৌন্দর্য্য বাড়াতে সেটি কাঁচের তৈরি বক্সে আবদ্ধ কওে রাখা হয়েছে। এর চারপাশ ঘিরে দেয়া হয়েছে লোহার গ্রিল।
এদিকে, সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য শহরের সার্কিট হাউস এলাকা, ভোলা ট্যাংক ও রেল রোডে ফুল ও শোভাবর্ধনকারী রকমারি গাছ লাগানো হয়েছে। জানা গেছে, আধুনিক শহর কাঠামোর পাশাপাশি যশোর পৌর কর্তৃপক্ষ নান্দনিকতার প্রতিও সমান মনোযোগী। আর তাই শহর দৃষ্টিনন্দন করে তোলার জন্য বেশ কয়েকটি পয়েন্টে প্রতিষ্ঠানটি থেকে শোভা বৃদ্ধিকারী ফুল ও বিভিন্ন ধরনের গাছ রোপণ করা হয়েছে। সার্কিট হাউস ও ভোলা ট্যাংক রোডে টাইলস বসানো ‘বক্স’ আকৃতির টবে এসব বাহারিফুল ও অন্যান্য গাছ লাগানো হয়েছে। অন্যদিকে রেল রোডে সড়ক বিভাজকের মধ্যে নানা প্রজাতির ফুল ও দৃষ্টিনন্দন গাছ লাগানো হয়েছে।
যশোর পৌরসভার সচিব আজমল হোসেন জানান, শহর সবুজায়ন ও বিউটিফিকেশনের জন্য শহরের বিভিন্ন রাস্তা ও ফুটপাতের পাশের ফাঁকা জায়গায় দেশি-বিদেশি বিভিন œপ্রজাতির শোভাবর্ধক গাছ লাগানো চলছে। ইট পাথরের শহর বৃক্ষরাজিতে ভরে তুলতে মূলত এধরনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে গোটা শহর এর আওতায় আসবে।